Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দু’মাস পর মায়ের কোলে অপহৃত শিশু জেমি

খালি বাসায় প্রাণ গেল এক শিশুর

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

অপহরণের ৬০ দিন পর তিন বছরের শিশু জেমিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অপহরণকারী মো. জয়নাল আবেদিন সুমনকে (২৭)। গত মঙ্গলবার রাতে সুমনের ফেনীর বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে বন্দর থানা পুলিশ। হারানো বুকের ধনকে ফিরে পেয়ে খুশি শিশুটির বাবা-মা।

পুলিশ জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর নানীর সাথে ট্রেনে কুমিল্লার লাকসাম থেকে চট্টগ্রাম আসছিল শিশুটি। এ সময় সে নানীর কোলে কান্না করার সময় তার পাশে এগিয়ে আসে সুমন। আদর করে তাকে কোলে তুলে নেয়। নানীর সাথে কথা বলে ভাব জমিয়ে তোলে সে। জেমির নানী বন্দর থানাধীন কলসিদীঘির পাড়ের বাসায় যাবেন এ তথ্য জেনে নেয় সুমন। সুমন একই এলাকায় যাবেন বলে জানান। ট্রেন থেকে নেমে সিটি সার্ভিসের বাসে সুমন শিশুটির নানীর সাথে ইপিজেড এলাকায় যান। একপর্যায়ে শিশুটিকে বাস থেকে নেমে কোলে নেন সুমন।

শিশুটির নানী হেঁটে কিছুটা সামনে গেলে পেছন থেকে শিশুটিকে নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যান সুমন। এ ব্যাপারে ২৩ সেপ্টেম্বর বন্দর থানায় একটি অপহরণ মামলা হয়। এরপর পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে মাঠে নামে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও ইপিজেড এলাকা থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে সুমনকে শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে, তার ফেনী উপজেলা সদরের ধলিয়ার বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন স্বীকার করে জেমিকে তার শ্যালিকার মেয়ে পরিচয় দিয়ে বাড়িতে রাখে। এরপর ১২ বছরের বিবাহিত জীবনে নিঃসন্তান এক নারী আমেনা আক্তার খালেদার কাছে দত্তক নেয়ার নামে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে। তার আগেই সুমন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

খালি বাসায় প্রাণ গেল শিশুর!
নগরীর বায়েজিদ থানা এলাকার একটি বাসা থেকে ইব্রাহীম হোসেন রাফাত (৯) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে শেরে বাংলা টাওয়ারের পাশে একটি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ইব্রাহীম হোসেন রাফাত ওই এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। পুলিশের ধারণা ডিটারজেন্ট পাউডার খেয়ে কিংবা তিন বছরের ছোট ভাইয়ের সাথে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে চোর-পুলিশ খেলতে গিয়েই শিশুটির মৃত্যু হতে পারে।

নিহত শিশুর মা-বাবার বরাত দিয়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হোসাইন ইনকিলাবকে বলেন, শিশুটির বাবা জাকির হোসেন কাভার্ডভ্যান চালক। তিনি প্রায়ই বাসার বাইরে থাকেন। শিশুটির মাও ফোর এইচ গ্রæপের একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করেন। নয় বছরের রাফাত তার তিন বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে বাসায় একাই থাকেন। ঘটনার দিন তার মা বিকেল ৩টায় তাদের বাসায় রেখে কারখানায় চলে যান। মধ্যরাতে বাসায় ফিরে দেখেন ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। বদ্ধ কক্ষ থেকে ছোট শিশুটির কান্না শোনা গেলেও রাফাতের কোন সাড়া শব্দ মিলছিল না।

পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে তিনি খাঁটের উপর রাফাতের লাশ দেখতে পান। লাশের পাশে একটি ডিটারজেন্ট পাউডারের খালি প্যাকেট এবং একটি জগে পানিতে মেশানো ডিটারজেন্ট পাউডার পাওয়া যায়। রাফাতের নাকে-মুখেও ডিটারজেন্টের ফেনা লেগেছিল। তার গলায় একটি গামছাও প্যাঁচানো পাওয়া যায়।

শিশুটির মা জানান, ছোট ভাইকে ভুলিয়ে রাখতে সে প্রায়ই গামছা গলায় প্যাঁচিয়ে চোর-পুলিশ খেলত। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ জানা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ