Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সময় বাঁচবে, বাণিজ্য বাড়বে

মধুমতি ও তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ইয়াছিন রানা, নড়াইল থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ ও গতিশীল করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির গতি ও বাণিজ্য বাড়বে এবং মানুষের সময় বাঁচবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তার সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশ সফর করে তিনি যে বিষয়টি অনুধাবন করেছেন তা হচ্ছে সর্বাগ্রে প্রয়োজন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। যা সাধ্যমত তিনি করে চলেছেন।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত মধুমতি সেতু এবং শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চামেলী হল থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে তিনি যুক্ত হন। সেতু দুটি মানুষের সহজ যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, মধুমতি সেতু যেহেতু এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে। যার ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। ঢাকা থেকে এখন মোংলাপোর্ট কাছে হয়ে গেছে। আমাদের বেনাপোলসহ কুষ্টিয়া অঞ্চলের যে সমস্ত যোগাযোগগুলো রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে যোগাযোগটাও বাড়ছে। মানুষের সময় বাঁচবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে। সেই সুযোগটা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন তখনই জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন এবং আওয়ামী লীগ সবসময়ই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় এসেছে। এটাই আওয়ামী লীগের ইতিহাস। পাশাপাশি দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবার সরকারে এসেই যমুনা সেতুর ওপর বহুমুখী সেতু নির্মাণ করে তার সরকার। এছাড়াও আরো অনেকগুলো সেতুর নির্মাণসম্পন্ন করে। যার মধ্যে রয়েছে ধরলা সেতু, গাবখান সেতু, শিকারপুর ও দোয়ারিকা সেতু এবং ভৈরব নদীর ওপরও সেতু নির্মাণ। সমগ্র বাংলাদেশকে একটি যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনাই ছিল তার সরকারের প্রচেষ্টা।

তিনি বলেন, এখন আমরা দাবি করতে পারি দেশের সমগ্র এলাকার মাঝেই যেন যোগাযোগ স্থাপিত হয়, সে কাজ আমরা করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিশ্বব্যাংকের ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আজকের মধুমতি সেতু এবং নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু দুটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত করার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমে কালনা সেতু হিসেবে বর্তমান মধুমতি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও এটা যেহেতু মধুমতি নদীর ওপরে নির্মিত এবং মধুমতি নামটিও অনেক মিষ্টি তাই এটার নাম মধুমতি সেতু রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ’৭৫-এর জাতির পিতাকে হত্যার প্রতিবাদকারী নাসিম ওসমানের নামে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নামকরণ করেছেন। ইতোপূর্বে তার সরকার নারায়ণগঞ্জবাসীর উন্নয়নে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর আরো দুটি সেতু এবং মুক্তারপুর সেতু নির্মাণ করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং সউদী আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুহাইলান।
সেতুগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নারায়ণগঞ্জ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। অর্থনৈতিতে নারায়ণগঞ্জ একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য, তাদের জীবনযাত্রা উন্নত করার লক্ষ্যে একটি সেতু একান্তভাবে দরকার। সে কথাটা মাথায় রেখেই আমরা শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর তৃতীয় সেতুর নির্মাণ করলাম। এরই মধ্যে শীতলক্ষ্যার ওপরে আমরা আরো কয়েকটা সেতু করেছি।

এই সেতুর কারণে রাজধানীর যানজট কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধুমতি সেতু যেহেতু এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে। যার ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। ঢাকা থেকে এখন মোংলাপোর্ট কাছে হয়ে গেছে। আমাদের বেনাপোলসহ কুষ্টিয়া অঞ্চলের যে সমস্ত যোগাযোগগুলো রয়েছে, সেগুলো সঙ্গে যোগাযোগটাও বাড়ছে। মানুষের সময় বাঁচবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে। সেই সুযোগটা সৃষ্টি হয়েছে।

এ সময় সরকারপ্রধান জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সউদী আরবের রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বাংলাদেশে নিযুক্ত এ দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরাও নিজ নিজ দেশের সরকারপ্রধানের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাঞ্জা এবং পাল্টা নিষেধাঞ্জার পরিপ্রেক্ষিতে সবাইকে সাশ্রয়ী হবার আহ্বান জানিয়ে তিনি সমগ্র দেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী ফেলে না রেখে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বই আজকে কষ্টভোগ করছে। সে জন্য আমাদের আবেদন থাকবেÑ আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই, মানুষের উন্নতি চাই।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধে অস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে বা অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে অর্থ ব্যয় হয়, সে অর্থ সমগ্র বিশ্বের শিশুদের জন্য ব্যয় করা হোক। তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা এবং উন্নত জীবনের জন্য ব্যয় করা হোক, সেটাই বিশ্ববাসীর কাছে আমি আহ্বান জানাই।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আমরা সবাই মিলে নিরলস পরিশ্রম করে যাব, এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।



 

Show all comments
  • Md Yousuf ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৬ এএম says : 0
    এত উন্নয়ন তার পরেও সরকারের বদনামি
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ শফিক মৃধা ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৬ এএম says : 0
    উন্নয়ন হয়েছে শুধু সরকারি দলের ও সরকারি কর্মচারীদের।
    Total Reply(0) Reply
  • Alivi ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    উন্নয়নের কান্ডারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নানাবিধ কল্যাণে দেশে সংঘটিত হয়েছে আমূল পরিবর্তন। জনগনের জীবন মান পরিবর্তন সাধিত হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদৌলতে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Khokon ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে প্রতিটি জেলায় নতুন নতুন সেতু হচ্ছে কিন্তুু দুঃখের বিষয় হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামে মানুষের দীর্ঘদিনে দাবী আমাদের কালুরঘাট সেতুটি নির্মাণ করার জন্য আরজি রইল।
    Total Reply(0) Reply
  • Sajjat ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    যোগ্য পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর এ বাংলাদেশ তার সার্থকতা নিয়ে আসবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Biplob Hossain ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৬ এএম says : 0
    দেশের মানুষ না খেয়ে মরছে, আর একদিকে বড় বড় প্রকল্প নিয়ে অর্থ বানিজ্য চলছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Rabbul Islam Khan ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৬ এএম says : 0
    দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরন করেছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদৌলতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কাঠামোগত রূপান্তর ও সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Shajahan Shajahan ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    বঙ্গবন্ধুর সাহসী কন্যার হাত ধরেই জোর কদমে এগিয়ে চলেছে উন্নয়ন আরেক বাংলাদেশ ✌ অভিনন্দন শুভেচ্ছা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ