পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
এম আমির হোসেন চরফ্যাশন (ভোলা) থেকে : ভোলার চরফ্যাশনে অনুমোদনবিহীন ২৮টি ইটভাটায় নির্বিচারে কাঠ পোড়ানো শুরু হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই বিশেষ মহলকে ‘ম্যানেজ’ করে ইটভাটাগুলো বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী খ্যাত ম্যানগ্রোভ বাগান উজাড় করে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া ইট পোড়ানো এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের দায়ে প্রথম মৌসুমে চারটি ইটভাটাকে জরিমানা নামমাত্র করা হলেও অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ রাখতে এই জরিমানার কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন না সচেতন মহল।
অভিযোগ আছে, উপজেলা, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের কর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেই অবৈধ ইটভাটাগুলো বছরের পর বছর ধরে বীরদর্পে অপকর্ম করেই যাচ্ছে। প্রত্যেক মৌসুমের শুরুতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানের নামে নূন্যতম জরিমানা আর মুচলেকা আদায়ের মাধ্যমে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা নিজেদের দায় এবং আখের গুছালেও অবৈধ ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করা যায়নি কিংবা বন্ধ থাকেনি। এবছরও এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চরফ্যাশনে ২৮টি ইটভাটার মধ্যে ২৫টি ইটভাটা পরিবেশ অধিদফতর থেকে কোনো ছাড়পত্র পায়নি। অনুমোদনবিহীন ইটভাটার মালিকরা কয়েক দফা আবেদন করলেও পরিবেশ আইন বহির্ভূত বিধায় অনুমোদন মেলেনি। জনবসতিপূর্ণ কৃষি জমি, ম্যানগ্রোভ বাগানের নিকটবর্তী অবস্থান টিন, ব্যারেল, ইট, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি নিষিদ্ধ চুল্লি ব্যবহার করাসহ নানান অনিয়ম বিদ্যমান থাকায় ২৮টি ইটভাটাকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সীমিত সংখ্যক ইট পোড়ানোর অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তারপরও অনুমোদনবিহীন এসব ইটভাটার উৎপাদন কখনো বন্ধ থাকেনি। এবছরও শুরু করেছে অবৈধভাবে ইট উৎপাদন। যদিও চরফ্যাশন বা ভোলা জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে চরফ্যাশনে বৈধ বা অবৈধ ইটভাটার সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেনি। উপজেলার কয়েকটি ইটভাটা ঘুরে দেখা গেছে, কয়লা ব্যবহারকারী অনুমোদিত তিনটি ইটভাটা ছাড়া বাকি ২৫টি ইটভাটায় ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনি নেই। ব্যবহার করা হচ্ছে টিন, ইট, সিমেন্ট আর ব্যারেল তৈরি ৩০-৪০ ফুট উচ্চতার চিমনি। জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ভাটাগুলোর সবই স্থাপিত হয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, কৃষি জমি এবং ম্যানগ্রোভ বাগানের নিকটবর্তী স্থানে।
বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় গাছ ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ম্যানগ্রোভ বাগানে সক্রিয় কাঠ চোরা কারাবারি চক্রের মাধ্যমে ইটভাটা মালিকরা বিশাল পরিমাণ এসব কাঠের যোগান নিশ্চিত করছে বলে জানা গেছে।
চরফ্যাশন উপজেলায় দেশের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। যেসব এলাকায় ইটভাটা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কথা ওইসব এলাকায় ইটভাটা প্রতিষ্ঠা না করে ঘণবসতি এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ায় কালো ধোয়ায় শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের রোগ বালাইয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে বলেও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের জনৈক মেডিকেল অফিসার সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে চলতি মৌসুমের শুরুতে দুই দফায় অভিযান চালিয়ে চারটি অবৈধ ইটভাটার বিভিন্ন অঙ্কে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার সর্বোচ্চ পরিমাণ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালিয়ে দুইটি ইটভাটার লোকজনকে আটক করা হয়েছে। এই দু’টি ইটভাটার মধ্যে একটি ইটভাটার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপরটির বিচারকার্য এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত চলছিল বলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবদুল মান্নান জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।