Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কম খরচে বেশি মুনাফায় চাষিরা বেজায় খুশি

এক অপরূপ দৃশ্য নওগাঁ সাপাহার আমবাগানে

এমদাদুল হক সুমন, নওগাঁ থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

শীতের মাসকালাই আম বাগানে। কথাটা একেবারে বেমানান হলেও এটিই বাস্তব। একে তো এখন আমের মৌসুম নয়। আর আম গাছের নিচে জমি এমনি পড়ে রয়েছে। কিছু একটা করা যায় কি না সে ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন চাষিরা। আর এই দৃশ্য নওগাঁর সাপাহারে আমবাগানের সর্বত্র। উপরে নীল আকাশ। নিচে সবুজ আম গাছ ও তার নিচে মাসকালাইয়ের সবুজ পাতা। এমন অপরূপ দৃশ্য সবার নজর কেড়েছে।

আম বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মাসকালাইয়ের চাষ হচ্ছে। বৃহত্তর রাজশাহীতে ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে কলাইয়ের রুটি (মাসকলাই ডাল) হয়। এই ডালের চাহিদাও রয়েছে বাজারে। মাসকলাই চাষে খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র দুই একবার ভিটামিন আর কীটনাশক স্প্রে করলেই যথেষ্ট। আর খরচও তেমন নেই। এর ফলে অল্প খরচে বাম্পার ফলন এবং অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, গত বছর ৬৫ হেক্টর জমিতে কালাইয়ের চাষ হয়েছিল। চাষিরা লাভবান হওয়ায় এবার প্রায় ২১০ হেক্টর আম বাগানে গাছের ফাঁকে ফাঁকে সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মাসকলাই। প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের টার্গেট হচ্ছে দেড় থেকে দুই মেট্রিক টন। আর প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।

এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে মাসকলাইয়ের বাম্পার ফলনের আশা চাষি ও উপজেলা কৃষি অধিদফতরের। প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ বাদে বাজার দর হিসাব করলে দেখা যায় লাভের অঙ্ক কয়েকগুণ বেশী। এ জন্যেই অবসর সময়ে চাষিরা আম বাগানে গাছের ফাঁকে মাসকলাই চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলার গোয়ালা, তিলনা ও শিরন্টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে মাসকলাই চাষের এমন চিত্র। কাশিতাড়ার মাসকলাই চাষি আকবর আলী জানান, আম বাগানে গাছের ফাঁকে ফাঁকে বাড়তি ফসল হিসেবেই মাসকলাইয়ের চাষ করি। এতে অধিক পরিচর্যার ঝামেলা নেই। আবার অল্প খরচে আয়ও বেশি। গত বছর থেকেই মাসকলাই চাষ শুরু করেছি। এবারও ৬ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ফুল ফল ভালো হয়েছে। আশা করছি গত বছরের থেকে এবার ফলনও বেশি হবে।

স্থানীয় চাষি বাবুল আকতার জানান, এবার অনেকেই বেশী করে মাসকালাই চাষ করেছেন। আমার প্রতিবেশীর সফলতা দেখে নিজের ৫ বিঘা জমিতে মাসকলাই চাষ করেছি। ফলনও খুব ভালো হয়েছে। এই ফসল চাষে দুই একবার ভিটামিন আর কীটনাশক স্প্রে করলেই হয়। প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৭ মণ পর্যন্ত কলাই উৎপাদন হয়ে থাকে। বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান টকি ইনকিলাব জানান, এবার উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হেক্টর প্রতি ধরা হয়েছে দেড় থেকে দুই মেট্রিক টন। গত বছর চাষ হয়েছিল ৬৫ হেক্টর জমিতে। চাষিদের আমরা মাসকলাই চাষে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করছি। মাড়াইয়ের পর তাদের পরিশ্রমের নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারলে আগামীতে মাসকলাই চাষ আরও বাড়বে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ