পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ উদযাপিত হলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এক যুগ পূর্তি। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে রাজারবাগে পুলিশ অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই’র সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং পোশাক শিল্পের মালিক, উদ্যোক্তা ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, শুধু কারখানা মালিক নয়, শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ।
তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। তারা মালিক-শ্রমিক সবার সমস্যা শুনে আগাম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শিল্প এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়েছে। এটাকে পুঁজি করে কেউ যেন সুযোগ নিতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গার্মেন্টস খাত। এজন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাগ্রচিত্তে কাজ করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ গঠন করা হয়। শিল্পাঞ্চল পুলিশ শ্রমিকদের জন্য কাজ করছে, সে সঙ্গে মালিকদের জন্যও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অতীতের সাফল্য অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।
আইজিপি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পেশাদারি মনোভাব ও দক্ষতার মাধ্যমে শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখছে। ফলে শিল্পবান্ধব ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাত সমৃদ্ধ হচ্ছে।
আইজিপি বলেন, ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ যাত্রার পূর্বে গার্মেন্টস সেক্টরে রফতানির পরিমাণ ছিল ১২.৪৯ বিলিয়ন ডলার। পক্ষান্তরে ২০২১-২২ অর্থ বছরে আরএমজি সেক্টরে রফতানি হয় ৪২.৬১৩ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রফতানি আয়ের ৮১.৮২ ভাগ। গত এক যুগে বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা অপরিসীম।
তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন বিরোধ আলাপ-আলোচনার মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তি করছে।
পুলিশ প্রধান বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ নিয়মিত কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং এবং ওপেন হাউস ডে সভার মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার ও দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করছে। শিল্পাঞ্চলে মাদক ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে বের হযয়ে বৈশ্বিক পরিমন্ডলের মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠনের আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস খাতে অসন্তোষ তৈরি হতো। ব্যবসায়ি নেতৃববৃন্দের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করা হয়। এরপর থেকে শিল্পাঞ্চল এবং গার্মেন্টস খাতে নিরাপত্তায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রতিটি সদস্য।
তিনি আরও বলেন, গার্মেন্টস খাত নিয়ে গুজব কিংবা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টিকারীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে যেন কোন ধরনের সমস্যাসৃৃষ্টি না হয় সে বিষয়েও কাজ করে যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ‘অ্যাপ্রসিয়েশন অব অ্যাক্সিলেন্স-২০২২’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ইন্ডাস্ট্রিংয়াল পুলিশের কার্যক্রমের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, যুগ পূর্তির আয়োজনকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি কেক কাটা হয়।
উল্লেখ্য, দেশের শিল্পখাত বিশেষ করে পোশাকশিল্পে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ যাত্রা শুরু করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।