Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওদের হাতে অস্ত্র গুলি ওয়াকিটকি হাতকড়া

চট্টগ্রামে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ২জন গ্রেফতার

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : নগরীতে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র, গুলি, হাতকড়া, ওয়ারলেস সেটসহ পুলিশের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র।
বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ থেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবির একটি টিম তাদের গ্রেফতার করে। গায়ে গোয়েন্দা পুলিশের পোশাক পরা গ্রেফতারকৃত দুুইজন হলোÑ সাতকানিয়া উপজেলার দক্ষিণপাড়ার সতীশ মহাজনের পুলিশ দাশের ছেলে নন্দন দাশ ওরফে বাবুল (৪৮) ও নগরীর বাকলিয়া থানার ডিসি রোড এলাকার সিরাজুর রহমানের ছেলে আরিফ মঈন উদ্দীন (৩৮)।
গায়ে ‘জ্যাকেট’, কোমরে নাইন এমএম পিস্তলের আদলে তৈরি খেলনা পিস্তল। এ ছাড়া পুলিশের ক্যাপ, হ্যান্ডক্যাপ, বন্দুক, ওয়ার্লেস, ব্যাটন, বাঁশি তো আছেই। এভাবে বহুদিন ধরে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি, অপহরণ ও ছিনতাই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল তারা।
গতকাল শুক্রবার সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযানের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) পরিতোষ ঘোষ ও উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর-পশ্চিম) মো: মারুফ হোসেন।
উপ-পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ডিবি পরিচয় দিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষজনকে তুলে নিয়ে অর্থ আদায় করে আসছিল চক্রটি। পাশাপাশি ডাকাতি, ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত ছিল তারা। তাদের ধরতে আমরা দীর্ঘ দিন ধরে অভিযান চালিয়ে আসছিলাম।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের কাছে খবর আসে, কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের একটি দল ওই এলাকায় অবস্থান করে সন্ত্রাসীদের নজরদারিতে রাখে।
এ সময় ওই এলাকার কুসুমকুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে একটি সাদা রঙয়ের মাইক্রোবাস থেকে নেমে পাঁচ-ছয়জন ব্যক্তি পূর্ব দিকে পালিয়ে যাচ্ছিল। তখন দুইজনকে ধরে ফেলে আমাদের টিম।
পরে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে আটক বাবুলের শরিরে তল্লাশি চালিয়ে দেশিয় তৈরি কাটা বন্দুক, এক জোড়া হ্যান্ডক্যাপ, চার রাউন্ড কার্তুজ ও একটি ব্যাটন এবং আরিফের শরিরে তল্লাশি চালিয়ে একটি প্রসেসসহ নাইন এমএম সদৃশ্য খেলনা পিস্তল, একটি গামছা, একটি বাঁশি, একটি মলম ও একটি ব্যাটন উদ্ধার করা হয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার মো: মারুফ হোসেন বলেন, ‘গ্রেফতার দুইজনের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। আমাদের ধারণা তারা মলম পার্টিরও সদস্য। তাদের কাছ থেকে গামছা পাওয়ায় মানে হচ্ছে তারা লোকজনকে অপহরণ করে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে টাকা আদায় করতো। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার কাজল কান্তি চৌধুরী ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (পশ্চিম) উত্তম চক্রবর্তী।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ব্যক্তিদ্বয় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মহানগর এলাকায় ডাকাতি, অপহরণ ও ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের সাথে আরো যারা আছে তাদের নাম ঠিকানাও তারা প্রকাশ করেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। আটক দুই জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়েছে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ