Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৫০০ কেজি ওজন মিসরীয় নারী ইমনকে মুম্বাই আনাই বড় চ্যালেঞ্জ

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ২৫ বছর বাড়ির বাইরে বের হননি তিনি। ৫০০ কেজি ওজনের শরীরটা নিয়ে নড়াচড়া করতেও কষ্ট হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে ভারি এই মহিলার সন্ধান মিলেছিল মিসরে। তার খবর জানতে পেরে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন  ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বলেছিলেন, প্রয়োজনে ভারতে এনে অস্ত্রোপচার করিয়ে ইমন আহমদকে সুস্থ করে তোলা হবে। উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এমন একজন রোগীকে কায়রো থেকে মুম্বাই পর্যন্ত আনার মতো বিমানের জোগাড় করাই চিকিৎসক ও ইমনের পরিবারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে এ ব্যাপারেও সুষমার শরণাপন্ন হয়েছেন মুম্বাইয়ের ব্যারিয়াট্রিক সার্জন মুফাজ্জল লাকদাওয়ালা।
সংবাদ মাধ্যমে ইমনের কথা জানতে পেরে তাকে মেডিক্যাল ভিসা দিয়ে মুম্বাইয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সুষমা। এ জন্য ইমন তাকে ধন্যবাদও জানান। কিন্তু এর পর থেকেই শুরু হয়েছে তাকে উড়িয়ে আনার ভাবনা। এমনিতে কায়রো থেকে মুম্বাইয়ে কোনো সরাসরি ফ্লাইট নেই। কোনো এয়ারলাইন ইমনের জন্য ব্যক্তিগত বিমান ভাড়া দিতেও রাজি নয়। এয়ার ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অশ্বিনী লোহানি অবশ্য জানিয়েছেন, বিমান পাওয়ার জন্য নিয়ম মেনে আবেদন করলে তারা সেটা ভেবে দেখবেন। এই মুহূর্তে কায়রোয় এয়ার ইন্ডিয়ার সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। তবে, বিশেষ ব্যবস্থা করে ইমনকে ভারতে আনতে ইচ্ছুক এয়ার ইন্ডিয়া।
জেট এয়ারওয়েজের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ১৩৬ কেজির কম ওজনের রোগীদের বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো স্ট্রেচার তাদের রয়েছে, তার বেশি ওজনের কাউকে স্ট্রেচারে করে বিমানে তোলা সম্ভব নয়। অন্যান্য বিমান সংস্থার ক্ষেত্রে এ ধরনের ওজনের বিধিনিষেধ না থাকলেও অন্যান্য সমস্যার কথা উল্লেখ করে তারাও ইমনকে উড়িয়ে আনতে রাজি হয়নি। সাইফাই হাসপাতালে ইমনের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা। সেই হাসপাতালেরই সার্জন লাকদাওয়ালা বলেন, ‘ব্যক্তিগত বিমানে ইমনকে উড়িয়ে আনার মতো আর্থিক ক্ষমতা তার পরিবারের নেই। আমরা তার জন্য অনুদান সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছি। এই হাসপাতালে ইমনের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার ও পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা আমরা করতে পারি। কিন্তু তাকে উড়িয়ে আনাটাই প্রধান সমস্যা’। অস্ত্রোপচারের পর কমপক্ষে তিন মাস হাসপাতালে কাটাতে হবে ইমনকে। তার অস্ত্রোপচারের জন্য ৪৫০ কেজির একটি অপারেশন টেবিলও জোগাড় করেছেন সাইফাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখন শুধু ইমনের মুম্বাই আসার অপেক্ষা।
মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই বিছানায় বন্দি কায়রোর বাসিন্দা ইমন। সেই বয়স থেকেই মোটা হতে আরম্ভ করেন। এরপর হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন ইমন। ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, হাইপারটেনশন, শ্বাসের সমস্যা, অবসাদ সব বাসা বাঁধে তার শরীরে। ফলে ইমনের অস্ত্রোপচারটাও খুব সহজ হবে না, মানছেন লাকদাওয়ালা। এখন ইমনের বোন চেম্মা আবদুলাতি তার দেখাশোনা করেন। পোশাক পরিবর্তন, গোসল করানো, খাওয়ানোÑ সবকিছুই করে দিতে হয় আবদুলাতিকে। চিকিৎসক লাকদাওয়ালার কথায়, ‘শুধুমাত্র ওজনের কারণেই ৩৬ বছরের ইমন পুরোপুরি শয্যাশায়ী ও রোগে জর্জরিত। তার যত শিগগির সম্ভব অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। আমি বুঝতে পারছি ইমন নিজে ও তার পরিবার কতটা কষ্টে রয়েছেন। আশা করি শিগগিরই সুস্থ করে তুলতে পারব ওকে। সূত্র : সংবাদ সংস্থা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ