পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উচ্চ শিক্ষিত এক দম্পতির দাম্পত্য কলহের শিকার হচ্ছে তাদের শিশু সন্তান। বাবার খামখেয়ালিপনা আর অমানবিকতায় মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের ৬ বছরের অবুঝ শিশু সন্তান আফরিন আনোয়ার অন্বেষা। আবার আদালতের নির্দেশনার পরেও সন্তানকে কাছে নিয়ে আদর করতে না পারার মানসিক কষ্ট নিয়েই কানাডায় পাড়ি দিলেন পাগলপ্রায় মা। এদিকে ভুক্তভোগী অন্বেষাকে স্বল্পকালের জন্য তার মায়ের কাছে দিতে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করায় বিচলিত হয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারাও।
দীর্ঘদিন প্রেমের পর গত ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যয়নকালে শিশু অন্বেষার মা কেয়ার সঙ্গে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়ের বাসিন্দা মো. জহুরুল ইসলাম অনন্তের বিয়ে হয়। ওই বছরই রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্বব্দ্যিালয়ে (রুয়েট) লেকচারার হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন কেয়া।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে অনন্ত-কেয়া দম্পতির কোল জুড়ে জন্ম নেয় অন্বেষা। সন্তান জন্মের পর থেকেই স্ত্রীর ওপর অত্যাচার শুরু হয় স্বামী অনন্তের। স্ত্রীর বেতনের সব টাকা নেয়ার পরও বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে চাপ দেয় অনন্ত। শুধু তাই নয়, ত্রিশ লাখ টাকা লোন তুলে দিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করতে থাকে। ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে অনন্তর অত্যাচার-নির্যাতন আরো বেড়ে যায়। ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি অনন্ত ও তার পরিবারের লোকজন কেয়াকে মেরে রক্তাক্ত করে অনন্তের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। কিন্তু সংসার রক্ষা করতে না পেরে কেয়া ২০২০ সালের শেষদিকে অনন্তকে উকিল নোটিশ এবং কাজির মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটান।
আড়াই বছেরের অন্বেষাকে ঢাকায় তার নানা-নানীর কাছে রেখে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে কানাডায় চলে যান কেয়া। এরপর অনন্ত আদালতের মাধ্যমে সন্তানকে নিজের জিম্মায় নিয়ে যান। এরই মধ্যে মা বিদেশ থেকে মেয়েকে দেখার আকুল চেষ্টা করেন। কিন্তু শিশুটির বাবা অনন্ত তাকে কোনোভাবেই দেখতে দেয়নি। সন্তানের টানে গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে দেশে আসেন আসেন কেয়া।
সন্তানকে কাছে পেতে ঢাকার ২য় অতিরিক্ত সহকারি জজ (ভারপ্রাপ্ত) ও পারিবারিক আদালতে নালিশি মামলা করেন। আদালত শুনানি শেষে প্রথমে ১৫ সেপ্টেম্বর, এরপর ১৯ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর অনন্তকে, পরে বোয়ালিয়া থানার ওসিকে শিশুটিকে বাবাসহ আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের এ আদেশ অমান্য করেন শিশুটির বাবা। প্রতি তারিখে মা সন্তানকে একনজর দেখার জন্য আদালতে এলেও তাকে বুক ভরা কষ্ট নিয়ে অন্বেষাকে না দেখে ত্যাগ করতে হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর শত চেষ্টা করেও অন্বেষাকে দেখতে না পেয়ে এবং বুক ভরা কষ্ট নিয়ে শিশুটির মা ফিরে যান কানাডায়।
আদালতের আদেশের পরও কেন শিশুটিকে আদালতে কিংবা মায়ের কাছে হাজির করতে ব্যর্থ হলেন, জানতে চাইলে বোয়ালিয়া থানার ওসি মো. মাজহারুল ইসলাম গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেয়ে আমরা বোয়ালিয়ায় অনন্তের বাসায় একাধিকবার গিয়েছি। কিন্তু কখনোই তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি সব সময়ই সন্তানসহ অন্যত্র অবস্থান করছেন বলে তার স্বজনদের মাধ্যমে জানিয়েছেন। আমরা সবগুলো বিষয় আদালতকে অবহিত করেছি। আশ্চর্য্যরে বিষয় হলো, শিশুটির বাবা বারবার কিভাবে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করেছেন, সেটি আমাদেরও বোধগম্য নয়। একদিকে আদালতের নির্দেশ অমান্য, অপরদিকে শিশুটির মায়ের সাথে অমানবিক আচরণ করেছেন অনন্ত। দেশ ছেড়ে যাবার সময় বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশনে থেকেও ফোন দিয়েছিলেন শিশুটির মা। সেখানে থেকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আক্ষেপ করেছেন নিজের সন্তানকে এক নজর দেখতে না পারার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।