Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লৌহ মাহফুজ, জিবরিল ও কোরআন

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কে. এস. সিদ্দিকী : প্রথম মানব এবং প্রথম নবী আবুল বাশার হযরত আদম (আ.) হতে সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী-রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত যুগে যুগে যেসব নবী-রাসূলের আবির্ভাব ঘটেছিল তাদের সংখ্যা সাধারণত এক লাখ চব্বিশ হাজার বলে গণ্য করা হয়। আসমানি গ্রন্থধারী নবীগণ রাসূল নামে পরিচিত। তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কোরআনে নবী-রাসূলগণের যেসব নাম উল্লিখিত হয়েছে এবং যাদের বিবরণ এসেছে তাদের সংখ্যা এক ডজনের সামান্য বেশি। আল্লাহ বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট কিছু সংখ্যক নবী-রাসূলের কাহিনী তিনি বলেছেন এবং কিছু কিছুর কথা বলেননি। আল্লাহ আরো বলেছেন যে, তিনি কোনো কোনো রাসূলকে অপর রাসূলের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসূল হিসেবে তাদের প্রত্যেকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানী দায়িত্ব। তারা প্রত্যেকেই আল্লাহর বাণী ও তওহীদ প্রচারে আদিষ্ট ছিলেন।
আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সর্বসেরা সর্বশেষ নবী-রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ফেরেশতা হযরত জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে ২৩ বছরের পবিত্র কোরআন পূর্ণাঙ্গ নাজিল হয়েছে এবং তা বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন বস্তুর ওপর লিপিবদ্ধ ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরবর্তীকালে কাগজে লিপিবদ্ধ-সংকলিত হয়ে তা অবিকল অবিকৃত অবস্থায় আমাদের সামনে বিদ্যমান, তাও প্রায় দেড় হাজার বছরকাল যাবৎ। মানব সভ্যতার এটি আদি প্রাচীন লিখিত দলিল, যা সমগ্র মানব জাতির জন্য আসল ও চূড়ান্ত  জীবন বিধান হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
প্রশ্ন হতে পারে, হযরত আদম (আ.) হতে পরবর্তী আম্বিয়া-রাসূলগণের মিশন কি ছিল? পূর্ব বক্তব্যের রেশ ধরে বলতে হয় যে, একটি হাদিসের মর্মানুযায়ী, একবার হযরত আদম (আ.)-এর দুই হাতের তালুতে আল্লাহর পক্ষ হতে কেয়ামত পর্যন্ত আগত-অনাগত সকল মানব-মানবীর আত্মার ছবি রাখা হয়। তিনি ডান হাতে রাখা ছবিগুলো দেখে হাসলেন এবং বাম হাতের ছবিগুলো দেখে কাঁদলেন। জিজ্ঞাসা করা হলে বললেন, তাঁর ডান হাতে দেখানো তাঁর সন্তানেরা হবে জান্নাতি। এ জন্য তিনি আনন্দের হাসি হাসলেন এবং বাম হাতে দেখানো সন্তানেরা হবে জাহান্নামি। এ জন্য তিনি দুঃখের কান্না কাঁদলেন। হাদিসে বর্ণিত এ ঘটনা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য, আল্লাহর ‘আজলে’ আদিতে সকল মানব-মানবীর আত্মা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে এবং হযরত আদম (আ.)-এর অবগতির জন্য তার সামনে পেশ করা হয়। কোরআনে এ ঘটনার উল্লেখ না থাকলেও মানব জন্মের সকল প্রক্রিয়া ক্রমিক পর্যায়গুলো বলে দেয়া হয়েছে, খোদ আদম সৃষ্টির ব্যতিক্রমী পদ্ধতির বিবরণও প্রদত্ত হয়েছে।
কলম সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে, আল্লাহতায়ালা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেছেন। এ কলম কেয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। আল্লাহতায়ালা এ কলম দ্বারা তার জিকির লিখেছেন। কোরআন শরিফে একটি সূরার নাম করা হয়েছে কলম অথবা নূন। একটি মাছের নাম নূন। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মাছটি ভূ-পৃষ্ঠে ব্যাপৃত হয়ে আছে। মাছটি যখন নড়াচড়া করে তখন জমি প্রশস্ত হয়ে যায় ও পর্বতমালা স্থির হয়ে যায় এবং জমিনের ওপর গর্ব-অহংকার করে। ‘বাহমূত’সহ এ মাছের আরো কয়েকটি নাম বলা হয়ে থাকে। আরো বর্ণিত আছে যে, আল্লাহতায়ালা কলম সৃষ্টি করে যখন সেদিকে দৃষ্টিপাত করেন, তখন দুই ভাগ হয়ে যায়। অতঃপর বলেন, জারি হয়ে যাও কেয়ামত পর্যন্তের জন্য। তখন তা জারি হয়ে যায় লৌহ মাহফুজে।
তফসিরে খাজেনে বর্ণিত লৌহ মাহফুজ ও কলম সম্পর্কিত এসব অদ্ভুত কাহিনীর সত্যাসত্য যাই হোক না কেন, লৌহ মাহফুজ তথা লিখিত সংরক্ষিত ফলক হতে যে কোরআন আসমান হয়ে ধাপে ধাপে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর নাজিল হয়েছে তা সমগ্র মানব জাতির একমাত্র চূড়ান্ত জীবন বিধান।
কোরআনের বাহক জিবরাইল (আ.)
লৌহ মাহফুজ হতে ধাপে ধাপে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি কোরআন নাজিল হয়। বাহক ছিলেন ফেরেশতা হযরত জিবরাইল (আ.)। তার সম্পর্কে নানা কথা প্রচলিত আছে। যেমন তিনি আমিনুল অহী, খাজেনুল কুদস, নামুসে আকবর, রুহুল আমিন, তাউসুল মালায়েকা (ফেরেশতাদের ময়ূর) উপাধিকারী। তার সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি যখন আল্লাহর অহীর কথা বলেন, আসমানের অধিবাসীরা তা শোনেন। বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) একবার জিবরাইল (আ.)-কে বলেন, আমার ইচ্ছা, আল্লাহ আপনাকে যে সুরতে সৃষ্টি করেছেন আমি আপনাকে সেই আসল সুরতে দেখি। জিবরাইল (আ.) বলেন, আপনার সেই শক্তি নেই, আপনি আমাকে দেখতে পাবেন না। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আপনি আমাকে সেই সুরত একটু দেখান। এর পর এক চান্দ্র রাতে বাকী নামক স্থানে জিবরাইল (আ.) সেই আসল সুরতে আত্মপ্রকাশ করেন। সমগ্র দিগন্ত বন্ধ হয়ে যায় এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) অজ্ঞান হয়ে পড়েন। যখন তার জ্ঞান ফিরে আসে তখন জিবরাইল (আ.) তার সাবেক সুরতে প্রত্যাবর্তন করেন। তখন তাদের মধ্যে আরো কথোপকথন হয়।
কাবুল আহবারের বর্ণনা অনুযায়ী, জিবরাইল (আ.) ফেরেশতাদের মধ্যে সর্বোত্তম। তার ছয়টি বাহু বা ডানা আছে। প্রত্যেক বাহুতে আরো একশ করে ডানা আছে। এগুলো ছাড়া পেছনে আরো দুটি ডানা আছে যখন কোনো জনপদ ধ্বংস করার সময় হয়, তখনই এ দুটি ডানা প্রসারিত করেন। আরো বর্ণিত আছে যে, জিবরাইল (আ.) যখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি অবতীর্ণ হন, তখন একটি আয়াত প্রসঙ্গে তার শক্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লুত (আ.)-এর জাতিকে আমি ওই দুই ডানার একটি ডানা উঠিয়ে ধ্বংস করি এবং তাদের নিয়ে আসমানে উঠে যাই এবং আসমানের অধিবাসীরা ওদের মোরগের আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পান। অতঃপর ওই জাতি ও ওদের অনুসারীদের উল্টে দিই।
নুজুলে কোরআনের পদ্ধতি
লৌহ মাহফুজ হতে কোরআন একবারই নাজিল হয়েছে এবং পরে প্রয়োজন অনুসারে ধাপে ধাপে নাজিল হয়েছে। বর্ণিত আছে যে, নাজিল হওয়ার পূর্বে কোরআন একবারেই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অন্তরে প্রবিষ্ট করে দেওয়া হয়, কিন্তু তখন প্রচার করার হুকুম ছিল না। ক্রমান্বয়ে প্রয়োজন মোতাবেক তা নাজিল হতে থাকে।
কোরআনের বিভিন্ন আয়াত হতে প্রমাণিত হয় যে, কোরআন নাজিল করার দুটি পদ্ধতি ছিল। প্রথমত, আল্লাহর জাতসত্তা হতে লৌহ মাহফুজে একই দফায় নাজিল করা হয়। অতঃপর ফেরেশতা জিবরাইলের জাতসত্তায় ক্রমান্বয়ে তা নাজিল করা হয়। দুনিয়াতে নাজিল করারও দুটি পদ্ধতি ছিল। একটি পদ্ধতি যা সকলের জানা। তা হলো এই যে, আল্লাহ যখন কোনো ঘটনা উপলক্ষে আয়াত নাজিল করার ইচ্ছা করতেন, তা রাসূলুল্লাহ (সা.) জিবরাইল (আ.) হতে লাভ করতেন। দ্বিতীয় পদ্ধতি ছিল এই যে, প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল (আ.) রাসূলুল্লাহ (সা.) দ্বারা কোরআন ‘দাওর’ করাতেন এবং তার ওফাতের বছর দাওর করেন।
আল্লাহতায়ালা হযরত জিবরাইল (আ.)-কে দেহরা কালবির সুরতে প্রেরণ করেন। একটি বিখ্যাত হাদিসে তার বিবরণ রয়েছে। তাঁকে সাহাবায়ে কেরামও প্রত্যক্ষ করেন। দেহয়া কালবী যখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে ঈমান, ইসলাম ও এখলাস ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন করে চলে যান, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাকে তালাশ কর, কে ছিলেন তিনি। লোকেরা যখন তার সন্ধান লাভে ব্যর্থ হয় তখন তিনি বলেছেন, তিনি জিবরাইল (আ.) ছিলেন, তোমাদেরকে শিক্ষাদানের জন্য এসেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দেওয়া।
সাহাবায়ে কেরাম কোরআন নাজিল হওয়ার পদ্ধতি এভাবে জানতেন যে, আয়াত নাজিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলে দিতেন যে, অমুক আয়াত অমুক সূরার অমুক আয়াতের পর রাখো। সেখানেই তা প্রতিস্থাপন করা হতো। আরেকটি নিয়ম ছিল এই যে, তিনিই খোদ তেলাওয়াত করতেন। বিশেষত নামাজে তিনি সূরাগুলো পড়তেন, যাতে জানা হয়ে যেত যে, সংশ্লিষ্ট সূরার এবং অমুক আয়াতের পর অমুক আয়াত হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) খোদ সাহাবায়ে কেরামের কাছ থেকে কোরআন শ্রবণ করতেন। এ জন্য তারা পূর্ণভাবে অবগত হতেন যে, তারা যা পড়ছেন তা সঠিক এবং সুবিন্যস্ত। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজে যখন তেলাওয়াত করতেন তখন অধিকাংশ সূরার বিন্যাসও লক্ষ করতেন। এমনকি আওফ ইবনে মালেক ও অন্যান্য সাহাবা হতে বর্ণিত আছে যে, হুজুর (সা.) তাহাজ্জুদের নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা বাকারা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল ইমরান, তৃতীয় রাকাতে সূরা নিসা এবং চতুর্থ রাকাতে সূরা মায়েদাহ ও সূরা আন আম পড়েন। অনুরূপভাবে অন্য সূরাগুলো সম্পর্কেও বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে।
খ্যাত আছে যে, হজরত উসমান (রা.) কোরআনে ‘জামে’ তথা সংকলক ছিলেন, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, তিনি সূরাগুলোর সংকলক ছিলেন। আসল ঘটনা এই যে, হুজুর (সা.)-এর যুগে সাহাবিগণ কোরআনের হাফেজ ছিলেন। কেউ কেউ পূর্ণ কোরআনের হাফেজ ছিলেন, কেউ কেউ আংশিক হাফেজ। কোরআন কিতাবত করার প্রয়োজন তাদের ছিল না। কিতাবতের যে তরিকা তাদের যুগে প্রচলিত ছিল, সেই অনুযায়ী তারা কোরআন লিখেও নিয়েছিলেন। কাগজের অভাব ছিল। চীন ভারতবর্ষ হতে কাগজ আমদানি করে আল্লাহর কালাম লিপিবদ্ধ করা হতো। আরবগণ হাড়, চামড়া, পাথর, কাঠের তক্তা, গাছের পত্র ইত্যাদির ওপর লিখতে অভ্যস্ত ছিল। মোট কথা, হুজুর (সা.)-এর যুগে প্রচলিত সব পদ্ধতিই ব্যবহার করা হতো।
কোরআনের অর্থ বোঝা খুব সহজ ব্যাপার নয়। কেননা কোরআন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মোজেজা বা অলৌকিতার এক বিস্ময়কর নির্দশন এবং যত প্রকারের মোজেজা হওয়া সম্ভব, সবই কোরআনে বিদ্যমান এবং সর্বকালে থাকবে। সব মোজেজাই রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নবুওয়াতের সাক্ষী বহন করে। কোরআন বোঝার জন্য যত প্রকারের শাস্ত্র রয়েছে সবই জরুরি। ওইসব শাস্ত্র আরবি ভাষায় রচিত বলে আরবি শেখা ও জানা জরুরি। এ ভাষায় শত শত কোরআনের তফসির ছাড়াও বহু ভাষায় তফসির রচিত হয়েছে। সুতরাং কোরআনকে সঠিকভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে হলে কোরআনের তফসির ও জ্ঞান লাভ করতে হবে। কোরআনের মনগড়া অর্থ করা নিষিদ্ধ। যারা আরবি না জেনে বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ অথবা অনুবাদের অনুবাদ পড়ে কোরআনবিদ হতে চান, তাদের ভ্রান্তিতে পতিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
লৌহ মাহফুজ সংরক্ষিত ফলক
কোরআন লৌহ মাহফুজে লিপিবদ্ধ, সংরক্ষিত। লৌহ অর্থ ফলক। লৌহ মাহফুজ সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে, এটি আরশের ডান দিকে অবস্থিত। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফলকের মধ্য ভাগে লিপিবদ্ধ আছেÑ ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু ওয়া দীনুহু আল ইসলাম ওয়া মোহাম্মাদুন আবদুহু ওয়া রাসূলুহু, ফামান আমানা বিল্লাহি আজ্জা ওয়াজাল্লাওয়া ছাদ্দাকা বিওয়াদিহি ওয়াত্তাবাআ বিরুমুুসুলিহি আদ খালাহুল জান্নাতা।’
অর্থাৎ একক আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, তার দ্বীন হচ্ছে ইসলাম এবং মোহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসূল। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, বিশ্বাস করে এবং সত্য মনে করে এবং তার রাসূলগণের অনুসরণ করে তাকে তিনি জান্নাতে দাখেল করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন