বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হারুনুর রশীদ বলেছেন, সবার আগে রাষ্ট্রের রোগ-ব্যাধি নিরাময় করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গে অঙ্গে রোগ-ব্যাধি। রাষ্ট্রের এমন কোনো খাত আছে যেখানে ভেজাল নেই? খাদ্যে ভেজাল, ওষুধে ভেজাল, বাতাসেও ভেজাল এমনকি সরকারের প্রতিটি অঙ্গে ভেজাল। এই জায়গাগুলো যদি ঠিক করতে না পারি, তাহলে আইন প্রণয়ন করে কোনো লাভ হবে না।

রোববার (৬ নভেম্বর) সংসদে ‘আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ বিল- ২০২২’ পাসের জন্য তোলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিলটির ওপর আনা যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার। পরে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। এই বিলটির ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

‘দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে’— আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের ইঙ্গিত দিয়ে হারুনুর রশীদ বলেন, বরিশালে দেখলাম (বিএনপির গণসমাবেশ) রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কোথায়, তারা কী করছে, তাদের দায়িত্ব কী, কর্তব্যটা আসলে কী?

গত ১৫ বছরে সরকার অনেক হাসপাতালের অবকাঠামো তৈরি করলেও সেগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে আইসিইউ নেই। স্বাস্থ্যখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এরপরও হাসপাতালের বেহাল দশা।’

বিএনপির হারুনুর রশীদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির সংসদ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আসলেই কোনো কিছুই ঠিক নেই। ওবায়দুল কাদেরের ‘খেলা হবে’— বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যে কি খেলা হবে জানি না। এই দুটি দল লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা খরচ করে জনসমাবেশ করে বড়াই দেখাতে চায়। মানুষের আসে কিসে কল্যাণ ও প্রয়োজন এটা তারা চিন্তা করে না।

জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের যে কি খেলা হবে, মানুষ আতঙ্কে আছে। আগামী এক বছরে যে কী হবে, আমরা এই সমস্ত খেলা চাই না। তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করুক, গণতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যে কাজ করুক। শোডাউন দিয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করার কোনো যুক্তি নেই। যেটা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি করছে।

সামরিক আমলে জারি করা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়া ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) অধ্যাদেশ বাতিল করে নতুন আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, আইসিডিডিআর,বি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধান সাপেক্ষে বৈধ জৈব উপকরণ এবং গবেষণা সংক্রান্ত ফার্মাসিউটিক্যাল দেশের ভেতরে আনতে এবং দেশের বাইরে হস্তান্তর করতে পারবে। তবে কোনো নিষিদ্ধ পণ্য গবেষণা বা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠাতে হলে বা কোনো আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য গবেষণা বা পরীক্ষার জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সাপেক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।

উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে বোর্ডের গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে একটি বোর্ড থাকবে। এই বোর্ডের সদস্য হবেন ১৫ জন। এর মধ্যে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি থাকবেন চারজন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনোনীত প্রতিনিধি একজন, সরকার নির্ধারিত জাতি সংঘের কোনো সংস্থার মনোনীত একজন, পূর্ববর্তী বোর্ডের মনোনীত আটজন এবং অন্যজন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক। এমনকি নির্বাহী পরিচালক এই বোর্ডের সদস্য সচিব হিসেবেও কাজ করবেন।