পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ফার্নিচার নামটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে কয়েকটি জিনিস ভেসে উঠে। মনে পড়ে আমাদের বাজারের সেই দোকানটির কথা যেখানে কারিগররা দোকানের পেছনে দিন-রাত ডিজাইনিং, কাঠ কাটা, ফার্নিশিং এর কাজে ব্যস্ত থাকেন আর দোকানের সামনের অংশ বানানো ফার্নিচার থরে থরে সাজানো থাকে। এভাবেই যুগের পর চলে আসছে। এমন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে যে কয়েকটা প্রতিষ্ঠান কাঠামোগত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে তাদের মধ্যে হাতিল অন্যতম। তারা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে এখন বিদেশেও বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। সামনে বিশ্ব ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা। এ লক্ষ্যে অল্প অল্প করে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হাতিলের প্রায় ৬৫ বিঘার ওপর দুটি কারখানা রয়েছে সাভারের জিরানীবাজারে। সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় তিন হাজার মানুষের। উৎপাদন ক্ষমতার দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ উডেন ফার্নিচার তৈরির কারখানার মর্যাদা পেয়েছে হাতিল।
হাতিলের কারখানার সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে বিশাল বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে কোন ধরনের দূষণ ছাড়াই। হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করছে অথচ কোথাও কোন ভিড় বা জটলা নেই। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে কারণ জার্মানি, ইতালি, জাপান ও আমেরিকার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে হাতিলের কারখানা। প্রতিমাসে ৪৮ হাজার পিস ফার্নিচার তৈরি করতে সক্ষম কারখানাটি। উৎপাদন পরিকল্পনা, কাজের ধারাবাহিকতায় উৎপাদন বাড়ানো, আসবাবপত্রের স্থায়িত্ব বাড়ানো এবং ফিনিশিংয়ের গুণগত মান উন্নত করার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক সিএনসি মেশিন, নেস্টিং মেশিন, রোবটিক কাটিং মেশিন, বেন্ড মেশিন, রোবটিক স্প্রে এবং ইউভি কিউরিং মেশিনসহ পূর্ণাঙ্গ লাইন।
হাতিলের উৎপাদিত ফার্নিচার দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ১০টি দেশে রপ্তানি হয়েছে। ভারত, ভুটান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, থাইল্যান্ড এবং মিশরেও হাতিলের কার্যক্রম রয়েছে।
এছাড়া, দেশি-বিদেশী বিভিন্ন ফার্নিচার মেলায় হাতিলের রয়েছে সরব উপস্থিতি। এখন পর্যন্ত দুবাই, দিল্লি ও মুম্বাই ইনডেক্স ফেয়ারে অংশগ্রহণ করেছে তারা। বাংলাদেশ থেকে আসবাবপত্র রফতানিতে দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছে হাতিল। এ কারণে আসবাবপত্র রপ্তানির সিংহভাগই হাতিলের দখলে, যার মাধ্যমে হাতিল দেশের জন্য বয়ে আনছে বৈদেশিক মুদ্রা।
সবচেয়ে বড় কথা পরিবেশের কথা চিন্তা করে হাতিল এফএসসি সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সংরক্ষিত বন থকে কাঠ ব্যবহার করে। আবার রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ায় কাঠের ওয়েস্টেজ ব্যবহার করার জন্য রয়েছে আধুনিক সব মেশিনারিজ। উৎপাদনের পাশাপাশি এ ফ্যাক্টরিতে মেটাল প্রসেসিং, ডোর ম্যানুফ্যাকচারিং ইত্যাদি সুবিধা থাকায় হাতিলকে বলা যায় দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সমন্বিত ফার্নিচার ম্যানুফ্যাকচারার।
এ প্রসঙ্গে হাতিলের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান বলেন, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ পণ্যের নতুন নতুন বাজার তৈরির লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের যে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে, তা দিয়ে সর্বোত্তম গুণগতমান বজায় রেখে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব। সরকারের সহযোগিতায় ভবিষ্যতেও আমরা ফার্নিচার শিল্পে বাংলাদেশের নাম বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।