Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাংক খাতের চিত্র জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

খাদ্য মজুত ১৫ লাখ টনের বেশি রাখতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংক নিয়ে যেসব কথাবার্তা উঠছে, সে বিষয়ে প্রকৃত চিত্র জানাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থ বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া খাদ্যের মজুত যাতে কোনোভাবেই ১৫ লাখ টনের নিচে না থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল রোববার সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সভা হয়। সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় কী কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন ১৬ লাখ টনের বেশি খাদ্য মজুত আছে। এটি সন্তোষজনক।

ব্যাংক খাত সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটা নিয়ে মিটিংয়ে ইনডাইরেক্ট আলোচনা হয়েছে এবং নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স ডিভিশনকে। চারদিকে এতো কথাবার্তা উঠছে, আসল সিনারিওটা কী সেটা শিগগির দেখে অবহিত করবেন আমাদের।

ইসলামী ব্যাংক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ওভারঅল, আরও কয়েকটা ব্যাংকের কথা তো ওটা শোনার পর আমি ইন্টারনেটে গিয়ে দেখলাম কয়েকটা ব্যাংকের ব্যাপারে ইউটিউবে বিভিন্ন রকম বাইরে থেকে বক্তৃতা দিচ্ছেন। তবুও এটাকে অবহেলা করা হয়নি। বলা হয়েছে, এগুলোকে দেখে সিনারিওটা আমাদের জানাও। সভায় ১৭ জনের মতো সচিব কথা বলেছেন। তারা বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকটি বিষয় আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনাও দিয়েছেন বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

সচিব সভায় ১২-১৩টা বিষয় আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী করা যায়? এটাই প্রথমে ছিল। আমরা এখন একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি। গত ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ১৬ লাখ খাদ্য আমাদের মজুত রয়েছে। আলোচনা করা হয়েছে যে, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ক্রয় ও প্রয়োজনীয় বিদেশ থেকে আনা, সেটা যেন নিশ্চিত করা হয়। খাদ্যের মজুত যেন ১৫ লাখ টনের নিচে না নামে সেই বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, তিন-চারটা প্রোগ্রাম যা মানুষকে একটু স্বস্তি দিচ্ছে। যেমন,ওএমএস, বিশেষ ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, ভিজিডি, ভিজিএফ, টিসিবি। এগুলো যেন পরিচালিত হয়, তাহলে অনেক মানুষ এখন থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার পাবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদি সচিব বলেন, এর সঙ্গে সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, আর্থিক বিধি অনুসরণ, প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার বিষয়গুলো জড়িত। আগামী ২০২৩ সালে আসন্ন সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা যে খরচ করবো সেগুলো খুব যৌক্তিক হতে হবে। যেগুলো বেশি প্রয়োজনীয় সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিশেষ করে আমরা বিদেশ থেকে যে জিনিসপত্র আনবো সেক্ষেত্রে এনার্জি, সার, খাদ্য এগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্যাপিটাল মেশিনারিজগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ফেন্সি জিনিস এবং যেগুলো আমাদের কম প্রয়োজন সেই খরচগুলো কমাতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পে যেন সম্ভাব্যতা যাচাইটা ঠিকভাবে হয়। প্রকল্পের ডিজাইন ও প্রাক্কলনটাও যেন ঠিকভাবে হয়। দক্ষ লোকজন দিয়ে যেন এগুলো করা হয়। বিদেশি ঋণে বাস্তবায়ন করা প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সতর্ক থাকতে বলেছেন।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,সচিবদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিদেশি ঋণে নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে যেন তারা আরও বেশি সচেষ্টা থাকেন। উন্নয়ন বাজেট সংকোচন করা হয়নি। অপারেটিং কস্টের ক্ষেত্রে সংকোচন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের সবচেয়ে বড় সমাধান কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন যে, গত ৩-৪ বছরে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এগুলোতে বেশি করে ছড়িয়ে দিতে বলেছেন তিনি। এগুলো উৎপাদনে নিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি পতিত জমিতে স্থানীয় ভালো জাত চাষাবাদ করতে হবে। তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে ১০টি প্রযুক্তি আছে। এ ১০টি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে আমাদের উৎপাদন বাড়ানো যায়। বিশেষ করে বিশ্ববাজারে সেমি কন্ডাক্টারের একটা বড় বাজার আছে। আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে থ্রি-ট্রিলিয়ন ডলার মার্কেটিং হবে। এরই মধ্যে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। সেখানে আমরা ঢুকতে পারলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫/২০ বিলিয়ন ডলারের একটা বড় রপ্তানি করা যাবে। পোশাক খাতের বাইরে প্রধানমন্ত্রী বিকল্প উৎপাদন ও রপ্তানির দিকে দৃষ্টি দিতে বলেছেন।

তিনি বলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে যা যা প্রয়োজন সেই পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থ মন্ত্রণালয়, ইআরডি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাণিজ্য সচিব ও অন্যান্যদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরেকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে- জমির ই-রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন ও রেকর্ড সংশোধনের বিষয়ে। ১৭টি উপজেলায় এ বিষয়ে একটি প্রকল্প পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। আগামী মার্চ মাস থেকে আসা করি প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে। এরই মধ্যে প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে চলে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ