Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য

| প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিষয় : বাংলা
শামসুল আলম
চেয়ারম্যান
ক্যারিয়ার গাইডলাইন

প্রশ্ন : মধ্যযুগে রোমান্টিক কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি কে? তার সাহিত্য কর্ম সম্পর্কে লিখুন।
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কবি হলেন আলাওল। তিনি ফরিদপুরের ফতেহাবাদে অথবা চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার সাহিত্য কর্ম দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : ১. মৌলিক সাহিত্য ও ২. অনুদিত সাহিত্য কর্ম।
    ১.    মৌলিক সাহিত্য : রামতালনামা এবং পদাবলী।
    ২.     অনুদিত সাহিত্য কর্ম : সতী ময়না ও লোর চন্দ্রানীর ২য় খ-ের বাকি অংশ ও ৩য় খ-, তওফা, ময়ফুলমূলক বদিউজ্জামান, সপ্তপয়কর বা হপ্তপয়কর, পদ্মাবতী, সেকান্দার নামা।

প্রশ্ন : ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের পরিচয় প্রদান করুন।
উত্তর: আলাওলের শ্রেষ্ঠ সাহিত্য কর্ম হচ্ছে ‘পদ্মাবতী’। এটি তার অনুদিত কাব্য এবং শ্রেষ্ঠ রচনা। এ কাব্যটি হিন্দি ভাষার বিখ্যাত কবি মালিক মোহাম্মদ জায়সীর ‘পদুমাবৎ’ অনুসরণে রচিত হয়েছে। এ কাব্যের প্রধান চরিত্রগুলো হচ্ছে পদ্মাবতী, রাজা রতœসেন, আলাউদ্দিন খলজী ও শুকপাখি।

প্রশ্ন : ‘সতীময়না-লোরচন্দ্রানী’ কাব্যের পরিচয় প্রদান করুন।
উত্তর : হিন্দি কবি সাধন রচিত কাব্যের নাম ‘মৈনাসত’। পরবর্তীতে ‘সতীময়না-লোরচন্দ্রানী’ নামে এটি অনুবাদ করেন দৌলত কাজী। দৌলত কাজী কাব্যটি সমাপ্ত করতে পারেননি। তার মৃত্যুর বিশ বছর পর আলাওল কাব্যটির দ্বিতীয় খ-ের বর্ণনা এবং সম্পূর্ণ তৃতীয় খ- রচনা করেন।

প্রশ্ন : ‘লাইলী-মজনু’ কাব্যের কাহিনী সংক্ষেপে লিখুন।
উত্তর : আমিরপুত্র কায়েস বাল্যকালে বণিক কন্যা লায়লীর প্রেমে পড়ে মজনু বা পাগল খ্যাত হয়। লায়লীও মজনুর প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করে। কিন্তু উভয়ের বিবাহে আসে প্রবল বাধা। ফলে মজনু পাগলরূপে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকে। অন্যদিকে লায়লীর অন্যত্র বিয়ে হলেও তার মন থেকে মজনু সরে যায়নি। তাদের দীর্ঘ বিরহ জীবনের অবসান ঘটে করুণ মৃত্যুর মাধ্যমে। এ মর্মস্পর্শী বেদনাময় কাহিনী অবলম্বনেই ‘লায়লী-মজনু’ কাব্য রচিত।

প্রশ্ন : আরাকান রাজসভায় কেন বাংলা সাহিত্য রচিত হয়েছিল?
উত্তর : আরাকানে রচিত বাংলা সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক সাহিত্য গবেষকদের অশেষ কৌতূহল রয়েছে। তবে আরাকানে বাংলা সাহিত্য রচনার পিছনে দুটি বিশেষ কারু অনুমান করে নেয়া হয়। প্রথমত, আরাকান রাজ্যের মগ রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় গবেষকগণ সেখানে বাংলা সাহিত্য রচনায় উৎসাহিত হয়েছিল। দ্বিতীয়ত মধ্যযুগে বাংলায় মুঘল-পাঠানদের সংঘর্ষের ফলে অনেক অভিজাত ও সুফী মতাবলম্বী মুসলমান আরাকানে আশ্রয় নিয়েছিল। এসব মুসলমান আরাকানে বাংলা সাহিত্য রচনায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল।

মধ্যযুগের অন্যান্য সাহিত্য
প্রশ্ন : লোকসাহিত্য কাকে বলে?
উত্তর : সাহিত্য হলো একের সাথে অন্যের মিলনের মাধ্যম। লোকসাহিত্য হলো জনসাধারণের মুখে মুখে প্রচলিত গাথা, কাহিনী, গান, ছড়া, প্রবাদ ইত্যাদি। লোকসাহিত্যের উপাদান হলো জনশ্রুতিমূলক বিষয়। বহুদিন পূর্বের কোনো ঘটনা বা কাহিনী লোক পরম্পরায় কল্পনারূপক হয়ে লোকাসাহিত্যে স্থান পায়।
প্রশ্ন : ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ কী? এগুলো কে সংগ্রহ করেন?
উত্তর : ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিভক্ত বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার পূর্বাংশ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জের বিল-হাওর ও নদ-নদী পাবিত বিস্তৃত ভাটি অঞ্চলের লোক কবি কর্তৃক রচিত আখ্যানমূলক কাহিনী কাব্যই ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ নামে পরিচিত। বাঙলা লোকসাহিত্য সংগ্রহের জন্যে যাদের নাম বিখ্যাত, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত চন্দ্রকুমার দে। তাঁর সংগৃহীত গীতিকাগুলোকে সম্পাদনা করে ‘ময়মনসিংহ গীতিকা’ নামে প্রকাশ করেন ডঃ দীনেশচন্দ্র সেন।

প্রশ্ন : মর্সিয়া সাহিত্য কী?
উত্তর : ‘মর্সিয়া’ আরবি শব্দ। যার অর্থ শোক প্রকাশ করা। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে এক ধরনের বিয়োগান্ত ভাবধারার শোককাব্যকে মর্সিয়া সাহিত্য বলা হয়। আরবি সাহিত্যের প্রভাবে ফারসি ভাষায় মর্সিয়য়া সাহিত্য রচিত হয়। ভারতে মুসলিম শাসনামলে উর্দু ভাষায় মর্সিয়া সাহিত্য রচনার প্রয়াস দেখা যায়। এসব মর্সিয়া সাহিত্যের অনুসরণে বাংলা ভাষায়ও মর্সিয়া সাহিত্য রচিত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন