পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের বিভিন্ন পূজামন্ডপে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কারণ, বেশ কিছু পূজামÐপ ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, ৫০ যুবক জঙ্গি হামলার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। তারা বিভিন্ন পূজামÐপে হামলার জন্য ট্রেনিংও করছে, এগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।পূজায় কোনও সহিংস ঘটনার আগে গোয়েন্দা তথ্য আমাদের থাকবে। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পূজামÐপে আমাদের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পূজায় কোনও ধরনের নাশকতা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি। তারপরেও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।
রাজধানীতে ২৩৩টি মÐপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে চারটিকে বিশেষ মÐপ হিসেবে ধরেছি। এগুলো হচ্ছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজামÐপ ও বনানী সর্বজনীন পূজামÐপ। এ চারটা বিশেষ শ্রেণির মÐপে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে থেকে শুরু করে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ সবকিছু থাকবে। এছাড়া, ঢাকায় ৫টা বৃহত্তর মন্দির রয়েছে। সেগুলো হলো সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সর্বজনীন পূজামÐপ, বসুন্ধরা সর্বজনীন পূজামÐপ এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজামÐপ। এগুলোতেও সিসিটিভিসহ আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজামÐপ, এক তারকাবিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণির ৬১টি পূজামÐপ রয়েছে। এসব পূজামÐপের নিরাপত্তায় আমাদের যেমন সাধারণ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে, তেমনি আয়োজকদের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে।পুণ্যার্থীদের তল্লাশিসহ যেসব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ইভটিজিং, মাদক নিয়ে নাচানাচি প্রতিরোধ এবং সারা শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে। এছাড়া, বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিসর্জনস্থলে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা এখন অনলাইনে সক্রিয় রয়েছে। তারা নানা ধরনের পোস্ট দিচ্ছে। তারা সেলফ রেডিক্যালাইজড হয়ে (লোন উলফ) হামলায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করছে। কেউ তাদের পোস্ট দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আমরা অ্যালার্ট আছি।
এদিকে এ পূজা উৎসবকে কেন্দ্র করে সরকারকে বিব্রত করতে উগ্রবাদী সংগঠনগুলো যে কোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করতে পারে বলে শঙ্কা করেছে গোয়েন্দা সংস্থাও। এ কারনে দুর্গা উৎসব সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারী ও নিরাপত্তা ব্যবস্থ্া জোরদার করা হয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যেই তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, একদিকে জঙ্গী সংগঠনগুলো নিজেদের সুসংহত করতে তৎপর রয়েছে। অপরদিকে আইন শৃংখলা বাহিনীর জঙ্গীবিরোধী অভিযানে বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের সদস্য আটক হচ্ছে। এ অবস্থায় পূজা চলাকালীন সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে উগ্রবাদী সংগঠনসমূহ যে কোন ধরণের নাশকতামূলক কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করতে পারে।
এদিকে হিন্দু মহাজোট নামক সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু যুব পরিষদ ও বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র পরিষদ দেশব্যাপী তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদারে সক্রিয়। পাশাপাশি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারিভাবে ৩ দিন ছুটির দাবি জানিয়ে আসছে। বর্ণিত ইস্যুসমূহকে সামনে এনে এবং বিগত বছরগুলোতে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনাসমূহের প্রেক্ষিতে হিন্দু সংগঠনসমূহ যে কোন ধরণের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।
এছাড়া জামায়াত ইসলামের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি , গ্রেফতার এবং জামায়াত শিবিরের কার্যক্রমের উপর নজরদারী বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে তাদের কার্যক্রম সীমিত হলেও ধর্মীয় গোঁড়ামি ও পুঁঞ্জিভ‚ত ক্ষোভের কারণে নেতা কর্মীদের মাঝে অসন্তুষ্টি বিরাজ করছে। এপ্রেক্ষিতে পূজা চলাকালীন সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে জামায়াত - শিবির বিভিন্ন উস্কানীমূলক বক্তব্য ও কর্মকান্ডের মাধ্যমে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হতে পারে।
অন্যদিকে জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ , নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন দাবিতে বিএনপি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও ভাংচুর চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে তৎপর রয়েছে। যা সা¤প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ , ফেনী , ফরিদপুর , বরগুনা এবং ভোলার ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয়। একইভাবে দ্রব্যমূল্যর বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং জাতীয় সরকারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে । সরকার বিরোধী আন্দোলন বাস্তবায়নে বিভিন্ন সভা , সমাবেশের মাধ্যমে সংগঠিত হওয়ার জন্য তৎপর রয়েছে । এমতাবস্থায় বহির্বিশ্বে সরকারের ভাব মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে বিএনপি ও বামপন্থী দলসহ সরকার বিরোধী ও সুযোগ সন্ধানী গোষ্ঠি বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা করছে বলেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।