Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তৃণমূলে থাকা তারুণ্যের শক্তি দেখালো জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৭ পিএম

দেশ গঠনে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা তৃণমূলের তরুণদের শক্তিকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদানের মাধ্যমে সকলকে সামনে এনে দিয়েছে ইয়াং বাংলা। ষষ্ঠবারের মতো হওয়া এই আয়োজনে আজ তারুণ্যের শক্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে দেশ গঠনে এগিয়ে যাওয়া বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর চেয়ারপার্সন সজীব ওয়াজেদ জয়।

সিআরআই-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিগত ৮ বছরে ৬ বার দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের হাতে তুলে দেয়া হয় জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।

সারাদেশ থেকে আবেদন করা দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের ৬০০টিরও বেশি সংগঠন থেকে যাচাই বাছাই শেষে শীর্ষ ১০ তরুণ সংগঠনের হাতে ওঠে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। এ বছর ৫টি ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দুটি করে ১০টি সংগঠনকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। এ ছাড়াও দেশের জন্য বিশেষ অবদান রাখায় দুই জন পেয়েছেন 'লাইফ টাইম' বা আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড।
এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরআই ট্রাস্টি নসরুল হামিদ বিপু।

বিজয়ী ১০ তরুণ সংগঠন ও আজীবন সম্মান পাওয়া দুইজনের মধ্যে একটি সংগঠন হচ্ছে রোবোলাইফ টেকনোলজিস। জয় বড়ুয়া লাবলু রোবোলাইফ টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। ২০১৮ সালে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের সহযোগিতায় এ সংগঠন যাত্রা শুরু করে। শুরুতেই তারা দুর্ঘটনা বা যে কোনো কারণে হাত হারানো ব্যক্তিদের কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করা শুরু করে। এভাবে অন্তত ২০ জনকে সহযোগিতা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে তারা ৩০ হাজার টাকায় কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করছে ও এর খরচ কমিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব ও তুরস্কে বেশ কিছু কৃত্রিম হাত রপ্তানিও করেছে এই প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে জয় বড়ুয়া লাবলু বলেন, আমাদের রোবোলাইফ টেকনোলজিস মূলত যে সকল মানুষের হাত নেই তাদেরকে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে হাত দেওয়া হয়। যেটার সাহায্যে ব্রেইন কন্ট্রোলের মাধ্যমে হাতটাকে পরিচালনা করতে পারবে।

বিকে স্কুল অব রিসার্চ: বিজন কুমার বিকে স্কুল অব রির্সাচের পরিচালক। সমাজ গঠন, অর্থনীতি ও মানবিকতা নিয়ে কাজ করে এই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে তারা ২২ দেশের ৫৫ জন বিশেষজ্ঞ ১০০ গবেষণা সহকারী ও ৩০০ তথ্য সংগ্রাহককে নিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ১০টির বেশি জার্নাল ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। আরও দশটি প্রকল্প নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এছাড়া শিক্ষা, পরিবেশ ও প্রযুক্তি বিষয়ে তরুণদের নিয়ে ৫টি সেমিনার ও সভা করেছে।

পুরস্কার পাওয়া আর একটি সংগঠন হচ্ছে বোসন বিজ্ঞান সংঘ। মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বোসন বিজ্ঞান সংঘের সভাপতি। ২০১৪ সালে শিক্ষার্থীদের গণিত ও বিজ্ঞান শিখতে অনুপ্রাণিত করতে এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে তারা নারীদের বিজ্ঞান এবং গণিত শিখতে অনুপ্রাণিত করতে একটি বিজ্ঞান প্রতিযোগিতার আয়োাজন করার পরিকল্পনা করছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের কাছ থেকে সেরা গণিত ক্লাব পুরস্কারে ভূষিত হয়। এছাড়াও তারা প্রাতিষ্ঠানিক, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে গণিত অলিম্পিয়াড, জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড, জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, প্রোগ্রামিং অলিম্পিয়াড এবং অন্যান্য পুরস্কার জিতেছে।

প্রসেনজিৎ কুমার সাহা পুরস্কার পাওয়া উচ্ছ্বাসের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করছে। ভোলা, বরিশাল ও ঢাকায় তাদের ৩টি কাজের স্থান রয়েছে। বর্তমানে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা, নিম্ন আয়ের এবং বেকারদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা ও কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া কার্যক্রমে “স্বপ্ন পূরণ”, “বিদ্যানিকেতন”, “জয়ী”, “স্বাবলম্বী” শিরোনামে ৩টি উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা করছে। এছাড়াও তারা ৭০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে একটি স্কুল চালায়। শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের লক্ষ্য যুব ও নারীর ক্ষমতায়ন।

ইয়ুথ প্ল্যানেট অন্যতম পুরস্কার পাওয়া সংগঠন । এ বি এম মাহমুদুল হাসান এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি নারীদের বিষয়ে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। নারীদের দৃষ্টিভঙ্গি, স্বাস্থ্য ও অধিকার সম্পর্কে পুরুষদের শিক্ষিত করার বিষয়ে তারা কাজ করছে। ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় মাসিক সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সচেতনতা ৫০ভাগ পর্যন্ত বাড়াতে সাহায্য করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েরর মাধ্যমে আইসিটি এবং যুব নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ, নারী উদ্যোক্তা এবং ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কাজ করছে সংগঠনটি।

বিজ্ঞানপ্রিয় : মুহাম্মদ শাওন মাহমুদ বিজ্ঞানপ্রিয়’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। ২০১৭ সালে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মটির যাত্রা শুরু। দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রচার ছাড়াও বিজ্ঞানের অগ্রগতি, খবর, ব্লগ, ইনফোগ্রাফিক্স অডিও-ভিজ্যুয়াল সম্বলিত বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে। এছাড়াও তারা বাংলা ভাষায় একটি ডিজিটাল বিজ্ঞান অভিধান তৈরি করছে। তাদের বেশ কয়েকটি স্কুল-ভিত্তিক কার্যক্রম রয়েছে ও বিজ্ঞান প্রচারের জন্য তারা “নেবুলা” নামে একটি অনলাইন পত্রিকা প্রকাশ করে।

মজার ইশকুল এবার পুরস্কার পাওয়া অন্যতম সংগঠন। আরিয়ান আরিফ মজার ইশকুলের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক। ২০১৩ সালে পথশিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা দিতে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত ১ হাজার সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুকে বিনামূল্যে শিক্ষা দিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১০ বছর ধরে ১ হাজার সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান ও ঢাকায় ১০টি স্কুল পরিচালনা করছে তারা। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার জন্য একটি নতুন বিভাগ খোলার পরিকল্পনা করছে সংগঠনটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ