Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মন্ত্রীদের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমলাদের অনীহা

মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের সামনেই অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নদী খনন ও পানিবদ্ধতা নিরসনে সারাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হলেও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের সুরক্ষা, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়। সে গুলো সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে প্রকল্পের ডিপিপি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি মন্ত্রীদের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের অনীহা দেখা যায়। সরকারের প্রকল্প গ্রহণে কারসাজি বলে দাবি করেছে সরকার দলীয় এক এমপি।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও করণীয় শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এ সব অভিযোগ তুলে উখাপন করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে কারসাজির অভিযোগ উত্থাপন করে সরকার দলীয় এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, নদী খনন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হলেও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আবার বিশেষ ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে প্রকল্পের ডিপিপি দেওয়া হয়। এমনকি মন্ত্রীদের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের অনীহা দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুন্দরবন ও উপকূল রক্ষায় করছে সরকার। দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের সুরক্ষা, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে জলবায়ু ক্ষতিপুরণ আদায়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংলাপে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, জলবায়ু ঝুঁকি, দারিদ্র্য ও বিপদাপন্নতার মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার অধীন উপকূল সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির (বিশেষ করে নগদ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি) আওতা ও পরিধি বাড়াতে হবে। উপকুলীয় এলাকায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে একটি বাড়ি একটি সেল্টার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ওই এলাকার সাইক্লোন শেল্টারগুলো সংস্কার এবং নারী ও শিশুবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে। উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। ঝড়-জলোচ্ছাস, নদীভাঙ্গন ও ভূমিক্ষয় ঠেকাতে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ এবং সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার পাশাপাশি উপকুলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংলাপে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকার ঝুঁকি নিরুপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে মনিটারিং জোরদার করা হয়েছে। সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, বিগত দিনে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিলেও সেই সকল প্রকল্প জনজীবনে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী ভূক্তভোগী জনগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সুন্দরবন রক্ষায় আন্তরিক। তবে সরকারের এই কাজে জনগণের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।
সরকার দলীয় এমপি সৈয়দা রুবিনা আক্তার বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের প্রয়োজন। উপকূলীয় অঞ্চলকে উন্নয়নে বড় বাঁধা সমন্বয়হীনতা। এ জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয় বাড়ানোর পাশাপাশি পৃথক একটি সংস্থা গঠন করা জরুরী। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে সরকার প্রকল্প নিয়েছে।
সংলাপে বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মানবিক বিপর্যয় রোধ করতে হলে পরিবেশ ও প্রকৃতিকে বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে অনুধাবন করতে হবে। স্থানীয় মানুষের সম্পৃক্ততায় একটি টেকসই, সমন্বিত ও বিভিন্ন মেয়াদী প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায় করতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করবেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ