Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্মাণ কাজ শেষ হতে কী অর্ধ শতাব্দী লেগে যাবে?

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ অর্ধেক কাজ করতে ২৮ বছর পেরিয়েছে

নাইমুর রহমান, কুষ্টিয়া ইবি থেকে | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০২ এএম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রেীয় মসজিদের নির্মাণ কাজ উদ্ধোধনের পর প্রায় তিন দশক হতে চলেছে। এ পর্যন্ত ২৮ বছরে কাজ হয়েছে অর্ধেক অর্থাৎ ৫০ শতাংশ। ইবিতেই একটি প্রশ্ন দীর্ঘদিন ঘুরপাক খাচ্ছে। আর সেটি হচ্ছে, একটি মসজিদ নির্মাণ করতে কত বছর সময় লাগে? যদি ২৮ বছরে অর্ধেক কাজ হয়ে থাকে তাহলে কী মসজিদের নির্মাণ সম্পন্ন হতে একটি শতাব্দীর অর্ধেকের বেশি সময় (৫৬ বছর) লাগবে? এসব প্রশ্নের কোনো জবাব নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। কথা একটাই মসজিদ নির্মাণ শেষ করতে টাকার প্রয়োজন।
গত এক বছর ধরে টাকার অভাবে মসজিদের কাজ বন্ধ রয়েছে। তৃতীয় ধাপের কাজ শুরু হওয়া বন্ধ। বাকি কাজ সম্পন্ন হতে এখনো প্রায় ৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিস। নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশের প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সবচেয়ে মসজিদ হবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রেীয় মসজিদ। কিন্তু টাকার অভাবে প্রায় এক বছর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে আছে অন্যতম ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় এই স্থাপনার। কাজ শুরুর ২৮ বছরে তিন দফায় মোট ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে মসজিদটির। বাকি কাজ সম্পন্ন হতে এখনো প্রায় ৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিস।
জানা যায়, ১৯৯৪ সালে সরকারি অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে দুই দশমিক ২৫ হেক্টর জায়গাজুড়ে ইবি কেন্দ্রীয় মসজিদের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। কাজ শুরুর পর বিদেশ থেকেও সহায়তা আসে। তবে মসজিদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ভিন্ন খাতে ব্যয় করায় অর্থ ফেরত নেয় বিদেশি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ১০ বছর পর ২০০৪ সালে ৩৬ শতাংশ কাজ শেষ হলে তৎকালীন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মোশারফ হোসাইন শাহজাহান উদ্বোধনের মাধ্যমে নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেন মসজিদটি। এরপর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দীর্ঘ ১৩ বছর পর ২০১৮ সালে তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারীর সময় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই দফায় নির্মাণ কাজ স¤প্রসারণ করা হয়। এরপর বর্তমান ভিসির সময়ে আবার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
নিমার্ণকাজ শেষ হলে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৭ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। চারতলার মূল মসজিদে মোট সাত হাজার এবং মসজিদের সামনের পেডমেন্টে নামাজ আদায় করতে পারবেন আরো ১০ হাজার মুসল্লি। নকশা অনুযায়ী মসজিদের প্রাচীরের চারপাশে ১৫০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট চারটি মিনার স্থাপিত হবে। মসজিদের তিনপাশ দিয়ে থাকবে প্রবেশ পথ। প্রতিটি প্রবেশপথে থাকবে একটি করে গম্বুজ। এছাড়া প্রতিটি অনুষদীয় ভবন থেকে মসজিদে আসার জন্য থাকবে প্রশস্ত পথ। মসজিদের নিচতলায় একটি লাইব্রেরি ও রিসার্স সেন্টারের প্রস্তাবনাও রয়েছে।
শিক্ষাজীবন শেষ করা সাবেক শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে মসজিদকে এখনও নির্মাণাধীন দেখার পর তাদের কণ্ঠে আক্ষেপ ঝরে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হানিফ রহমান বলেন, মসজিদটি সারাজীবন নির্মাণাধীনই রয়ে গেল। কোনো প্রশাসনই নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে পারলো না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহিদ উদ্দীন মো. তারেক ইনকিলাবকে জানান, মসজিদের কাজ শেষ হতে এখনো প্রায় ৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন। বাজেটের টাকা শেষ হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এখনো প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি কাজ বাকি। আমরা খুব শিগগিরই মসজিদের বাজেটের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করবো। বাজেট পেলে আগামী তিন বছরের মধ্যে অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করা যাবে আশা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ