Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদেশি বিনিয়োগ : বিমানবন্দরে নামার পর দমে যায় সব উদ্যোম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ১০:৪১ পিএম

বাংলাদেশি বিনিয়োগ করতে এমনিতেই অনেক সমস্যা হয় বলে অভিযোগ আছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সম্প্রতি সাতজন ব্রিটিশ ব্যবসায়ীর গ্রেফতারের ঘটনায় দেশটিতে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকার কথা বলছে, কিন্তু হয়রানি, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা সহ নানা অভিযোগ করেন বিদেশি উদ্যোক্তাদের অনেকে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে রোড শো করা হয়েছে। -বিবিসি বাংলা

এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশকে বিদেশি বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা বলে বর্ণনা করেছেন। এমন পটভূমিতে ঢাকায় বিনিয়োগ করে সাতজন ব্রিটিশ ব্যবসায়ীর বিপাকে পড়ার ঘটনা নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাতজন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ঢাকায় তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বার্ষিক সভায় যোগ দিতে এসে গ্রেফতার হন কিছুদিন আগে। তারা ঢাকায় হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স নামের একটি কোম্পানির পরিচালক। বীমার টাকা না পাওয়ার অভিযোগে চারজন গ্রাহকের মামলায় তারা আটদিন কারাগারে থাকার পর জামিন পেয়েছেন। তাদের আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, বিদেশ থেকে আসা এই বিনিয়োগকারীরা যাতে কোম্পানিটির মালিকানা ছেড়ে দেন, এমন পরিকল্পনা থেকে কোন পক্ষ মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ঢাকায় আরেকটি বীমা কোম্পানিতে বিনিয়োগকারী ব্রিটেনে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বজলুর রশীদ। বিশ্বাস করে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করি। হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সে উনারা (সাতজন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী) অন্ধ বিশ্বাসে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু তাদেরকে আজকে গ্রেফতার করা হলো। এই ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে হয় আমাদের, বলেন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী বজলুর রশিদ। তিনি আরও বলেন, আমরা যাতে বিনিয়োগের অর্থ ছেড়ে দিয়ে বিলেতে ফেরত আসি, সেই পরিস্থিতি তৈরির জন্য আমাদের অনেক হয়রানি করা হয়। যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে বলা হচ্ছে। একইসাথে মামলা থাকার বিষয়কেও কারণ হিসাবে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে এসে মালিকানার প্রশ্নে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বছর চারেক আগে বাংলাদেশে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নারী উদ্যোক্তা মমতাজ খান। তাকে তার বিনিয়োগের শুরু থেকেই খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।সেই অভিজ্ঞতা বর্ননা করতে গিয়ে মমতাজ খান বলেন, আমি বাংলাদেশে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য সোশ্যাল হাউজিং প্রকল্প করতে গিয়েছিলাম।

"কিন্তু বাংলাদেশে আমার কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আগে থেকে ছিল না। সেজন্য আমাকে থার্ড পার্টি বা অন্য একটা পক্ষ মানে বাংলাদেশি কোন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে প্রকল্পের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে, এটা কর্তৃপক্ষ জানালো। এটা জোগাড় করা অনেক কঠিন ব্যাপার। নানা প্রতিবন্ধকতা ঠেলে বিনিয়োগ নিয়ে এগুনোর চেষ্টা করেছেন মমতাজ খান। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাকে প্রকল্পের মালিকানা ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে হয়েছে। খান বলেন, শেষ পর্যন্ত যখন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী জোগাড় করলাম। কিন্তু পরিস্থিতিটা আইডিয়াল ছিল না। সেজন্য আমি বাংলাদেশি ঐ পক্ষের কাছে আমার প্রকল্পটি দিয়ে চলে এসেছি। কোন বিদেশির ব্যক্তিগতভাবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন বাংলাদেশে কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা কোন এজেন্টকে অংশীদার করে তার মাধ্যমে যেতে হয়। একইভাবে বিদেশি বড় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশি পক্ষকে সাথে রাখতে হবে।

কোন বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশি কার সাথে অংশীদার হবে, সেখানেও অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করে। এমন অভিযোগও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের একজন নেতা আতিকুর রহমানের ঢাকায় বিনিয়োগ রয়েছে। তার অভিজ্ঞতাও ভাল নয়।

তাকে নিবন্ধনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে শুরু করে পরিবেশ অধিদপ্তর সহ ১২টি সরকারি দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। তিনি বলেন, বিনিয়োগের শুরু থেকে প্রতিটা ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। আপনি যে উদ্যম নিয়ে বাংলাদেশে যাবেন, তা বিমানবন্দরে নামার পর থেকে দমতে শুরু করবে। বিমানবন্দরে লাগেজ নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। এরপর যখন নিবন্ধনের জন্য আপনি সচিবালয়ে যাবেন, তখন আপনার জুতার চেহারাও পরিবর্তন হয়ে যায় মানে জুতার সোল (শুকতলা) পর্যন্ত খসে যায় দোঁড়াতে দৌঁড়াতে, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান।

তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে আরও বলেন, আমাদের নৈতিকতা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিস। আমরা যদি ঘুষপ্রথা থেকে বের না হই তাহলে সমস্যা। ওখানেই বাধাটা বেশি পড়ে। দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং সীমিত অর্থায়নের সুযোগের মতো বেশ কিছু কারণ বড় বাধা সৃষ্টি করছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। এটি বলা হয়েছে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রকাশিত বিনিয়োগের পরিবেশ সংক্রান্ত রিপোর্টে। বাংলাদেশ সরকার বলছে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থাকলেও সেগুলো সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। কিন্তু ভিন্ন চিত্র দিচ্ছেন গবেষক ও বিশ্লেষকরা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি সিনিয়র ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নানা বাধা পেরিয়ে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী নিবন্ধন করলেও শেষ পর্যন্ত তাদের কম সংখ্যকই বিনিয়োগ করে থাকেন। আমাদের হিসাবে বাংলাদেশে যা নিবন্ধন হয়, তার এক তৃতীয়াংশও কার্যকরভাবে বিদেশি বিনিয়োগ হয় না।ড. ভট্টাচার্য উল্লেখ করেন, "নিবন্ধনের সাথে বাস্তবায়নের এই যে পার্থক্য, এর মূল কারণ হলো, একটা কারখানা তৈরির জন্য যে সব সেবা প্রয়োজন, সেগুলো এক জায়গায় পাওয়ার ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কথা বলা হয়। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা রসিকতা করে বলেন, এই ওয়ান স্টপ সার্ভিস অনেক সময় ফুল স্টপ সার্ভিস হয়ে যায়।এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস বা পানিসহ যে সব সেবা পাওয়ার কথা, সেগুলো সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা আছে। বাংলাদেশে নিষ্কণ্টক জমি পাওয়াও বেশ কঠিন।

এসবের ব্যাপারে সরকার থেকে একশোটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার কথা বলা হলেও এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় তা চালু করা যায়নি। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশকে অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া বড় ধরনের বিনিয়োগ এখনও হয়নি" গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়ার কথা জানান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সরকার যে একশোটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছে, এর একেকটি অঞ্চল একেকটি দেশের বিনিয়োগকারীদের দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে তাতেও বড় বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যাচ্ছে না বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডিজি আবুল হায়াত নুরুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার নানা সুবিধা কথা বললেও যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের যারা বড় বিনিয়োগে আগ্রহী, তারাও নানা সমস্যার অভিযোগ করেন।

বিনিয়োগের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমরা হই। একটা নিবন্ধনের জন্য সরকারের বার থেকে তেরোটা দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়।

বাংলাদেশে যা নিবন্ধন হয়, তার এক তৃতীয়াংশও কার্যকরভাবে বিদেশি বিনিয়োগ হয় না মি. নুরুজ্জামান উল্লেখ করেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিতে নানা হয়রানি হয় এবং অনেক সময় লেগে যায়। এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগের পরিবেশবান্ধব নয় বলে মি. নুরুজ্জামান মনে করেন। তিনি বলেন, যখন আমরা বা বড় বিদেশি বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের জন্য যাই, তখন সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

নানা অভিযোগের কারণে বিনিয়োগের জটিলতা কমাতে সরকার বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে ছয় বছর আগে। এই কর্তৃপক্ষ ৫০টির বেশি ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছে। এরপরও নানা প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ রয়েছে। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহসীনা ইয়াসমিন অবশ্য বলেছেন, এখনও কিছু সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা তারা করছেন। ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আসলে আমরা এখনও সব সার্ভিসগুলোকে আনতে পারিনি।

মিজ ইয়াসমিন বলেন, একটা ব্যবসা শুরুর নিবন্ধনের জন্য যে সার্ভিসগুলোর দরকার হয়, সেগুলো মোটামুটি আমরা এনেছি। আমাদের সার্ভিসে আমরা মনিটরিংও করে থাকি। কিন্তু কিছু সার্ভিস এখনও অনলাইন হয়নি। ফলে সেসব সংস্থায় সরাসরি যেতে হচ্ছে। সেখানে একটা দ্বৈত ব্যবস্থা আছে। সে কারণে কিছু কিছু জায়গায় বিনিয়োগকারীদের এখনও একটু সময় দিতে হয় এবং তারা সময়মতো পেপারগুলো পাচ্ছে না, বলেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মোহসীনা ইয়াসমিন। তার বক্তব্য হচ্ছে, এটা শতভাগ আমাদের হাতে চলে আসার প্রক্রিয়ায় আছে, সেটা হলে আর সমস্যা থাকবে না। সরকার বলছে, ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া ইতিমধ্যে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া ভারতের রিলায়েন্স এবং আদানি-এই দু'টি শিল্প গ্রুপ তরলীকৃত প্রকৃতিক গ্যাস টার্মিনাল, বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে বলেও কর্মকর্তারা বলছেন।

তবে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের ভেতরের বিনিয়োগও স্থবির হয়ে আছে। সেকারণেও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম বলে তারা মনে করেন। দেশের লোকেরা বিনিয়োগ করে না, কিন্তু বিদেশিরা এসে বিনিয়োগ করবে-এটা কোন সময় হয় না। বাংলাদেশে বিদেশিরা এসে প্রথমে দেখে যে দেশটিতে নিজস্ব ব্যক্তি বিনিয়োগ কতটা হচ্ছে, মন্তব্য মি. ভট্টাচার্যের। তিনি জানিয়েছেন, দেশের ভেতরের বিনিয়োগ পাঁচ ছয় বছর ধরে জিডিপির ২৩ শতাংশে স্থবির হয়ে আছে। আর বিদেশি বিনিয়োগ এক শতাংশের নীচে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, তাদের হিসাব অনুযায়ী, এখনও দুই বিলিয়ন ডলারের নীচে আছে বিদেশি বিনিয়োগ। যা জিডিপির এক শতাংশেরও নীচে।

ড. ভট্টাচার্য এর কারণ হিসাবে দেখেন সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়কে। আসলে সরকার থেকে বিদেশিদের যে সব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়, তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন না। যত দ্রুততার সাথে বিদ্যুৎ, গ্যাস দেয়ার কথা বলা হয়, তা অনেক সময় বাস্তবায়ন হয় না। আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তবায়নের মধ্যে বড় ধরনের ফারাক হয়েছে, বলেন মি. ভট্টাচার্য। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সেবার ঘাটতি যেমন রয়েছে, একইসাথে দুর্নীতি যে বড় বাধা সেটা সরকারেও অনেকে স্বীকার করেন। সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সমস্যা কিছু আছে এবং সেগুলো সরকার চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে মন্ত্রী মি. মান্নানের কণ্ঠেও আক্ষেপের সুর পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে আমাদের বেশ সংস্কারের প্রয়োজন আছে। তবে আইনের সংস্কার যত সহজ, মানুষের সংস্কার তত সহজ নয়।

এটা দার্শনিক কথা নয়, এটাই বাস্তব। মন্ত্রী মি. মান্নান বলেন, আমাদের মধ্যে ঔপনিবেশিক কিছু আচরণ রয়ে গেছে। আর দারিদ্র যেখানে মূল সমস্যা, সেখানে কিছু সুযোগ আদায়ের চেষ্টা করবো। তবে আমরা প্রতিনিয়ত এগুলো মোকাবেলার চেষ্টা করছি। একদিনেতো ধুয়ে ফেলা যাবে না। আমরা বিষয়গুলোতে নজর দিচ্ছি। মি. মান্নান আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সরকারের একাধিক সংস্থা এবং মন্ত্রণালয় দুর্নীতি কমানোর জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করছে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে সরকার আশা করছে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির পর এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে এক ধরণের নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলেও বিদেশি বিনিয়োগ আরও কমে যেতে পারে এমন আশংকা করছেন অর্থনীতিবিদরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ