পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুদীর্ঘ ৫ মাস পর দেশের মাটিতে পা রেখে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে আ আবেগঘন বক্তব্য রাখলেন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপি।আজ রবিবার দুপুরে বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে আসেন জাতীয় পার্টি ও বিরোধী দলীয় নেতার মূখপাত্র কাজী মামুনূর রশীদ, পল্লীবন্ধুপুত্র রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ ও রওশনপুত্রবুধু মাহিমা সাদ। বিমানবন্দরে নেমেই তিনি যে বক্তব্য রেখেছে তা ইনকিলাব পাঠকদের জন্য তুলে দরা হলো।
তিনি বলেন, ১. সর্বপ্রথম, আমার সুস্থতা ও স্বদেশে ফিরে আসার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া জানাই। আলহামদুলিল্লাহ। আমি এখন ঠিক আছি কিন্ত আমার পায়ে কিছু সমস্যা আছে এবং ফিজিওথেরাপি নিচ্ছি। ২.আমার সুস্থতা কামনায় দোয়া করার জন্য পার্টির নেতাকর্মী এবং দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।
৩.ব্যাংককে আমার চিকিৎসার সময় সহযোগিতা এবং স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেয়ার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। ৪.আমি থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসকেও ধন্যবাদ জানাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময় সহায়তা ও সহযোগিতার জন্য। ৫.আগেও বলেছি, আজও বলছি- আমি সব সময়ই জাতীয় পার্টির ঐক্য চাই। আপনারা সবাই জানেন আমার স্বামী মরহুম প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা কত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। আমি দেখেছি গত ৩২ বছরে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ৬.জাতীয় পার্টির জন্য যারা কষ্ট করেছেন, জেল খেটেছেন এবং জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের সবার নিকট আমি কৃতজ্ঞ।
৭.আমি আবারো বলছি, পার্টিকে বিভক্ত করার প্রশ্নই উঠে না। বরং আমি জাতীয় পার্টির সব সদস্যকে খোলা মনে আহ্বান জানিয়েছি- যারা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নাজিউর রহমান মঞ্জু, কাজী জাফর আহমদের সঙ্গে চলে গেছেন এবং নিস্ক্রিয় হয়ে গেছেন, তাদের ফিরে আসার জন্য। ১৯৯১ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কঠিন ও প্রতিকুল সময়, যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন-তাদের আমাদের অবশ্যই যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে।
৮.আমি ঢাকায় ফিরে এসেছি,আমি পার্টির সব এমপি, প্রেসিডিয়াম এবং অন্যান্যদের সঙ্গে যেকোনো বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবঝি দূর করতে বসবো। আমি নিশ্চিত,সেই ভুল বোঝাবুঝি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে শিগগিরই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরতে পারবো,ইনশাআল্লাহ। ৯.এসব ভুল বোঝাবুঝির জন্য এবং পার্টিকে দুর্বল করতে কিছু ষড়যন্ত্র হতে পারে;যেমনটি আমরা ১৯৯৬,২০০১ এবং ২০১৪ সালে দেখেছি।ইনশাআল্লাহ,আমরা সেই ষড়যন্ত্রগুলোকে নস্যাৎ করব এবং ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী জাতীয় পার্টি গড়ে তুলবো।
১০.রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই। মনে রাখবেন রংপুর জাতীয় পার্টি প্রাণ। এটা মরহুম প্রেসিডেন্ট পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বাড়ি। তাই আসনটি যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে এবং জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙল’ নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হবে এমন যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবো, ইনশাআল্লাহ। এজন্য সব নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
১১.বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন বজায় রাখতে সর্ববাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দুর্নীতি,অর্থনীতিতে অব্যবস্থাপনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির মতো কিছু ক্রটি রয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে অবগত আছেন এবং আমি তাঁকে অনুরোধ করব এই বিষয়গুলোকে আরো ঘনিষ্টভাবে সমাধান করতে এবং তাঁর মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের আরো বেশি আন্তরিক ও সক্রিয় হতে হবে। ১২.বর্তমান ভূ-রাজনীতি বিশেষ করে ইউক্রেনের যুদ্ধ গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করেছে।এর প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশেও।তাই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে আরো সতর্ক হওয়া উচিত এবং সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত।
১৩.বিএনপির অধীনে জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।আমাদের নেতা মরহুম প্রেসিডেন্ট পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং আমি ও আমার নাবালক সন্তানসহ দলের হাজার হাজর নেতাকর্মী জেল খেটেছিলেন। তখন আমাদের জনসভাও করতে দেয়া হয়নি। ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অনেক জনসভায় হামলা চালিয়ে কতশত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।সেই অন্ধকার দিনগুলো আমরা ভুলবো কি করে?তাছাড়া আমরা তাদের শাসনামলে“হাওয়া ভবনের” দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অপতৎপরতা দেখেছি। ১৪. জনগণ উন্নতি ও শান্তি জন্য পরিবর্তন চায়,যা জাতীয় পার্টিই দিতে পারে সেই শান্তি।অবশ্যই তা বিএনপি নয়।বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না।
১৫.প্রিয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকবৃন্দ,শেষ করবার আগে আপনাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই-আর তা হলো রংপুরে আমাদের প্রিয় নেতা,সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্নেহধন্য এবং তাঁর পছন্দের যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীকেই লাঙ্গলের মেয়রপ্রার্থী হিসেবে বেছে নেয়া হবে। যাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হবে, তার নির্বাচন ও বিজয়ের মধ্যদিয়ে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী দল হিসেবে নতুন করে প্রতিষ্ঠা পাবে, ইনশাল্লাহ। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন,আমার জন্য দোয়া করবেন।আল্লাহ হাফেজ,বাংলাদেশ জিন্দবাদ,জাতীয় পার্টি জিন্দবাদ,পল্লীবন্ধু অমর হোক।
বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, এসএমএম আলম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, বিরোধী দলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ্, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নাসরিন জাহান রত্না এমপি, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মিলন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যার অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান টিটু, নাসির উদ্দিন মুন্সি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নূরু, মনোয়ারা তাহেরা মানু, আমেনা হাসান প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।