Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বহাল তবিয়তে ইউএনও, তদন্তের গতি নেই

বগুড়ায় (এলজিইডি)’র কর্মচারীকে মারধর প্রত্যাহার চেয়ে জনপ্রশাসনে চিঠি জনপ্রতিনিধিদের

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

গত ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র একজন কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ঘটনার প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনও বহাল তবিয়তে আছেন তিনি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে স্বেছাচারিতার অভিযোগ এবং প্রত্যাহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিকসহ ও ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা যৌথভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখিত অভিযোগ বরা হয়।
এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল ইনকিলাবকে বলেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে সে গুলো বিভাগীয় কমিশনার দেখভাল করেন।তাদের মতামতের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

এ বিষয়ে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল ইনকিলাবকে বলেন, আসলে আমি তাদের ভুয়া প্রকল্পের অনুমোদন বন্ধ করেছি। সে কারণে তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। সে অভিযোগ গুলো রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয় থেকে তদন্ত করছে। এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেনি।

বগুড়ার সদর উপজেলার ১৩ জন জনপ্রতিনিধি স্বাক্ষরিত চিঠি গত ১০ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো হয়েছে। এ চিঠিতে বলা হয়, সমর কুমার পাল বগুড়া সদর উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই উপজেলা পরিষদ এবং সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে স্বেছাচারিমূলক আচরণ করে আসছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ কাউকে তোয়াক্কা করেন না। সকলের সঙ্গে স্বেছাচরিমূলক আচরণ করেন। সময় মত অফিসে বসেন না এবং সরকারী সিদ্ধান্ত অমান্য করে গভীর রাত পর্যন্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসে থাকতে বাধ্য করেন। যখন তখন চেয়ারম্যানদের বিনা প্রয়োজনে তার কার্যালয়ে ডাকেন। বিভিন্ন অফিসিয়াল ফাইল দিনের পর দিন আটকে রেখে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেন। এসকল আচরণে উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধিরা তার সঙ্গে বার বার আলোচনা করেছেন। তাকে নিয়ম মাফিক অফিস পরিচালনা করা ও তার আচরণগত পরিবর্তন করার জন্য পরামর্শ দেন। এরপরও তিনি তার স্বভাব পরিবর্তন না করে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ প্রায সকলের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ অব্যাহত রাখেন।

চিঠিতে বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে চলতি বছর গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পরে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী আলমঙ্গীর শেখকে তার অফিসে ডেকে বেদম প্রহর করে গুরুতর আহত করে যা স্থানীয় এবং জাতীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়েছে। ন্যক্কারজনক কর্মকান্ড আড়াল করতে তার অফিসিয়াল ফেসবুকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করেন, যা উপজেলা পরিষদের মর্যাদা এবং শৃঙ্খরা দারুনভাবে ক্ষুণ্ন করেছে করেছে জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ তোলেন। তারা বদমেজাজী এবং পরিষদের শৃংঙ্খলা নষ্টকারী এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চান না বলে উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বগুড়ার মাধ্যমে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই সঙ্গে তাকে অন্যত্র বদলী করার আবেদন জানানো হয়। তাকে বদলি না করা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ কোন কার্যক্রম করবে না বলে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। গত ১৩ অক্টোবর বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম আলী বেগ উপজেলা পরিষদে এসে অভিযোগের তদন্ত করেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয় ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্তে তাদের লিখিত বক্তব্যসহ বক্তব্য দেন। বগুড়া সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরে কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো, মাহবুবুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বিষয়টি আমরা অধিদপ্তকে অবগত করেছি। প্রশাসনিক ভাবে তদন্ত হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ