পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা ২৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত বুধবার দিনের শুরুতে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচকের পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের ৩০ জুনের পর যা সর্বনিম্ন। এর একদিন আগে গত মঙ্গলবার রিজার্ভ ছিল ৩৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। গত আগস্ট মাসে আমদানি খাতে ব্যয় হয়েছে ৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত এর ফলেই রিজার্ভ কমছে। এ ছাড়া রফতানি ও রেমিট্যান্সপ্রবাহেও তেমন গতি নেই। আবার আমদানি ব্যয়ও কমানো সম্ভব হয়নি। অবশ্য আমদানি ব্যয় কমানো ও রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। তবে নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। পরিস্থিতি সামলাতে সরকার এখন আইএমএফের ঋণ নিতে চাইছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে আমদানি ব্যয় প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৬৯ কোটি (১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন) ডলার হয়েছে। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রফতানি আয় ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার এসেছে। একই সময়ে প্রবাসী আয় মাত্র ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৬৭ কোটি ডলার। প্রথম দুই মাসে রফতানি ও রেমিট্যান্স বেড়েছিল। তবে সেপ্টেম্বরে কমেছে।
চলতি অক্টোবর মাসেও রেমিট্যান্সপ্রবাহে ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। এই মাসের ১৩ দিনে (১ থেকে ১৩ অক্টোবর) এসেছে ৭৭ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় অঙ্কের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সামগ্রিক ভারসাম্যেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
আইএমএফের ব্যালান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল অনুযায়ী, কেবল ব্যবহারযোগ্য অংশকেই রিজার্ভ হিসেবে দেখাতে হয়। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ আইএমএফের পদ্ধতি অনুসরণ করে হিসাব করলেও বাংলাদেশ বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া অর্থকেও রিজার্ভ হিসাবে দেখাচ্ছে। এ হিসাবপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংক রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ৭ বিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কাকেও দেয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ এবং সরকারের আরও কয়েকটি প্রকল্পে দেয়া ঋণকেও রিজার্ভে অন্তর্ভুক্ত করে মোট রিজার্ভের হিসাব করে। সব মিলিয়ে এই অঙ্ক ৮ বিলিয়ন ডলারের মতো।
কিন্তু আইএমএফ এই ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিয়ে রিজার্ভের হিসাব করতে বারবার তাগাদা দিয়ে আসছে। আইএমএফের এই মানদন্ড বিবেচনায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের প্রকৃত রিজার্ভ আসলে এখন ২৭ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে রিজার্ভের হিসাব দিচ্ছে, তাতে আন্তর্জাতিক মানদন্ড আসলেই মানা হচ্ছে না। কেননা, বাংলাদেশের যদি কোনো বিশেষ প্রয়োজনে এখনই পণ্য আমদানি করতে হয়, তখন কিন্তু এই ৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করা যাবে না। তাই আপৎকালীন প্রয়োজনের জন্য যে বিদেশি মুদ্রা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করা যাবে, সেটাকেই প্রকৃত রিজার্ভ হিসাবে হিসাব করতে হবে।
বাংলাদেশে রিজার্ভের উল্লম্ফন হয় আসলে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর। তখন আমদানি ব্যয় কমলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। আবার রফতানিতেও ১৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ছিল। যে কারণে ২০২০ সালের শুরুর দিকে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে থাকা রিজার্ভ বাড়তে বাড়তে গত বছরের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে।
এক বছর আগে গত বছরের ১৯ অক্টোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার বেশি; ৪৬ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।