Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বালাগাল উলা বিকামালিহি কাসাফাদ্দোজা বিজামালিহি

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

কালের সাজানো বাগানে বার বার ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটেছে। সুনিপুণ নিয়ন্তা কখনো কখনো ধরণীকে এমন অপরূপ সাজে সজ্জিত করেছেন, যা দেখে দর্শকের চোখের দৃষ্টি বার বার শীতল হয়েছে। কিন্তু আজকের দিনটি ছিল এমনি এক মহিমান্বিত দিন যার প্রতীক্ষায় বিশ্ব প্রকৃতি কোটি কোটি বছর অতিবাহিত করেছে। সুপ্রশস্ত নভোমÐল এই দিনটির জন্য শুরু থেকেই চাতকীর মতো তাকিয়ে থেকেছিল। কালের চপলগতি এই দিনটির জন্য যুগ যুগ ধরে এপাশ-ওপাশ করছিল। নিয়ন্তার এ সুসজ্জিত প্রকৃতি এর উপকরণগুলোর দ্রæত গতিময়তা, চাঁদের সুবিমল হাসি, মেঘমালার লুকোচুরি, ধরণীর প্রাণীকুল, ইব্রাহীমের তাওহীদ, ইউসুফের রূপ লাবণ্য, মূসার অলৌকিকত্ব, ঈসা মাসীহের আত্মত্যাগ সব কিছুই যে প্রতীক্ষিত মহামানব তথা দু’জগতের সর্দার হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুভাগমনে ধন্য হয়েছে। ধন্য হয়েছে বিশ্বজগতের মানুষ। ধন্য হয়েছে ধন-ধান্য পুষ্পে শোভিত এ জগতের মাটি, পাহাড়-প্রান্তর, নদ-নদী, সাগর-মরুভূমি।

আজকের এই প্রাণোজ্জ্বল প্রভাব সৌভাগ্যের বার্তাবাহক মহান পুরুষের আবির্ভাবে আনন্দ জোয়ারে আপ্লুত, চরিত লিখকগণ নব নব আঙ্গিকে কতরূপেই না এই আগমনী বর্ণনা করেছেন। আজ রাতে কিসরার প্রাসাদের চৌদ্দটি গম্বুজ ধুলায় লুটিয়ে পড়েছে। পারস্যের অগ্নিকুÐ সহসা নিভে গেছে। শুকিয়ে গেছে শাতিল আরবের অর্ধেক জলরাশি। শুধু কিসরার সুউচ্চ মিনারই নয়; বরং আজমীদের শান, রোমকদের শওকত, চীনের গগনচু¤ী^ প্রাসাদপুঞ্জ ভেঙে চুরমার হয়েছে। শুধু পারস্যের অগ্নিই নয়, বরং অবিশ্বাসের ঘনান্ধাকার ও ভ্রান্তির কঠিন বেড়াজাল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। পূজামÐপে ঘূর্ণিবায়ুর ঝড় উঠেছে। পূজামÐপগুলো মৃত্তিকায় মিশে গেছে। অগ্নি উপাসকদের পুতির মালা ছিড়ে গেছে। খ্রিষ্টানদের ভ্রান্ত মতপল্বব এক এক করে ঝরে পড়েছে। জগতজুড়ে তাওহীদের প্রভঞ্জন আত্মপ্রকাশ করেছে। সত্যপ্রিয় প্রাণবন্যার বসন্তের আগমন ঘটেছে। পথনির্দেশের আলোর বন্যায় নিখিল বিশ্ব প্লাবিত হয়েছে। মানবীয় গুণাবলির যথার্থ চিত্র স্বচ্ছ আয়নায় প্রতিফলিত হয়েছে। মোট কথা, আবদুল্লাহর ইয়াতীম পুত্র মা আমেনার কলিজার টুকরা, শাহানশাহে আরব আত্মিকজগত থেকে বস্তুজগতে তাশরীফ এনেছেন। তিনিই শ্রেষ্ঠ মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আছহাবিহী ওয়া বারাকা ওয়া সাল্লাম।

হুজুরে পাক (সা.)-এর জন্মতারিখ সম্পর্কে মিসরের প্রসিদ্ধ জ্যোতির্বিদ মাহমুদ পাশা একটি পুস্তক লিখেছেন, তাতে তিনি সূ² গাণিতিক হিসাবের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে, হুজুরে পাক (সা.)-এর শুভ জন্মতারিখ রবিউল আউয়াল মাসের নবম তারিখ সোমবার মোতাবেক ২০শে এপ্রিল ৫৭১ ঈসায়ী সন। জন্মতারিখটি নিয়ে কিছু মতভেদ থাকলেও দিনটি সোমবার, মাসটি রবিউল আউয়াল, সনটি ৫৭১ সন এবং তারিখটি আট থেকে বার-এর মধ্যে কোনো একদিন, এতে কারো দ্বিমত নেই। নবজাত শিশুর নাম রাখা হয় ‘মুহাম্মাদ (সা.)।’ সাধারণভাবে প্রচলিত যে, নামটি রেখেছেন দাদা আবদুল মুত্তালিব। জন্মের পর শিশু দু’তিন দিন মা আমেনার দুধ পান করেন। তারপর চাচা আবু লাহাবের দাসী সোয়াইবিয়া তাকে দুধ পান করান। আসুন, আমরা তার প্রতি সালাত ও সালাম পেশ করিÑ
সালাতুন ইয়া রাসূলাল্লাহ আলাইকুম, সালামুন ইয়া হাবিবাল্লাহ আলাইকুম!!

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ