পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিএনপি ঘোষিত ১০ বিভাগীয় কর্মসূচি। এখন পর্যন্ত ৭ বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে উজ্জীবিত দলটির নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে পরিবহন ধর্মঘট, পথে পথে বাধা, হামলা, গ্রেফতার সত্তে¡ও পায়ে হেটে, নৌকা, অটো, ভ্যান গাড়ীসহ নানা মাধ্যমে এসে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রাণ ফিরিয়েছে দলটিতে। ঢাকার বাইরের এসব সমাবেশ সফল করার পর এখন রাজধানীতেও বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতির মাধ্যমে শোডাউন দিতে চায় বিএনপি। প্রায় এক মাস আগে ঢাকার সমাবেশ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে করার জন্য অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছেন দলটির নেতারা। তবে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতির বিষয়ে বলা হলেও বিএনপি নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সমানে আমরা অনুমতি চেয়েছি। সেখানেই আমরা সমাবেশ করব। তারা (সরকার) যদি অপারগ হয় তাহলেও করব। অনুমতি দিলেও করব, না দিলেও করব। অনুমতির অপেক্ষা করব না। মনে রাখতে হবে এ দেশটা আমাদের সবার।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, নেতাকর্মীদের হত্যা, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। প্রথম দফায় ইউনিয়ন, পৌরসভা ও থানা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটির নেতাকর্মীরা। এসব সমাবেশে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে উজ্জীবিত হয়ে বিভাগীয় গণসমাবেশের ঘোষণা দেয় দলটি। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে ইতোমধ্যে জন¯্রােত দেখিয়েছে বিএনপি। যদিও এসব সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা, সমাবেশমুখী নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা, হামলা ও সমাবেশ শেষে মামলা ও গ্রেফতার করার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এসব কোন কিছুই রুখতে পারেনি বিএনপির জন¯্রােত।
এই ধাপের কর্মসূচির মধ্যে আগামীকাল শনিবার কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং সর্বশেষে ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকার বাইরের সমাবেশগুলো সফল করার পর এখন ঢাকায় বড় শোডাউনের চ্যালেঞ্জ বিএনপির সামনে। যদিও লোকসমাগম কমাতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নানা কৌশল গ্রহণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে কোন কিছুই বিএনপির সমাবেশে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে মনে করেন বিএনপির নেতারা। এদিকে সমাবেশের স্থান নিয়ে এখনো সুরাহা হয়নি। নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতি দেয়া হবে। তিনি বলেন, বিএনপি নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে। ওখানে জায়গা স্বল্পতার কারণে জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
তবে বিএনপির নীতিনির্ধারনী নেতারা জানিয়েছেন, তারা সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতি চাননি, তারা চেয়েছেন নয়াপল্টনে। অনুমতি দিলেও নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে, না দিলেও সেখানেই হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব ও দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন, আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে চিঠি দিয়েছি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চাইনি। বিএনপি নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কীভাবে বিএনপি সমাবেশ করবে? ১০ ডিসেম্বরের আগের দু’দিন সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিলে তা হবে সাংঘর্ষিক।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পুলিশের মতিঝিল বিভাগের একজন কর্মকর্তা আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন, গণসমাবেশের জন্য আপনারা বিকল্প কোনো ভেন্যু চেয়ে আবেদন করেন। আমি জানিয়েছি, আমরা নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ইতোমধ্যে দুবার চিঠি দিয়েছে। আমরা একমাত্র নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই গণসমাবেশ করতে চাই, অন্য কোথাও নয়। এটা দলের সিদ্ধান্ত। আমি আরও বলেছি, আপনার (পুলিশের কর্মকর্তা) প্রস্তাব দলকে জানাব।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ আমরা নয়াপল্টনে করার সিদ্ধান্ত এবং প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা সেখানেই সমাবেশ করবো। তিনি বলেন, এর আগে এবং সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো কর্মসূচি নয়াপল্টনে পালন করেছে বিএনপি। ওইদিনের কর্মসূচিও নয়াপল্টনে শান্তিপূর্ণভাবে হবে।
চট্টগ্রামে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশ নয়াপল্টনেই হবে। এখানে বাধা দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
পুলিশের অনুমতি না পেলেও রাজধানীর নয়াপল্টনেই আগামী ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় সমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিভাগীয় লাস্ট সমাবেশ ঢাকায়, এর স্থান এখন পর্যন্ত তারা (পুলিশ) দেয়নি। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, নয়াপল্টনেই ১০ তারিখে সমাবেশ করব। সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, ডিএমপি কমিশনারসহ সবাইকে, কোনো ঝামেলা না করে এ সমাবেশ যাতে করতে পারি, এ ব্যবস্থা আপনারা করবেন।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।