Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমার ছেলে প্রশাসনের কাছে আছে

নিখোঁজ ইকবালের বাবার আর্তি

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : কান্না থামছে না দুই মাস আগে নিখোঁজ হওয়া তরুণ চিকিৎসক ইকবাল মাহমুদের পরিবারে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সবাই। ছেলের পরিণতির অজানা শঙ্কায় শয্যাশায়ী তার মা। তবে মায়ের  আত্মবিশ্বাস ছেলে ফিরে আসবেই। সন্ধান মিলবেই এই আশায় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিখোঁজ চিকিৎসকের বাবা একেএম নুরুল আলম। লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কখনো কোন দুষ্টচক্রের সঙ্গে জড়ায়নি ইকবাল মাহমুদ। এ বিশ্বাস রয়েছে তার বাবার। তার ধারণা, প্রশাসনের কাছেই রয়েছে তার ছেলে। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল আলম বলেন, যে জায়গা থেকে তার ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে পুলিশের গাড়ি ছিল। অন্য কেউ নিলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিত। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া সন্দেহ দেখা দেয়। তিনি আরও বলেন, তার ছেলেকে খোঁজার নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা করছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন। পুলিশ, র‌্যাব তাকে ও আদালতকে জানিয়েছে, তারা কমিটি করেছে। বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা একটি মাইক্রোবাস, একটি মোটরসাইকেল ও পুলিশের গাড়ি সম্পর্কে কিছু বলেনি। ওই যানবাহনগুলো সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে কোনদিকে গেছে সে সম্পর্কে দুই মাস পরও কোনো তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকাশ করেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ এখন পর্যন্ত তার ছেলে জঙ্গিবাদে জড়িত, এমন কোনো তথ্য তাকে বা আদালতকে জানায়নি। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান।
দুই মাসেও ছেলের খোঁজ না মিললেও নুরুল আলম আশা ছাড়ছেন না। তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকা মারফত তিনি জেনেছেন, চট্টগ্রামে অভিযানে গ্রেফতার পাঁচ তরুণকে ছয় মাস থেকে এক বছর আগ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার ছেলেও হয়তো এভাবে ফেরত আসবে। চিকিৎসক ইকবাল মাহমুদের অপহরণের ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তদন্তকারী কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, তারা অনেক চেষ্টা করেও কোনো সন্ধান পাননি। তাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে র‌্যাবও বলেছে তারাও চেষ্টা চালাচ্ছে। খোঁজ পায়নি।
উল্লেখ্য, ডা. ইকবাল মাহমুদ দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাসের পর ২৮তম বিসিএস এ উত্তীর্ণ হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে যোগদান করেন। তিনি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যানেসথেশিয়ায় দুই মাসের প্রশিক্ষণ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন গত ১০ অক্টোবর। সেদিন ভোররাত ৩টা ১০ মিনিটে রয়েল কোচ থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরির মোড়ে নামেন। সঙ্গে সঙ্গে সাত-আটজন তাকে ঘিরে ধরেন এবং খুব দ্রুত মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যান। মাইক্রোবাসের পেছনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানও ছিল। তার পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন আরও দু’জন।
ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় এর আগে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ইকবালের বাবা এ কে এম নুরুল আলম। তারপরও কোনো সন্ধান না পেয়ে ইকবাল মাহমুদকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে তার বাবা রিট করেন। পরে ওই চিকিৎসককে উদ্ধারে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানিয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের কর্মকর্তাদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।



 

Show all comments
  • Abdul Ahad ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৪:৫০ পিএম says : 0
    Allah! you give return him to his parents.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ