পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম (১৩)। গতকাল বুধবার রাতে মক্কার পবিত্র হারাম শরিফে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। সেখানে সালেহর হাতে ১ লাখ রিয়াল (প্রায় সাড়ে ২৭ লাখ টাকা) পুরস্কার, সনদ ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, সউদীর বাদশাহ আবদুল আজিজের নামে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা মুসলিম বিশ্বের বড় ও মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রতিযোগিতা। পবিত্র মক্কায় এবার ৪২তম প্রতিযোগিতা ছিল। এতে বিশ্বের ১১১টি দেশের ১৫৩ জন কোরআনের হাফেজ অংশ নেয়। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সউদী বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের উপদেষ্টা ও মক্কা নগরীর গভর্নর খালেদ আল ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ; সউদী আরবের ইসলাম ও দাওয়াহবিষয়ক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিন আবদুল আজিজ আলে শেখসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত মার্চে ইরান আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় সালেহ আহমাদ তাকরীম ১ম, মে মাসে লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৭ম স্থান অর্জন করে। ২০২০ সালে পবিত্র রমজান মাসে বাংলাভিশন টেলিভিশন আয়োজিত হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় সালেহ। এরপর থেকেই সোস্যাল মিডিয়ায় তাকরিমকে নিয়ে শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে যাচ্ছে।
আবু জ¦র নামে একজন লিখেছেন, সাবাস তাকরিম! দোয়া ও অভিনন্দন তোমাকে। তোমার তেলাওয়াতে একটা বিশেষ আবেদন রয়েছে। রীতিমতো মন ছুঁয়ে যায়। আমার অনেক ভালো লাগে খুব। সাফল্যের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক। তাকরিমরা বেশি বেশি জন্ম নিক এ ভূখন্ডে। ছড়িয়ে দিক কোরআনের সুধা বিশ্বময়।
আয়মান নামে একজন লিখেছেন, ১১১টি দেশের মধ্যে তাকরিম বাংলাদেশের নাম ফুটিয়ে তুলেছে। সে সাথে আমাদের দেশেকে অনেক সম্মানিত করেছে। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি রাষ্ট্র তোমাকে যথাযথ সম্মান দিবে।
এসআই আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ্, আবারো কোরআন প্রতিযোগিতায় লাল-সবুজের পতাকার বিশ্ব জয়। সৌদি আরবে আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরীম ৩য় স্থান অর্জন করায় ছোট ভাইকে প্রাণঢালা অভিনন্দন।
হারুনুর রশিদ নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, এই ছোট্ট ভাইটিকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন, আমিন। তার জন্য দোয়া ও শুভ কামনা।
শহিদুল নামে একজন লিখেছেন, দোয়া করি তাকরিম তুমি যেন আরো সামনে এগিয়ে যাও। সে সাথে বাংলাদেশের গৌরব অর্জন করেছ তুমি। এই ছোট্ট ছেলেটিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্বর্ধনা দেওয়া হোক।
আমান নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, দেশে সম্মান না পেলেও বিদেশে ঠিকই সম্মান পেয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে পরকালেও উত্তম প্রতিদান দান করবেন "ইনশাআল্লাহ "
মাহমুদুল হক জালীস নামে একজন লিখেছেন, আফসোস তারপরও এই রাষ্ট্র তাকে সম্মান জানাতে পারেনি। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে পারেনি। এটা রাষ্ট্রের জন্য চরম ব্যর্থতা।
আবদুস সবুর নামে একজন লিখেছেন, আজ কোরআনের হাফেজদের কোনো সংবর্ধনা না থাকলেও কেয়ামতের ময়দানে স্বয়ং আল্লাহ তাদের সংবর্ধনা দিবেন।
আবদুল মতিন নামে একজন লিখেছেন, আল্লাহ্ তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখুক এবং তার হায়াতের মধ্যে বরকত দান করুক আমিন।
আখি নূর ইসলাম নাঈম নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, প্রতিটি মায়ের গর্ভে যেন মহান আল্লাহ তাকরিমের মতো সন্তান দান করেন।
জহিরুল নামে একজন লিখেছেন, অভিনন্দন প্রিয় সালেহ আহমেদ তাকরিম। তুমিই প্রকৃত পক্ষে এই দেশের গর্ব, তুমি বিশ্বের দরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বলকারি। তবে আফসোসের বিষয় হচ্ছে এই দেশে তোমাদের জন্য সরকারিভাবে কোনো সংবর্ধনা নাই। মন ছোট করোনা এই দেশের ৯২% মুসলমানের হৃদয়জুড়ে আজ শুধু তাকরিম।
হাসান নামে একজন লিখেছেন, কোরআনের হাফেজরা বাংলাদেশের সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারপরও তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয় না।
উল্লেখ্য, সালেহ আহমাদের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামে। তার বাবা হাফেজ আবদুর রহমান একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। মা গৃহিণী। সালেহ ঢাকার মারকাযু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামি মাদ্রাসার ছাত্র। তার কৃতিত্বের জন্য মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট ও গুলশান সোসাইটি মসজিদের খতিব মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।