পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1722041162](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদেই অন্যতম প্রধান্য ছিল বিদ্যুৎখাত। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া, উৎপাদন বৃদ্ধিসহ নানা প্রচারণায় এই খাতে সরকারের সাফল্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই বিদ্যুতই সরকারের প্রায় ১৪ বছরের সাফল্য ম্লান করে দিচ্ছে। গ্যাস সঙ্কট ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ রেখে বিগত আড়াই মাস ধরেই সারাদেশে চলছে লোডশেডিং। এর মধ্যে গত এক মাসে দুইবার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত ৬ সেপ্টেম্বরের পর গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় অর্ধেক অংশেই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবী জাতীয় গ্রিডে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ২৮টি জেলায় গতকাল দুপুরের পর থেকেই রাত সাড়ে ৮টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল না। দীর্ঘ সময় পর কোন কোন এলাকায় (আংশিক) বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু হলেও সব এলাকায় পূর্ণ লোডে বিদ্যুৎ সঞ্চালন-বিতরণ স্বাভাবিক হতে আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশের একমাত্র বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, নানা কারণে বিদ্যুতের গ্রিডে বিপর্যয় হতে পারে। এটি এক সেকেন্ডে হলেও তা পুনরায় চালু করার বিষয়টি জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় পিজিসিবি জানায়, গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ ও সূত্রপাত কোথায় হয়েছে, তা জানা যায়নি। আপাতত দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালুর চেষ্টা চলছে।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে এগিয়ে চলা বাংলাদেশে লোডশেডিং হারিয়ে গেছে বলেই সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছিল, এর মধ্যেই গত ১৮ জুলাই থেকে রাজধানী থেকে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং শুরু হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে লোডশেডিংয়ের সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়। বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে সরকারি অফিস এগিয়ে আনা হয় দুই ঘণ্টা। এসি, লাইট, ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহারে দেয়া হয় বিশেষ নির্দেশনা। শিল্প কারখানাতেও ছুটি নির্ধারণ করা হয় এলাকাভেদে। নানা কারণে বিদ্যুৎ নিয়ে যখন সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে তখন গতকাল দেশে আবারও ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।
দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে নিয়োজিত প্রধান সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গ্রিড মূলত: দুইটি অঞ্চলে বিভক্ত। গতকাল দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিড ট্রিপ (অকার্যকর) করে। এর ফলে গ্রিডের পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন ২৮টি জেলা- ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। দেশে বিতরণকৃত মোট বিদ্যুতের প্রায় ৬৫ ভাগ এই অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়। গ্রিডের কোন অংশে (পয়েন্টে) এবং কী ধরণের ত্রুটির কারণে এই বিপর্যয় তা গতকাল রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সনাক্ত করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। বিপর্যয় শুরুর চার ঘন্টা পর ঢাকা ও সিলেটের কয়েকটি স্থানে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ শুরু হয়। গ্রিড ট্রিপ করার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগই সন্ধ্যা নাগাদ সচল হতে শুরু করে। তবে পূর্ণ লোডে উৎপাদন-সঞ্চালন-বিতরণ শুরু হতে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে পিজিসিবি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, গ্রিডের কোন অংশে কেন ত্রুটি দেখা দিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করতে পুরো খাত একসঙ্গে কাজ করছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। ত্রুটির কারণ-ধরণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের রিপোর্টের পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জনজীবনে ভোগান্তি :
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে যখন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয় তখন অধিকাংশ মানুষই তা বুঝে উঠতে পারেননি। সরকার নির্ধারিত সময়ের বাইরে সম্প্রতি লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ না থাকাকে তারা নিয়মিত লোডশেডিংয়ের অংশ মনে করেছিলেন। কিন্তু পরে অনেক জেলায় একসঙ্গে বিদ্যুৎ না থাকার খবর জানা গেলে গ্রিড বিপর্যয়ের বিষয়টি জানা যায়। ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, দুপুর ২টার দিকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। শুরুতে বিপর্যয়ের বিষয়টি বুঝতে আমাদেরও কিছুটা সময় লেগেছে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস নিজস্ব জেনারেটরে বা অন্য ব্যবস্থায় কার্যক্রম চালু রাখলেও এক সময়ে সেই ব্যাকআপও অনেকের শেষ হয়ে যায়। পেট্রোল পাম্পগুলোতে ভিড় বাড়ে ডিজেলের জন্য।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ে বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং সচিবালয়সহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতেও। এগুলোতে বিকল্প উপায়ে সচল রাখা হয়। বিদ্যুৎবিহীন থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি তৈরি হয় হাসপাতালগুলোতে। বিশেষ করে সংকটাপন্ন রোগীদের অবস্থা বেশি খারাপ হয়। শিক্ষা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাসাবাড়িতে সংকটকে তীব্র করে তোলে পানির সংকট। কেননা বিদ্যুৎ না থাকায় অধিকাংশ ভবনে পানির ট্যাংকিতে পানি উঠানো যায়নি। ফলে সংরক্ষিত পানি শেষ হওয়ার পর বিপাকে পড়েন বহু মানুষ। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাও বাধাগ্রস্থ হয়। অনলাইন ব্যাংকিং, এটিএম সেবা, রেলওয়ের টিকেটিংসহ ব্যাহত হয় অনলাইন নির্ভর সকল সেবা। বাড়ী ঘর বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ায় হঠাৎ করে বেড়ে যায় মোববাতির চাহিদা। স্থান ভেদে ১০ টাকার মোমবাতী ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্তও বিক্রি হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর সড়ক এবং অলিগলি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বীর উত্তম কাজী নুরুজ্জামান সড়ক (বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সামনের সড়ক), গ্রিনরোড (ফার্মগেট থেকে পান্থপথ হয়ে সায়েন্স ল্যাব), ইন্দিরা রোড, খামারবাড়ি সড়ক এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সড়কে একটি সড়কবাতিও জ্বলতে দেখা যায়নি। শুধু যানবাহনের বাতির আলোয় সড়কের অন্ধকার কিছুটা দূর হচ্ছিল।
এদিকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর সাধারণ মানুষ ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায়। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেয় সাধারণ মানুষ। অনেকেই প্রশ্ন তুলেন এমন এক দিনে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটল যেদিন প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। ঠিক কি কারণে এমন ঘটনা ঘটলো সেটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখারও দাবি জানান তারা।
সরবরাহ বন্ধের পর গতকাল বিকালে সিলেটের বিয়ানিবাজার এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় শুরু করে পিজিসিবি ও পিডিবি। প্রথমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সহায়ক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এরপর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু হয়। মানিকনগর গ্রিড হয়ে রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎ আসে।
এর আগে দেশের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। তখন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সঞ্চালন কেন্দ্রে বিপর্যয় দেখা দিলে ভারতের সঙ্গে সঞ্চালন লাইন বন্ধ হয়ে যায়। একই সময় দেশের উৎপাদনে থাকা সব বিদ্যুৎকেন্দ্র একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সারা দেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় (ব্ল্যাক আউট) দেখা দেয়। তখন কোনো এলাকায় ১৫-১৬ ঘন্টায় বিদ্যুৎ আসলেও পুরো গ্রিডে পূর্ণ লোডে স্বাভাবিক সঞ্চালন-বিতরণ নিশ্চিত করতে ৩৭-৩৮ ঘন্টা সময় লেগেছিল। এরপর ২০১৭ সালের ১ ও ৩ মে তিন দফায় বিপর্যয় ঘটে। গতকালের আগে সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বরে সকাল ৯টা ৪ মিনিটে গ্রিডের পশ্চিমাঞ্চলে ট্রিপ করে। তখন অনেক এলাকায় দেড় ঘন্টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু হলেও সঞ্চালন-বিতরণ পূর্ণ লোডে স্বাভাবিক হতে প্রায় আট ঘন্টা সময় লাগে।
তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশন: জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিদ্যুৎ বিভাগকে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। গতকাল বিকালে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি এবং তৃতীয় পক্ষের একটি কমিটি বিভ্রাটের কারণ খুজে বের করতে কাজ করবে।
জাতীয় গ্রিড ট্রিপ করার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পূর্বাঞ্চলের বড় একটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে জানিয়ে গতকাল রাত পৌনে ৯টায় বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, আকস্মিক এই সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীবৃন্দ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেন, রাতে ঢাকার মিরপুর, মগবাজার, মাদারটেক, রামপুরা, গুলশান, উলন, বসুন্ধরা, ধানমন্ডি, আফতাবনগর, বনশ্রী, ধানমন্ডি (আংশিক), আদাবর, শেরে বাংলা নগর, তেজগাঁও, মিন্টুরোড, মতিঝিল, শ্যামপুর, পাগলা, পোস্তগোলাসহ বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ রিস্টোর হয়। তিনি সকলকে ধৈর্য ধারণের জন্য ধন্যবাদ জানান।
রাতে তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ঢাকা ও আশেপাশের অঞ্চলে বিদ্যুৎ রিস্টোর হচ্ছে। রাত পৌনে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, মানিকগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে। এবং ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জের আংশিক এলাকায় সরবরাহ চালু হয়েছে। হেভি লোডে রিস্টোর ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সিস্টেমের স্ট্যাবিলিটি মোটামুটি সন্তোষজনক হলে ঢাকার সব এলাকার বিদ্যুৎ লাইন সচল করা হবে। অনাকাক্সিক্ষত অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।###
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে স্থবির চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, গ্রিড বিপর্যয়ের ফলে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম। এতে থমকে যায় জনজীবন। চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। বন্ধ হয়ে যায় কল-কারখানায় উৎপাদনের চাকা। হাসপাতালের জরুরি অপারেশন, চিকিৎসাসহ সব ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। অনেক এলাকায় মোবাইল ও ইন্টারনেটের নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে যায়। রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকারে আলোহীন নগর-মহানগর সড়কে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
দেশের সবচেয়ে বড় ইপিজেড চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, কোরিয়ান ইপিজেডসহ নগরীর শিল্পাঞ্চলগুলোতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প ব্যবস্থায় কিছু সময়ের জন্য কল-কারখানা সচল থাকলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারি শিল্প কারখানাসহ সব ধরনের শিল্প কারখানায় উৎপাদনের চাকা থমকে যায়। বিকেলের মধ্যেই দোকানপাট, মার্কেট, বিপণিকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়।
হাটবাজারে মোমবাতি ও হারিকের কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে নগরবাসী। এ সুযোগে মোমবাতি, কেরোসিন ও হারিকেনের দামও বাড়িয়ে দেয়া হয়। বিদ্যুতের অভাবে পানির মোটর বন্ধ থাকায় বাসাবাড়িতে পানি সঙ্কট দেখা দেয়। নগরজুড়ে রীতিমত হাহাকার পড়ে যায়। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের আহাজারি করতে দেখা যায়।
বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়েন বৃদ্ধ ও শিশুরা। প্রথমে লোকজন বিদ্যুতের লোডশেডিং মনে করলেও দীর্ঘক্ষণ পরেও বিদ্যুৎ না আসায় খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেন। জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। সারাদেশে একযোগে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সার্বিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। নানা গুজব ও ডালপালা মেলতে থাকে।
পিডিবির কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টায় ন্যাশনাল গ্রিডে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। এরপর পুরো চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ চলে যায়। বন্ধ হয়ে যায় চালু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। রাতে পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী জানান, ওই মুহূর্তে চট্টগ্রামের কোথাও বিদ্যুৎ নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।