পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এজন্য ব্যয়ের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন হতে হবে। আয়েশি-বিলাসী প্রকল্প নেওয়া যাবে না। তবে ছোট গ্রামীণ প্রকল্প বা কল্যাণমুখী প্রকল্পের বিষয়ে আপস নয়। বড় বড় প্রকল্প (মেগা) নেওয়া যাবে না। বড় প্রকল্প গ্রহণে ফিসিজিবিলিটি স্টাডি গভীরভাবে দেখতে হবে। যে কৌশলে কমিশন এক বছর ধরে কাজ করছে এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শুধু আমাদের দেশে নয়, দুনিয়াব্যাপী মন্দা চলছে। অপচয় কমানোর পাশাপাশি মিতব্যয়ী হতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনাবাদী জমি খুঁজে বের করতে কেবিনেট সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ডিসিদের সহায়তা নিয়ে এসব অনাবাদী জমি খুঁজে বের করে আবাদযোগ্য করে তোলার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। সারা দেশে এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখা যাবে না। জমিতে নানা ধরনের চাষাবাদ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কেবিনেট সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন, ডিসিরা যেন অনাবাদী জমি খুঁজে বের করেন।
এম এ মান্নান বলেন, সন্দীপসহ দেশের উপকূলীয় অনেক স্থানে জেটি নির্মাণ করা হলে স্থানীয়সহ পর্যটকদের সুবিধা হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের যেসব এলাকায় অবকাঠামো ঘাটতি আছে। অনুমোদিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেই ঘাটতির অনেকটাই পূরণ হবে।
ছয় প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৩৯২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, আর বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৩২২ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ২৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে— চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দীপ, কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ ও টেকনাফ অংশের জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় অঞ্চল-২ ও অঞ্চল-৪ এর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামোসহ অঞ্চল-২ অঞ্চল-৫ এর সার্ভিস প্যাসেজগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। নবীনগর-আশুগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া চতুর্থবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২টি প্রকল্পের সেগুলো হচ্ছে, খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। বরিশাল মেট্রোপলিটন ও খুলনা পুলিশ লাইন নির্মাণ প্রকল্প।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় অঞ্চল-২ ও অঞ্চল-৪ এর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামোসহ অঞ্চল-২ ও অঞ্চল-৫ এর সার্ভিস প্যাসেজগুলোর উন্নয়ন করা হবে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯৬৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের প্রধান কাজ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার সড়ক, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন, সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ড্রেনেজ লাইন নির্মাণ, সার্ভিস প্যাসেজগুলোর উন্নয়ন (ঘ) প্রকল্প এলাকার যানজট হ্রাসের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচলের ব্যবস্থা সম্প্রসারণ, প্রকল্প এলাকার ফুটপাত উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পথচারীদের চলাচল সুগম করা হবে। প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা হবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ১২১ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ২১৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার নর্দমা ও সার্ভিস প্যাসেজ নির্মাণ/উন্নয়ন একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। ৮০ দশমিক ২৬ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ/উন্নয়ন এবং ৬টি দৃষ্টিনন্দন আর্চ ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার অঞ্চল-২ এবং অঞ্চল-৪ এর সড়ক, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন, সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ড্রেনেজ লাইন নির্মাণ, অঞ্চল-২ এবং অঞ্চল-৫ এর সার্ভিস প্যাসেজসমূহের উন্নয়ন হবে।
মন্ত্রী জানান, প্রকল্প এলাকার যানজট হ্রাসের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচলের ব্যবস্থা সম্প্রসারণ, প্রকল্প এলাকার ফুটপাত উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পথচারীদের চলাচল সুগম করা, প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সর্বোপরি প্রকল্প এলাকার উন্নয়নের মাধ্যমে এলাকায় বসবাসকারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।