Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে হত্যাকাণ্ড, শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় আরসা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২২, ৯:৪৫ পিএম

কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় একটি শরণার্থী শিবিরে দু'জন রোহিঙ্গা নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এপর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গ্রুপ শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এদিকে, রোহিঙ্গা নেতারা এসব ঘটনার জন্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসাকে দায়ী করছেন। -বিবিসি বাংলা

তারা বলেছেন, নিরাপত্তহীনতার কারণে রোহিঙ্গা নেতাদের অনেকে এখন শিবিরের বাইরে বসবাস করছেন। কক্সবাজারে টেকনাফ এবং উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিচালনায় সহায়তার জন্য প্রতিটি শিবিরে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা নির্বাচন করা হয়। যাদেরকে বলা হয় মাঝি। কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালি এলাকায় একটি শিবিরের এমন দুজন রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যার ঘটনা ঘটে গত শনিবার সন্ধ্যায়। ঐ শিবির থেকে একজন রোহিঙ্গা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, শিবির এলাকায় একটি দোকানের সামনে পনেরো বিশ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঐ দু'জন রোহিঙ্গা নেতা বা মাঝির ওপর হামলা করে এবং সেখানেই তাদের দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। রোহিঙ্গা অনেক নেতা ধারণা করছেন, এই দু'জনকে টার্গেট করেই হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশ বালুখালী এলাকার রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।


শিবিরে প্রভাব বিস্তারের জন্য রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা : উখিয়া থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বা এপিবিএন এর সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ মনে করেন এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে রোহিঙ্গা শিবিরে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্য থেকে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটাচ্ছে দুস্কৃতকারীরা।তারা (দুস্কৃতকারীরা) তাদের প্রভাব এবং আধিপত্য বিস্তারের জন্য এগুলো করছে যাতে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং অপহরণের মতো কর্মকাণ্ড চালিয়ে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারে। এটাই তাদের মূল লক্ষ্য।

আরসা'র বিরুদ্ধে অভিযোগ রোহিঙ্গা নেতাদের : রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আক্রমণ, হত্যাকাণ্ড বা সন্ত্রাসী তৎপরতার খবর সংবাদপত্রে শিরোনাম হচ্ছে অনেকদিন ধরেই। রোহিঙ্গা নেতাদের হিসাবে, গত এক বছরে কমপক্ষে ১২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আক্রমণকারীরা টার্গেট করছে বিভিন্ন শিবিরের রোহিঙ্গা মাঝি বা নেতাদের। সেজন্য রোহিঙ্গা নেতাদের অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শিবিরের বাইরে নিরাপদ জায়গায় বাসা ভাড়া করে থাকছেন। এমনই একজন মোহাম্মদ আমিন। তিনি একটি শিবিরের হেড মাঝি বা প্রধান নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

মোহাম্মদ আমিন জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে তার ওপরও আক্রমণ হয়েছিল। সে দফায় তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়ে শিবির ছেড়ে শিবিরের বাইরে একটি ভাড়া করা বাসায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করছেন। নিরাপত্তার অভাবে আমি এখন শিবিরের বাইরে থাকি। মোহাম্মদ আমিন অভিযোগ করেন, শিবিরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে "আরসা একের পর এক হত্যাকাণ্ডসহ নানা রকম সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে। এরা (আরসা) আমাদের নির্যাতন করে। এরা আমাদের দু'জন মাঝিকে (রোহিঙ্গা নেতা) হত্যা করেছে, বলেন মোহাম্মদ আমিন। আরসা'র তৎপরতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পে যতক্ষণ প্রশাসন বা আইন শৃঙ্খলার লোকজন থাকে, ততক্ষণ তারা (আরসা) লুকিয়ে থাকে। প্রশাসন যখন ক্যাম্প থেকে চলে যায় তখন এরা (আরসা) ব্লকে ব্লকে আসে এবং আমাদের খোঁজ করে, গুলি করে, মারধোর করে বলে অভিযোগ মোহাম্মদ আমিনের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ