পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই অংশ হিসেবে সার ও জ্বালানির মতো তিন পণ্য আমদানি বাড়ানোর ওপর সর্বোচ্চ জোর দেয়া হয়েছে। জীবন ধারণ ও কৃষিপণ্য উৎপাদনে এসব পণ্য আমদানিতে দ্রুত এলসি (ঋণপত্র) নিষ্পত্তি ও ডলার ছাড় করা হবে। চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণ এবং ডিমের মতো ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। এসব পণ্যের দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের কারসাজি থাকলে তা কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে সরকার। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা বিশেষ করে ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ৩৪০টি পণ্য আমদানি আবারো নিরৎসাহিত করা হয়েছে। বিলাসী পণ্য হিসেবে খ্যাত গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, ফুল, ফলের মতো পণ্য আমদানি পুরোপুরি নিরৎসাহিত করা হয়েছে। এসব পণ্যের আমদানিতে ঠেকাতে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া কৃচ্ছ্রতা সাধনে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সরকারী কর্মকর্তারা এখন থেকে বিদেশ সফর করতে পারবে না।
জানা গেছে, আমদানি ব্যয় বাড়লেও রফতানি ও রেমিটেন্স আয় কমার কারণে দেশে ডলার সঙ্কট আরও তীব্র হচ্ছে। কমে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ডলার সঙ্কট তৈরি হয়। বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে নানাদিক দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন চাপের মুখে। দেশে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। এমনকি বিদেশ থেকে যেসব জিনিস আমদানি হচ্ছে তাও বেশি মূল্যে আনতে হচ্ছে। খাদ্যপণ্য, সার ও জ্বালানিতে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি দেয়ার পরও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। বেড়ে যাচ্ছে ভর্তুকি ব্যয়।
এ অবস্থায় দেশের সার্বিক অর্থনীতি পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিবরা। ওই সভায় নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনাসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবদের বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ বিশেষ করে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণ এবং ডিমের মতো পণ্যের দাম কমাতে প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। এসব পণ্যের আমদানি এবং দ্রুত দাম কমাতে সরকারী সহযোগিতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এছাড়া কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে সার আমদানি এবং এ খাতে প্রয়োজনে ভর্তুকি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সব ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানিতে দ্রুত এলসি নিষ্পত্তি এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডলারের জোগানের তাগিদ দেয়া হয়েছে। জ্বালানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীরা যেহেতু গ্যাসের দাম বেশি দিতে চাচ্ছেন, তাই দ্রুত কিভাবে এলএনজি আমদানি ও মূল্য সমন্বয় করা যায় সে বিষয়ে এখন উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে রফতানি এবং রেমিটেন্স আয় বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বৈঠকে বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সব ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলারের জোগান এবং দ্রুত সময়ে এলসি নিষ্পত্তি করবে ব্যাংকগুলো। এছাড়া জ্বালানি ও সার আমদানিও দ্রুত সময়ে হবে। তবে বিলাসী পণ্য আমদানি নিরৎসাহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবদের বৈঠকে ভর্তুকির বিষয়টি ওঠে আসে। চলতি বাজেটে সরকার বিভিন্ন খাতে প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রেখেছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ হয়েছে সার ও জ্বালানি আমদানিতে। এর পাশাপাশি খাদ্যসামগ্রীতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকির প্রয়োজন হচ্ছে। বিশেষ করে সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা-টিসিবির মাধ্যমে কোটি পরিবারের হাতে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দিতে সরকারকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এছাড়া ৪৪-৪৫টি পণ্য রফতানিতে নগদ সহায়তা এবং রেমিটেন্সে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রণোদনা রয়েছে। সবমিলিয়ে চলতি বাজেটে বরাদ্দকৃত ভর্তুকিতে আরও ঘাটতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছে সরকার। অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। ভর্তুকির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খাদ্যপণ্য ও সারে ভর্তুকি কমানোর কোন সুযোগ নেই। তবে জ্বালানিতে ভর্তুকি সমন্বয়ের তাগিদ দেয়া হয়েছে। ভর্তুকি ব্যয় বাড়লে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী উৎস থেকে ঋণ নিতে পারে। এছাড়া ডিজেল আমদানি বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বৈঠকে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিস্তারিত অবহিত করেছেন। ভোগ্যপণ্যের দাম যাতে আর না বাড়ে সেদিকে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন জানান, খাদ্যপণ্য আমদানিতে দ্রুত এলসি নিষ্পত্তি ও ডলারের জোগান পাওয়া যাবে। এদিকে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে চালসহ খাদ্যশস্য উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে এ বছর বিদেশ থেকে সার আমদানি করতে হবে ৫৮ লাখ ২৫ হাজার টন। এজন্য প্রয়োজন হবে ৫১৯ কোটি মার্কিন ডলার, দেশীয় মুদ্রায় ৫৬ হাজার ৫২ কোটি টাকা।
এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, বিলাসী পণ্য আমদানি নিরৎসাহিত করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে ডলারের জোগান দেয়া হবে। এতে করে ডলারের চাহিদা কিছু কমবে। শুধু তাই নয়, রেমিটেন্স যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলে আসে এবং এক্ষেত্রে হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে বিষয়েও বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।