Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চিঠি চালাচালিতে ১৪ মাস

ভারতে গ্রেফতার সাবেক ওসি সোহেল রানার মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

এক বছরের অধিক সময় পার হলেও ভারতে গ্রেফতার ঢাকার বনানী থানার সাবেক ওসি সোহেল রানাকে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে আনতে দু’দেশের মধ্যে চিঠি আদান-প্রদানেই দীর্ঘ ১৪ মাস কেটে গেছে। ই-অরেঞ্জ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ভারতে অবৈধভাবে পালিয়ে গ্রেফতার হওয়া সাবেক পুলিশ পরিদর্শক সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে ইন্টারপোলের নয়াদিল্লীর ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোতে (এনসিবি) দুই দফা চিঠি দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে বলেন, সোহেল রানাকে ফেরাতে পুলিশ সদর দফতর চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ভারতের আদালতে মামলা থাকায় তাকে ফেরত আনা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে ইন্টারপোলের নয়াদিল্লীর ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোতে (এনসিবি) দুই দফা চিঠি দেয়া হয়েছে। ভারতের আদালত থেকে সোহেল রানার মামলার বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত তাকে আনা যাচ্ছে না বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

সূত্র জানায়, ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকার প্রতারণার অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর ১৭ জনের পক্ষে প্রথম মামলাটি করেন মো. রাসেল এবং ৭৬ লাখ ৪১ হাজার টাকার প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ১০ জনের পক্ষে দ্বিতীয় মামলাটি করেন ইসতিয়াক হোসেন টিটু। দুই মামলাতেই পুলিশ পরিদর্শক সোহেল রানা, তার বোন সোনিয়া মেহজাবিন, ভগ্নিপতি মাসুকুর রহমানসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা ভারতে পালিয়ে গিয়ে সেখানে ধরা পড়েছেন। তাকে বরখাস্তও করা হয়েছে। মামলা দুটির তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডির একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, প্রত্যেক আসামির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কিছু মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়া গেছে, সেগুলোর কল ডিটেইলস রেকর্ড (সিডিআর) সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি মানিলন্ডারিং বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করছে সিআইডি।

২০২১ সালের ৩১ আগস্ট ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এক ভুক্তভোগী ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগ করলে ২ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলাটি গ্রহণ করে। মামলার পর ই-অরেঞ্জের সঙ্গে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে। প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন গ্রেফতার হওয়ার পর সোহেল রানা পালিয়ে যান। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন সোহেল। নেপাল যেতে উদ্যত তাকে চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তে আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছে। এই কেলেঙ্কারির ঘটনার পরই পরিদর্শক সোহেল রানাকে বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দফতর।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ২ হাজার ২২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। তবে গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে কিনা, সেটি নিশ্চিত নয়। বিভিন্ন নামে ৫০/৬০ শতাংশ মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করা হতো গ্রাহকদের সঙ্গে। ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ বিভিন্ন মার্চেন্টকে পরিশোধ করা হলেও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে পাশাপাশি প্রায় ২৬ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, তার প্রকৃত সুবিধা কে ভোগ করেছেন সেটি জানা যায় নি। এছাড়া সোনিয়া, তার ভাই সোহেল রানা, স্বামী মাসুকুর রহমান, চাচা জায়েদুল নিজ নামে ৩০ কোটির বেশি অর্থ নিজেদের নামে উত্তোলন করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ