পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
র্ণাঢ্য আয়োজনে অভিষিক্ত হলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ২০২৩-২০২৪ সালের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচত কর্মকর্তাগণ। সোমবার (৩১ আক্টোবর) রাতে নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডের গুলশান ট্যারেসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের শপথবাক্য পাঠ করান সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম এ আজিজ। এতে নব নির্বাচিত সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও পুন: নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকীর নেতৃতে বিজয়ী ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের বিজয়ীরা শপথ গ্রহণ করেন। সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহীম হাওলাদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিকাগোতে বাংলাদেশ কনস্যুটে নিযুক্ত অনারারী কনসাল জেনারেল মনির চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম ও খতিব মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। পরবর্তীতে অতিথিবৃন্দ মঞ্চে উপবিষ্ট হওয়ার পর গীতা থেকে পাঠ শেষে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপর সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, সহ সভাপতি আব্দুল খালেক খায়ের ও কার্যকরী সদস্য আজাদ বাকের সহ দেশ ও প্রবাসে মহামারী করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিটি নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অভিষেক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী সৈয়দ এম কে জামান। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বলীওম্যান জেনিফার রাজকুমারের পক্ষ থেকে সোসাইটির বিদায়ী কমিটির সকল কর্মকর্তাকে সাইটেশন প্রদান করা হয়। তার অফিসের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী সাইটেশনগুলো হস্তান্তর করেন। এই পর্ব উস্থাপনায় ছিলেন অভিষেক কমিটির সদস্য সচিব সারোয়ার খান বাবু। অনুষ্ঠানে কার্যকরী পরিষদের নবনির্বাচিত ১৯জন কর্মকর্তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে অতিথিবৃন্দ ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম এ আজিজ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি ও অভিষেক কমিটির আহŸায়ক মোহাম্মদ আলী। এসময় সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্য হাজী মফিজুর রহমান, সরাফ সরকার, অজিমুর রহমান বোরহান, ওয়াসী চৌধুরী, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আব্দুল হাসিব হাসনু ও কাজী আজহারুল হক মিলন এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য রুহুল আমীন সরকার মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন।
উল্লেখ্য, সোসাইটির কর্মকর্তারা শপথ নেওয়ার সময় সংগঠনের নবনির্বাচিত সিনিয়র সহ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান অসুস্থতার জন্য অনুপস্থিত থাকলেও খানিকক্ষণ পরে তিনি একটু সুস্থ হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে ফিরেন এবং শপথ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী নব নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেনের কাছে আর্থিক হিসেব বুঝিয়ে দেন। এর আগে মোহাম্মদ আলী জানান, আর্থিক হিসেকে সোসাইটির মামলা-মোকদ্দমা ও নির্বাচনী ব্যয় সহ অন্যান্য খরচের হিসাব নিকাশ রয়েছে এবং এসব সিপিএ কর্তৃক সার্টিফায়েড। তিনি জানান, তারা বিদায়কালে লক্ষাধিক ডলার সোসাইটির ব্যাংক হিসেবে জমা রয়েছে। এছাড়াও নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহীম হাওলাদার।
সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তারা শপথ গ্রহণ ও দায়িত্ব হস্তান্তরের পর অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন নব নির্বাচিত সভাপতি আব্দুর রব মিয়া। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবী আবু জাফর মাহমুদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, গিয়াস আহমেদ, সোসাইটির সাবেক সভাপতি মুজিব-উর রহমান ও নার্গিস আহমেদ, সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, আতাউর রহমান সেলিম ও রানা ফেরদৌস চৌধুরী, এটর্ণী মঈন চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সভাপতি বদরুল হোসেন খান, গ্রেটার নোয়াখারী সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান ও মুজাহিদুল ইসলাম, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক জে মোল্লা সানি সহ আসাদুল বারী আসাদ, কাজী তোফায়েল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, শাহ আলম, জহিরুল ইসলাম মোল্লা, বাসেত রহমান, টি মোল্লা, শেখ আতিকুল ইসলাম, মফিজুল ইসলাম রুমি, মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, আহবাব চৌধুরী খোকন, শাহাদৎ হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস, আরিফ চৌধুরী, আব্দুর রব বাবুল, নাজমুল ইসলাম অপু, মাহবুবুর রহমান টুকু, হুমায়ুন আহমেদ চৌধুরী, মোস্তফা কামাল, উজ্জল বিপুল, সাজ্জাদ হোসেন, মাকসুদা আহমেদ, আবুল কাশেম, ইকবাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলন, বদরুজ্জামান প্রমুখ। এসময় সোসাইটির নবনির্বাচিত সহ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, মরহুম কামাল আহমদের স্ত্রী আফসারী আহমেদ ও প্রবীণ প্রবাসী ছদরুন নূর মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী ও সিনিয়র সহ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান। সোসাইটির অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ‘নবজাগরণ’ শীর্ষক স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশ সোসাইটিকে সকল প্রবাসীর সংগঠনে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হওয়ার জন্য নতুন কমিটির প্রতি আহŸান জানান। প্রয়োজনে সোসাইটির গঠনতন্ত্র সংশোধনেরও কথাও বলেন কোন কোন বক্তা। এছাড়াও বক্তারা সোসাইটির বিরুদ্ধে মামলাবাজদের চিহ্নিত করে আগামী দিনে মামলা-মোকদ্দমা থেকে সোসাইটির রক্ষারও আহŸান জানান। বক্তারা কমিউনিটির সেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি মূলধারায় সোসাইটি তথা কমিউনিটিকে আরো সম্পৃক্ত করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠনের তৃতীয় পর্বে ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশ ভোজ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শাহ মাহবুব, চন্দ্রা রায় সহ প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশেন করেন। যৌথভাবে এই পর্ব পরিচালনা করেন বিদায়ী সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিকা রায় ও নবনির্বাচিত সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডা. শাহনাজ লিপি। মধ্যরাত ১২টার দিকে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
আরো উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষেদের ২০১৮ সালের নির্বাচন চলতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। মামলা-মোকদ্দমা ও করোনা মহামারী সহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ চার বছর পর নির্বাচন হওয়ায় এই নির্বাচন ঘিরে কমিউনিটি ছিলো উৎসবমুখর। ফলে নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি ছিলো উপচে পড়া। গুলশান ট্যারেসে ছিলো না দাঁড়ানোরও জায়গা।
বাংলাদেশ সোসাইটির অভিষিক্ত কর্মকর্তারা হলেন: সভাপতি- আব্দুর রব মিয়া, সিনিয়র সহ সভাপতি- মহিউদ্দীন দেওয়ান, সহ সভাপতি- ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক- রুহুল আমিন সিদ্দিকী (পুন: নির্বাচিত), সহ সাধারণ সম্পাদক- আমিনুল চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ- নওশেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক- আবুল কালাম ভুঁইয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- ডা. শাহনাজ লিপি, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক- রিজু মোহাম্মদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- মোহাম্মদ টিপু খান, সাহিত্য সম্পাদক- ফয়সল আহমদ, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক- মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক- প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরী সদস্য যথাক্রমে মোহাম্মদ সাদী মিন্টু, ফারহানা চৌধুরী, শাহ মিজান, আবুল বাশার ভূইয়া, আক্তার হোসেন বাবুল ও সুশান্ত দত্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।