Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তা প্রকল্প ঘিরে স্পর্শকাতরতা আছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০২ এএম

তিস্তা প্রকল্প ঘিরে স্পর্শকাতরতা আছে উল্লেখ করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, এ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার মানুষের প্রয়োজনও এটা। সেকারণে এ প্রকল্পকে ইতবাচকভাবে দেখা উচিৎ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশে চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ। সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, বাংলাদেশ চীনের ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে চীন। এই লড়াইয়ে চীন বাংলাদেশের পাশেও রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায় চীন। এছাড়া চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড-বিআরআই উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশসহ ১৪৯টি দেশ বিআরআইতে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশে অবকাঠামোগত বড় প্রকল্প যেমন পায়রা বন্দর, কর্ণফুলী টানেলের মতো প্রকল্পেও সহায়তা দিচ্ছে চীন। এর মধ্যে দিয়ে নিশ্চয়ই এদেশের জনগণ লাভবান হবে। তিনি বলেন, উইঘুর ও চীনা ঋণ ফাঁদ নিয়ে বিদেশী গণমাধ্যমে প্রায়ই ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে আরও গঠনমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পরামর্শ দেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, আমি রংপুরে শুধু তিস্তার জন্য যাইনি। সেখানে চীনা প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে গিয়েছিলাম। এর আগে একই ভাবে আমি চট্টগ্রাম ও সিলেটও গিয়েছিলাম।এক বছর আগে তিস্তা প্রকল্পের সমীক্ষা করার জন্য আমাদের অফিসিয়ালি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বেইজিং গভীরভাবে মূল্যায়ন করছে। আমি খোলামেলা ভাবে বলতে চাই, এ প্রকল্প ঘিরে স্পর্শকাতরতা আছে, আমরা সেটা লক্ষ্য করেছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে উদ্বিগ্ন যে, বাংলাদেশ যদি শেষ দিকে এসে এই প্রকল্পে তার অবস্থান পরিবর্তন করে, কেউ এসে যদি বলে এটা চীনের আরেকটি ঋণের ফাঁদ হবে-বাংলাদেশ যদি শেষে ভূরাজনৈতিক স্পর্শকাতর বলে বসে, তাহলে আমাদের জন্য বিব্রতকর হবে। তিনি বলেন, এ প্রকল্প খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার মানুষের প্রয়োজনও এটা। সেকারণে এ প্রকল্পকে ইতবাচক হিসেবে দেখা উচিৎ। আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন মধ্যস্ততা করছে। ইতোমধ্যেই ত্রিপক্ষীয় তিনটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের অগ্রগতি পুরোপুরি প্রকাশ করা এখনই ঠিক হবে না।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে চীন শক্ত ভূমিকা রাখলে আমরা অবশ্যই খুশি হবো। এ বিষয়ে আমরা অবশ্যই তাদেরকে এ বিষয়ে আরও তাগিদ দেব। তবে কোনো একটি দেশ একটি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করলে, এতে দুই দেশের বন্ধুত্বে কোনো প্রভাব ফেলে না।

তিনি বলেন, চীনা ঋণের ফাঁদ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। তবে এই ঋণ নেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে আমাদের চয়েজের ওপর। তিনি বলেন, চীনা শিক্ষার মান নিয়েও নানা কথা রয়েছে। কেননা চাকরির ক্ষেত্রে চীনের চেয়ে পশ্চিমা দেশের ডিগ্রিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। সম্মেলনে চীনের ওপর একটি জরিপের তথ্য ও ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে তথ্য ও ফলাফল তুলে ধরে সুপারিশে ঢাকা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করার চীনা নীতিতে বাংলাদেশ সবসময় মূল্য দেয় ও সন্তোষ প্রকাশ করে থাকে। আঞ্চলিক সহযোগিতার ফ্রেমওয়ার্কে বাংলাদেশকে স্বতন্ত্র ভাবে চীনের দেখা উচিৎ বলেও জানান তিনি। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরাতে ও এই সঙ্কট নিরসনে চীনের গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়া উচিৎ। এতে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, অধ্যাপক এম এম আকাশ, রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ