পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবশেষে সুবিধাবাদী বুদ্ধিজীবীদের কানে পানি ঢুকেছে। এইচএসসির প্রশ্নপত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে ‘নেপাল ও গোপাল’ গল্প নিয়ে প্রশ্নপত্র করায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্ক উঠে ভারতের হিন্দুত্ববাদী আরএসএসের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেস্টায় এমন প্রশ্ন করা হচ্ছে। কারণ ভারতের আসাম রাজ্য তাদের দেশের মুসলমানদের বাংলাদেশী অভিযোগ তুলে তাড়িয়ে দেয়ার চেস্টা করছে। আর ওই প্রশ্নের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে বাংলাদেশের হিন্দুরা জমি হারিয়ে বাধ্য হয়ে ভারত যাচ্ছে। বিতর্কের মুখে ওই প্রশ্নপত্র তৈরিতে কারা জড়িত তা দেখতে সরকার ঘটনার তদন্ত করেছে। কিন্তু ওরা (বুদ্ধিজীবী) নীরব ছিলেন। কারণ দেশের চেয়ে ওই প্রশ্নে মোদীর দেশের স্বার্থ বেশি ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের একজন লেখককে (আনিসুল হক) নিয়ে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র লেখায় বুদ্ধিজীবীদের হুশ হয়েছে। এখন তারা (বুদ্ধিজীবী) এ ধরণের প্রশ্নপত্রকে নৈরাজ্য হিসেবে অবিহিত করেছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে মুখচেনা ২৪ জন বুদ্ধিজীবী পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘নৈরাজ্য বন্ধ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুদ্ধিজীবীরা বলেছেন, সম্প্রতি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ও অবমাননাকর প্রশ্ন সংযোজনের ঘটনা ঘটেছে। এটি অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত, কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেওয়া যায় না।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পরও একটি সর্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হেফাজতের ১৩টি দাবি মেনে নিয়ে এই শিক্ষাকে আরো পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা গ্রহণ করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদরাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদরাসায়। অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকেরা নিজেদের এই পদ্ধতির উপযোগী গড়ে তুলতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে। সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে। পাশাপাশি মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞানশিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউইনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দেওয়ার যে দাবি তুলেছেন, তা-ও আমাদের বিচলিত করছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞানশিক্ষা ও মুক্তচিন্তার প্রসার বাধাগ্রস্ত করবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমণ্ডূকতায় ঠেলে দেবে। বিবৃতিদাতারা হলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সুলতানা কামাল, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, রাশেদা কে চৌধূরী, রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারওয়ার আলী, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, রানা দাশগুপ্ত, খুশী কবির, এম এম আকাশ, এস এম এ সবুর, রোবায়েত ফেরদৌস, সালেহ আহমেদ, পারভেজ হাসেম, আবদুল ওয়াহেদ, এম এ সামাদ, সেলু বাসিত, রনজিৎ কুমার সাহা, এ কে আজাদ, অলক দাসগুপ্ত, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল আলীম, দীপায়ন খীসা ও গৌতম শীল। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।