পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের ঘটনা বিদ্যুৎখাতে ‘সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সার্বিক ব্যর্থতা’ বলেই মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা (জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়) সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতা। টেকনিক্যাল সাইড যেটা থাকে সেখানে টোটালি চুরি হয়েছে বলেই আজকে এই বিপর্যয় ঘটেছে। এটা একটা ঘটনা নয়। এটা আপনার শুধু বিদ্যুতে নয়। সর্বক্ষেত্রে ঘটনাগুলো ঘটছে। যার ফলে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমি মনে করি, এর জন্য মূলত দায়ী সরকারের অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন প্রজেক্ট গ্রহন করা, বিভিন্ন উন্নয়নের প্রকল্প করা যার লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি করা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আসাদ গেইটে দলের স্থায়ী কমিটির অসুস্থ সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে দেখতে গিয়ে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত বিপর্যয়ে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাইলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এসময় ইকবাল হাসানা মাহমুদ টুকু ছাড়াও স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যে এতো চিৎকার-চেচামেচি করছে সবসময় যে, আমরা বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি, অতিরিক্ত উৎপাদনও হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায়। সেগুলো নিয়ে আমরা সেমিনারে বলেছি, কোথায় সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু মঙ্গলবারের ব্যাপারটা ছিলো অস্বাভাবিক ব্যাপার। সারাদেশে প্রায় ৮ ঘন্টা বেশিরভাগ জায়গাতে বিদ্যুত ছিলো না-ইট ইজ এ টোটাল বøাক আউটের মতো হয়ে গেছে। এর থেকে যেটা বুঝা যায়, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে বহু প্রজেক্ট করেছে, টাকা পয়সাও বহু বানিয়েছে। বানিয়ে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে, এই ধরনের একটা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এর ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক-ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে, সব কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, ফিল্টিং স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। জাতিকে এক অসহনীয় অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
এই সরকার এখন বোঝা মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোথাও তো কোনো জবাবদিহিতা নেই। দেয়ার ইজ নট ইলেক্টেড পার্লামেন্ট। আপনি যে প্রশ্ন করবেন, কোথাও যে জবাব চাইবে সেই জবাবটাও চাইতে পারছেন না। যেহেতু এই সরকারের কোনো রকমের জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায় নেই, দায়িত্বশীলতার ব্যাপার নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখবেন এই ঘটনাগুলো ঘটছে এবং এই ঘটনাটা (জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়) তারই একটা প্রমাণ যে, তাদের দায়িত্বশীলতার অভাব এবং তাদের জবাবদিহিতার অভাবের কারণে এই ঘটনা ঘটছে। সেই কারণে কিন্তু আমরা বার বার করে বলছি যে, এই সরকার এখন একটা বারডেন হয়ে গেছে দেশের উপরে, এটা একটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। এই সরকারকে না সরালে এই জাতির অস্তিত্বই টিকে থাকা মুশকিল হবে।
তিনি বলেন, এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই রাস্তা যে, দে মাস্ট রিজাইন এবং একই সঙ্গে একটা কেয়ারটেকারের অধীনে একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এছাড়া এর কোনো বিকল্প পথ নেই।
তথ্য উপরিকাঠামোর ঘোষণা ভয়াবহ নিয়ন্ত্রণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা ভয়াবহ ব্যাপার। এখানে আমরা যেটা বলছি যে, কর্তৃত্ববাদী এই সরকার, তার যে বর্হিপ্রকাশ, তারা যে আরো নিয়ন্ত্রণের দিকে যাচ্ছে, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে, দেশের মানুষকে বঞ্চিত করবে সমস্ত তথ্য পাওয়া থেকে এটা তারই বর্হিপ্রকাশ। এখন আর কোনো ফাঁক ফোকর রইল না। আমরা এই সার্কুলারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এটা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
সাবেক বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সারাদেশে যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো দিয়েছে সেগুলো ইউনিফাইড স্পেসিফিকেশনে দেয়নি। যার ফলে কোনো পাওয়ার স্টেশন খুব নিউ জেনারেশনের আবার কোনটা পুরনো। এদের মধ্যে সিনক্রোনাইজড করা সম্ভব না। এই সরকার বিদ্যুত সেক্টারটাকে ‘খিদা আছে খাও, যত খাইতে পারিস খাও, তারপরে বিদ্যুত দিছে’। বিদ্যুত যে শুধু জেনারেশনে বিদ্যুত চলে না, ট্রান্সমিশনে লাগবে, ডিসট্রিবিউশনে লাগে-এগুলোর কিন্তু খুব একটা উন্নতি হয়নি। খালি বিদ্যুত প্রকল্প বানিয়েই গেছে। বানিয়ে যাওয়ার ফলে আজকে যেটা হয়েছে। এটা আরো হবে ভবিষ্যতে। কারণ সিনক্রোনাইজ করেনি।
তিনি বলেন, রেন্টাল পাওয়ার যেগুলো আছে এগুলো পুরনো মেসিন। পুরোনা মেসিন আর নতুন যেগুলো আছে- সেগুলো এক না। কোনো না কোন সময় দেখা যাবে একটা ক্লিপ করলে সবগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সিনক্রোনাইজড করতে পারবে না। কারণ নতুনটার সাথে পুরনোটার সিনক্রোনাইজড করা যায় না। লুটপাট করার জন্য যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে, সেই পাওয়ার স্টেশনের স্পেসিফিকেশনগুলো কি, প্রসিডিউরগুলো কি, এটা একটার সাথে আরেকটা ম্যাচ করবে কিনা এসব বিবেচনা করেনি। না করার ফলে আমরা দেখলাম যে, ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই। একটা দেশে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলে কত ওয়ার্ক আউট নষ্ট হয়, কত প্রডাকশন নষ্ট হয় এটা আপনারা সাংবাদিকরা বুঝতে পারছেন।
তার দল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন কিভাবে করবে জানতে চাইলে টুকু বলেন, একবারে প্রাইভেটাইজেশন জেনারেল করা যাবে না। করলে সাধারণ মানুষের জন্য প্রাইজ করা কঠিন হয়ে যাবে। আমরা মিক্সড করবো। আমাদের যে পলিসি ছিলো ৩০% বেসরকারি এবং ৬০% সরকারে থাকবে- এভাবে আমরা বিদ্যুতের উন্নয়ন করবো। এই উন্নয়নের সাথে সাথে ট্রান্সমিশন ও ডিসট্রিবিউশটাও সমন্বয় করে করব। যাতে সমস্যা না হয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী মডেল অব ইকোনমি- এটা (জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত বিপর্যয়) তার প্রতিফলন। তারা করেছে কী? দুর্নীতির জন্য একচেটিয়া কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট দিয়েছে যত তাড়াতাড়ি টাকা বানানো যায়। কিন্তু এগুলোর ট্রান্সমিশন,ডিসট্রিবিউশনের যে সিনক্রোনাইজেশন তারা সেটা করেনি। কারণ সেদিকে তারা মনোযোগ দেয় নাই। এখান টাকা বেশি আছে বলেই।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয় হচ্ছে- সব পারমিশন কিন্তু আনসোলিসিটেড। এগুলোর টেন্ডার হয়নি। তাদের (সরকার) নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে দেয়া হয়েছে। আইনও করা হয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাও করা যাবে না এবং তাদেরকে সমস্ত সুযোগ-সুবিধাসহ ফিক্সড চার্জসহ নিয়মিত পয়সা দিচ্ছে জনগনকে আজকে তার মূল্য দিচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।