পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রচারক এবং সুফি স্কলারগণ মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য ব্যক্তি ও সমাজকে উজ্জীবিত করতে একটি সুসংহত আধ্যাত্মিক আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন।
পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে এখানে এক আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে তারা এ আহ্বান জানান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুফি স্কলার ও আন্তর্জাতিক আইনবিদ জোনাথন গ্রানফ সম্মেলনে বলেন, ‘মানব ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো মানব পরিবারের ঐক্যের আধ্যাত্মিক অন্তর্দৃষ্টি একটি ব্যবহারিক প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনস্টিটিউটের সভাপতি গ্রানফ বলেছেন, জলবায়ুু পরিবর্তনের পরিস্থিতি এবং পরমাণু অস্ত্রের বিকাশের পটভূমিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বৈশ্বিক অস্থিরতা এখন সকলের কাছে ‘ভালোবাসাকে হ্যাঁ, বিবেককে হ্যাঁ এবং মানুষের নিরাপত্তাকে হ্যাঁ’ বলার দাবি রাখে।
ইসলামিক আধ্যাত্মিক কেন্দ্র মাইজভা-র দরবারের আওতাভুক্ত প্ল্যাটফম ঢাকা-ভিত্তিক ‘সুফি ইউনিটি ফর ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি’ (সুফিজ) সারা বিশ্ব থেকে সুফি স্কলার ও নেতৃবৃন্দকে সমাবেশের মাধ্যমে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বৈশ্বিক আধ্যাত্মিক অঙ্গনে আহমেদ মহিউদ্দিন নামে পরিচিত আইনবিদ গ্রানফ বলেছেন, ‘দয়া ও করুণা’ এই শব্দগুলো পবিত্র কুরআনের শুরুর শব্দ সকল প্রধান ধর্মের পবিত্র গ্রন্থে একই বার্তা রয়েছে।
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সম্মেলনে যোগদানকারী এই মার্কিন আইনবিদ বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পবিত্র অন্তর, বিবেক ও প্রজ্ঞার সাথে অন্যদের জন্য তাদের সেবা উৎসর্গ করতে মুসলিম এবং অন্যদের লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।
সুফিজের সভাপতি ও মাইজভা-ার দরবারের বর্তমান সাজ্জাদানশীন সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বাংলাদেশের পাশাপাশি তুরস্ক, মরক্কো, ভারত, ঘানা থেকে আগত ধর্মীয় স্কলার ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমসাময়িক ইতিহাসের মহান সূফী সাধক সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমেদ মাইজভা-ারীর নাতি সৈয়দ মাশুক ই মাইনুদ্দিন।
মরক্কোর অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ লাখদার দেরফৌফি বলেন, ইসলামের আভিধানিক অর্থ হল শান্তি। অমুসলিম ঐতিহাসিকরা সর্বসম্মত মত পোষণ করেন যে ইসলাম বিশ্বে তরবারির সমর্থন ছাড়াই ছড়িয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা এ বিশ্বাসের প্রথম অনুসারী হয়ে ওঠেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নবী মোহাম্মদ (সা.) কখনোই নিজ থেকে কোনো যুদ্ধ শুরু করেননি বরং মানুষের কাছে শান্তির বার্তা পৌঁছানোর মিশনে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। কিভাবে আমরা সন্ত্রাসবাদকে (ইসলাম প্রচারের উপায় হিসেবে) গ্রহণ করতে পারি?’
ভারতের আজমীর শরীফের প্রতিনিধি শেখ সৈয়দ সালমান চিশতি মহানবী (সা.) এবং জ্যোতির্ময় আলোর দিশারীরা ভালোবাসার শিক্ষা দিয়ে আলোকিত করেছেন উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান বিশ্বের মানবাধিকার সংকটের পটভূমিতে সমস্যা সমাধানে সুফিদের আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।
অনলাইনে সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা অনুসারে মানবজাতির নাম, ধর্ম বা জাতি জিজ্ঞাসা না করে তাদের সেবা করুন... নিঃশর্ত ভালবাসার সাথে সেবা করুন।’
তুরস্কের একাডেমি অফ সুফি স্কলারস-এর সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ আল-হুসেইনি বলেন, মহানবী হলেন আমাদের অনুসরণ করার জন্য সর্বোত্তম আদর্শ এবং কিভাবে ইসলাম আমাদেরকে সকলের সাথে সম্প্রীতির সঙ্গে অবস্থান করতে উৎসাহিত করে তা অবশ্যই আমাদের জানতে হবে।
তিনি বলেন, নবীর আদর্শ অনুযায়ী, কারো শান্তি বিঘিœত করলে সে মুসলমান হবে না, কারণ ইসলাম বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী ভেদাভেদ না করে রহমত ও শান্তির কথা বলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।