Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রাজনীতিতে সুবাতাস!

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পলোগ্রাউন্ডে বিভাগীয় সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে- শুরু থেকেই এমন কথা বলে আসছিলেন বিএনপির নেতারা। তারা কথা রেখেছেন, লাখো জনতার উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় এ গণসমাবেশ সফলে পক্ষকালব্যাপি ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন এ অঞ্চলের আট জেলার নেতাকর্মীরা। করেছেন সভা-সমাবেশ, মিছিল। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের ভাষায় গণসমাবেশে নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ারও আগাম হুঁশিয়ারি ছিল। এ লক্ষ্যে দলের নেতাকর্মীদের রাস্তায় নামার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন মহানগর এবং জেলার নেতারা। নেতাদের নির্দেশনায় তারা মাঠে ছিলেন।

মীরসরাই, সীতাকুণ্ডসহ কয়েকটি এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তবে এরপরও তারা দমে যাননি। সাহসের সাথে বাধা মোকাবেলা করে জনসভায় হাজির হয়েছেন, কয়েকজন হাসপাতালে গেছেন। তবে অনেকে মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা অবস্থায় হাজির হয়েছেন গণসমাবেশে। পথে পথে হামলা হবে, বাধা আসবে এমন আশঙ্কা থেকে অনেক নেতাকর্মী আগের রাতেই চট্টগ্রাম চলে আসেন। অনেকে গণপরিবহনে চট্টগ্রাম আসেন। যেকোনমূল্যে সমাবেশে পৌঁছতে পারাকে অগ্রাধিকার দেন তারা, তাতে সফলও হন।
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া এক দশক পর বিএনপির এই বড় ধরনের শোডাউনে বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অনেকের শঙ্কা ছিল আওয়ামী লীগ-বিএনপি মুখোমুখি হবে। সংঘাত, সহিংসতায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি। এটিকে আগামী দিনের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ হামলা করেছে, অনেক এলাকায় বিএনপির নির্ধারিত সভাস্থলে পাল্টা সমাবেশ ডেকে ১৪৪ ধারা জারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার বিএনপির সমাবেশে পুলিশি হামলা হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রামে এমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এটিকে চট্টগ্রামের সহনশীলতার রাজনীতির ফল বলছেন অনেকে। তবে পুলিশ প্রশাসনের কিছু অংশ এখনও অতি উৎসাহী ভূমিকায় রয়েছেন বলে অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। মহাসমাবেশের আগের রাতে বিএনপি নেতাদের বাসাবাড়িতে কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ হানা দেয়। তারা তল্লাশি চালায়, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। জনসভায় আসার পথে মহানগরীর প্রবেশপথে হঠাৎ কতিপয় পুলিশ সদস্য যানবাহনে তল্লাশি শুরু করেন। গাড়ির কাগজপত্র তল্লাশির নামে রাস্তায় অহেতুক যানজটের সৃষ্টি করে।
খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, বান্দরবানসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সমাবেশমুখী যানবাহনে বাধা দেয় পুলিশ। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, জনসমাবেশে যোগ দিতে রিজার্ভ করা যানবাহন চালাতে নিষেধ করে পুলিশ। এতসব বাধা-বিপত্তির পরও পলোগ্রাউন্ডকে ঘিরে জনতার উত্তাল স্রোত ঠেকানো যায়নি। টানা ১০ বছর নয় মাস পর বড় ধরনের শোডাউন করলো দেড় দশক ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। এ সাফল্যকে আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য এক নতুন বার্তা হিসেবে দেখছেন বিএনপির নেতারা। তাদের প্রত্যাশা, এ বার্তা থেকে সরকার এবং প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা শিক্ষা নেবেন, তাদের আচরণ বদলাবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ