পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বস্ত্রখাতের পাঁচটি উপখাতসহ ৪৩ ধরনের পণ্য রফতানিতে নগদ সহায়তা দেবে সরকার। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছর থেকেই রফতানিতে এ সহায়তা পাবে পণ্যগুলো। তবে বস্ত্রখাতে নতুন বাজার স¤প্রসারণে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বাড়তি নগদ সহায়তা দেওয়া হবে না। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বের হয়ে যাওয়ায় সেখানে রফতানিতে নতুন বাজার স¤প্রসারণের আওতায় বাড়তি নগদ সহায়তা মিলবে না। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে।
এবার নগদ সহায়তা পাবে এমন তালিকায় গোশত থেকে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত পণ্য যুক্ত করা হয়েছে। এতদিনে যা ছিল শুধু হালাল গোশত রফতানিতে। এখন গোশতজাতীয় পণ্য রফতানির বিপরীতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পাবেন উদ্যোক্তারা।
২০২১-২২ অর্থবছরের আগ পর্যন্ত কোনো বিদেশি কোম্পানি রফতানিতে নগদ সহায়তা পাইনি। তবে এবারও গত অর্থবছরের মতোই বিশেষায়িত অঞ্চল তথা বেজা, বেপজা ও হাই-টেক পার্কে অবস্থিত সব ধরনের প্রতিষ্ঠান রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পাবে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের থেকে বিশেষায়িত অঞ্চলের ‘এ’ টাইপ বা বিদেশি এবং ‘বি’ টাইপ বা যৌথ মালিকানার প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানির বিপরীতে ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পেয়ে আসছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মতে মোট ৪৩টি পণ্য রফতানির বিপরীতে চলতি অর্থবছর থেকে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে। পণ্যগুলো হলো-
বস্ত্রখাত: দেশীয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাক এর পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে চার শতাংশ হারে। তৈরি পোশাকখাতের (নিট, ওভেন ও সোয়েটার) অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধাও চার শতাংশ হবে। নতুন বাজার স¤প্রসারণে (আমেরিকা, কানাডা, ইউকে ব্যতীত) চার শতাংশ। ইউরোঞ্চলে বস্ত্রখাতে রফতানিকারকদের জন্য বিদ্যমান চার শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা দুই শতাংশ এবং তৈরি পোশাকখাতে বিশেষ নগদ সহায়তা এক শতাংশ প্রযোজ্য হবে। কৃষি ও হাল্কা প্রকৌশল খাত: কৃষিপণ্য (শাকসবজি/ফলমূল) ও প্রক্রিয়াজাত (এগ্রোপ্রসেসিং) কৃষিপণ্য রফতানি খাতে রফতানি ভর্তুকি পাওয়া যাবে ২০ শতাংশ। হাল্কা প্রকৌশল পণ্য রফতানি খাতে ভর্তুকি হবে ১৫ শতাংশ।
পাটজাত: পাটজাত দ্রব্যাদি রফতানি খাতে ৭ থেকে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন রফতানিকারকরা। এর মধ্যে বৈচিত্রকৃত পাট পণ্য ২০ শতাংশ, পাটজাত চ‚ড়ান্ত দ্রব্য (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) ১২ শতাংশ এবং পাট সুতা (ইয়ার্ন ও টোয়াইন) খাতে ৭ শতাংশ নগদ সহায়তা পাবে। পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড রফতানিতে ২০ শতাংশ। অ্যাক্টিভ ফার্মাসিটিক্যালস ইনগ্রিডিয়েন্টস (এপিআই) রফতানির বিপরীতে রফতানি ভর্তুকি পাওয়া যাবে ২০ শতাংশ। শতভাগ হালাল গোশত ও শতভাগ হালাল পক্রিয়াকৃত গোশতজাত পণ্য রফতানি ভর্তুকি ২০ শতাংশ।
মাছ রফতানি: হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রফতানিতে নগদ সহায়তা মিলবে ২ থেমে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে হিমায়িত চিংড়ি রফতানিতে বরফ আচ্ছন্নের ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১০ শতাংশ। আর হিমায়িত অন্যান্য মাছ রফতানিতে ২ থেকে ৫ শতাংশ, কাঁকড়া ও কুঁচে রফতানিতে ১০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
চামড়া: চামড়াজাত দ্রব্যাদি রফতানিতে নগদ সহায়তা (সিলিং সীমা পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে) হবে ১৫ শতাংশ। আর সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে অবস্থিত কারখানা ও সাভারের বাইরে নিজস্ব ইটিপি রয়েছে এমন কারখানাগুলোয় উৎপাদিত ক্র্যাস্ট ও ফিনিশড লেদার রফতানির বিপরীতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রযোজ্য হবে।
আলু রফতানিতে ২০ শতাংশ, ফার্নিচারে ১৫ শতাংশ, শস্য ও সবজি বীজে ২০, আগর ও আতরে ২০ শতাংশ, অ্যাকুমুলেট ব্যাটারি রফতানিতে ১৫ শতাংশ, সিনথেটিক ও ফেব্রিকস পাদুকা রফতানিতে ১৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার/হার্ডওয়্যার ও আইটিএস রফতানিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার ও আইটিএস সেবা রফতানিতে ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৪ শতাংশ, জাহাজ রফতানিতে ১০ শতাংশ, ফামাসিউটিক্যাল পণ্য (সার্জিক্যাল/মেডিকেল) ১০ শতাংশ, হাতে তৈরি পণ্য (হোগলা, ছোবড়া, খড় ইত্যাদি) ১০ শতাংশ, মহিষের নাড়ি-ভ‚ড়ি, শিং, ও রগ (হাড় ব্যতিত) রফতানিতে ১০ শতাংশ ভর্তুকি পাবে। কেমিক্যাল পণ্য রফতানিতে ১০ শতাংশ।
প্লাস্টিক দ্রব্য: প্লাস্টিক দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ। এছাড়া পেট বোতল-ফ্লেক্স ও পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলিউয়েস্টার স্টাপল ফাইবার রফতানিতে ১০ শতাংশ সহায়তা পাবেন উৎপাদকরা।
এছাড়া রেজার বেøডে ১০ শতাংশ, সিরামিক দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ, টুপি রফতানিতে ১০ শতাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স-হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রফতানিতে ১০ শতাংশ, চাল রফতানিতে ১৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত চা রফতানিতে ৪ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত বাইসাইকেল রফতানিতে ৪ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত এমএস স্টিলে পণ্যে ৪ শতাংশ এবং দেশে উৎপাদিত সিমেন্ট শিটে ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন উৎপাদকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।