পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীতে আন্তঃজেলা বাস বাড়াচ্ছে জনদুর্ভোগ। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলেও কোন প্রকার প্রতিকার নেই। রাজধানীর ভিতরে বেপরোয়া আন্তঃজেলা বাস চলাচলের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। বলা যায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবেই চলছে এসব বাস। আন্তঃজেলা বাসের কারণে নগরীতে অন্য পরিবহনগুলো যেন কোণঠাসা অবস্থায় চলতে হচ্ছে। এসব বাসের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এগুলো চলাচলের কারণে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠেছে অবৈধ বাস টার্মিনাল। আর গড়ে ওঠা অবৈধ টার্মিনালের কারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে অন্যান্য যানবাহন চলাচলে।
আন্তঃজেলা বাসের কাউন্টার ও অবৈধ টার্মিনালের কারণে প্রতিদিনই লেগে থাকে যানজট। এসব কারণে সিটি সার্ভিসগুলো নিয়মিত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। সঠিক সময় নিয়ে সিটি সার্ভিসগুলো চলাচল করতে পারে না। এছাড়া দূরপাল্লার বাসের রাজধানীর ভেতরে যাত্রী পরিবহন করার ছোট গাড়ির ব্যবস্থার কথা থাকলেও এই ব্যবস্থা আছে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটা বাস সার্ভিসের। বেশিরভাগ বাসের নেই কোন যাত্রী পরিবহন সার্ভিস। যাত্রী পরিবহনহীন দূরপাল্লার বাসগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজধানীর ভেতর দিয়ে। এতে যানজট বেড়ে যাচ্ছে এবং ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর। দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসের কারণে নাজেহাল হয়ে পড়ছে রাজধানীর ভেতরের সড়ক যোগাযোগ। তাই শিগগির এসব বাস সার্ভিস ঢাকা সিটির বাইরে থেকে পরিচালনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ঢাকার যানজটের অন্যতম কারণ শহরের ভেতরে চলাচল করা আন্তঃজেলা বাস চলাচল। প্রতিদিন ঢাকার রাস্তায় যত গাড়ি চলে, তার ২৪ শতাংশ আন্তঃজেলা ও শহরতলির বাস। শহরের ভেতরে রয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ বাসের কাউন্টার। শহরের ভেতরে আন্তঃজেলা ও শহরতলির বাস চলাচল বন্ধে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোয় আন্তঃজেলা টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার।
সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর ভিতরে বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠেছে আন্তঃজেলা বাসের অবৈধ টার্মিনাল ও কাউন্টার। কাউন্টারগুলোর সামনে লেগে থাকে বাসের জটলা। কোন কোন আবাসিক এলাকার মধ্যেই গড়ে ওঠেছে এসব টার্মিনাল। এই অবৈধ টার্মিনালগুলোতে দিনরাত সবসময় লেগে থাকে ভিড়। ভিড়ের কারণে কাউন্টারগুলোর সামনের রাস্তায় থাকে সবসময় যানজট। ঢাকার মতিঝিল, আরামবাগ, ফকিরাপুল, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, মালিবাগ, কমলাপুর, মানিকনগর, কল্যাণপুর, গাবতলী, আসাদগেট, শ্যামলী, রাজারবাগ, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। আবাসিক এলাকায় বাসের কাউন্টার ও টার্মিনাল গড়ে তোলার কারণে অস্বস্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
জানা যায়, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, খুলনা, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর ও শরীয়তপুরে যাতায়াত করা বাসগুলো ছাড়া হচ্ছে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি ও গুলিস্তান এলাকা থেকে। বান্দরবান, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ফেনী, খাগড়াছড়ি, ল²ীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী ও রাঙ্গামাটিতে যাতায়াতকারী বাস ছাড়া হচ্ছে ফকিরাপুল, আরামবাগ, সায়েদাবাদ, কমলাপুর, মালিবাগ, রাজারবাগ ও মানিকনগর এলাকা থেকে। বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নওগাঁ, নাটোর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, রংপুর, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ঠাকুরগাঁও জেলার বাস ছাড়া হচ্ছে আরামবাগ, ফকিরাপুল, কল্যাণপুর, গাবতলী এলাকা থেকে। গাজীপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা এলাকার বাস ছাড়া হয় ফুলবাড়িয়া, মহাখালী এলাকা থেকে। অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নরসিংদী, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বাস ছাড়া হয় সায়েদাবাদ এলাকা থেকে। এছাড়া বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ পাশে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তায় নারায়ণগঞ্জের স্বদেশ, দোয়েল, শীতল, বন্ধনসহ কয়েকটি পরিবহনের কাউন্টার। এখান থেকে নিয়মিত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসব বাস যাতায়াত করে। এই বাসগুলোর ঢাকার শেষ গন্তব্য এখানেই। তাই এই স্থানে রাস্তার উপরই বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ ইন্সপেক্টর (শহর ও যানবাহন) মো. আহসান হাবিব প্রামানিক ইনকিলাবকে বলেন, যানজট নিরসনের জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। তবে আন্তঃজেলা বাস যেগুলো ঢাকার ভিতরে চলাচলের কথা নয় সেগুলো রাজধানীর সড়কগুলোতেই চলাচল করছে। এতে যানজট বাড়াচ্ছে, বাড়ছে নগরবাসীর দুর্ভোগ। এসব বাসের ফিটনেসহীনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি, মামলা দিচ্ছি।
রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে বলেছেন, ঢাকাতে শুধু আন্তঃনগর বাস চলবে। রাজধানীর তীব্র যানজটের জন্য বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতাকেই দায়ী। এই যানজট থেকে রেহাই পেতে হলে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সম্মিলিতভাবে কাজ করার বিকল্প নেই। অতএব পরিকল্পিতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করলে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকায় গাড়ির চলাচলও পার্কিংয়ের ব্যাপারে সজাগ থাকা দরকার। যানজট নিরসনে সরকার, পুলিশ ও পরিবহন মালিক সংশ্লিষ্টদের আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে সবাইকে তৎপর হতে হবে। রাস্তার মোড়গুলোতে গাড়ি যেন আটকা না পড়ে সে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। মোড়গুলোতে পুলিশকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।