Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগান

কমনওয়েলথ মহাসচিবের সাক্ষাত যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে বিরাজমান বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের প্রতি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কনফেডারেশন অফ ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রির (সিবিআই) প্রেসিডেন্ট চেলসির লর্ড করণ বিলিমোরিয়া গতকাল যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি সফরের দ্বিতীয় দিনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, লর্ড বিলিমোরিয়া যুক্তরাজ্যের কারি শিল্পের উন্নয়নে তার কাজ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন উন্নয়ন গবেষণায় তার সরকারের প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্বের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। লর্ড বিলিমোরিয়া বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নীতি সমুন্নত রাখা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
তিনি প্রথম দক্ষিণ এশিয়ান পার্সি বংশোদ্ভুত যিনি যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডসে স্থান পেয়েছেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে লর্ড বিলিমোরিয়ার প্রয়াত পিতা ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল ফরিদুন বিলিমোরিয়ার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অনেকের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন। তিনি এ মাসের শুরুতে ভারত সফরের সময় তাদের বংশধরদের জন্য একটি বৃত্তি প্রবর্তন করে ভারতীয় শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তার প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন।
লর্ড বিলিমোরিয়া বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর হিসেবে বাংলাদেশের সাথে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে তার পছন্দের একটি বিষয়ে বক্তৃতা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বিকাশমান স্টার্ট-আপ পরিস্থিতি এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে সম্পন্ন করা কাজ সম্পর্কে লর্ডকে অবহিত করেন। লর্ড বিলিমোরিয়া ভবিষ্যতে সম্ভাব্য অংশীদারিত্বের সুযোগ অন্বেষণে আগ্রহ সম্পর্কে মতবিনিময় করেছেন।
তারা উভয়ই রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং প্রয়াত রানীর অসাধারণ সেবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কমনওয়েলথ মহাসচিবের সাক্ষাত
এর আগে কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। গতকাল লন্ডনে এ সাক্ষাত করেন তিনি। পরে যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথ বিষয়কমন্ত্রী লর্ড আহমদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য (ইউকে) শাখা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে লন্ডনে তার সফরকালীন আবাসস্থলে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। গতকাল লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আশিকুন নবী চৌধুরী এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে পৌঁছলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন খান, সিনিয়র সহসভাপতি জালাল উদ্দিন, সহসভাপতি অধ্যাপক আবুল হাশেম, সহসভাপতি হরমুজ আলী, যুগ্ম-সম্পাদক নঈম উদ্দিন সিরাজ, মারুফ আহমেদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী প্রমুখ।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য সময় বিকাল ৫টায় লন্ডনে পৌঁছান শেখ হাসিনা। লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।
সদ্য প্রয়াত ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে লন্ডন ও নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা ১৯ দিনের সফর শেষে আগামী ৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আজ ১৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় এবং লেবার পার্টির নেতা স্যার কেইর স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ১৮ সেপ্টেম্বর বাকিংহাম প্যালেসে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মানে রাজার এক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে অংশ নেবেন। একই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
ওই দিন জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। পাশাপাশি তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ইউএনএইচসিআরের ফিলিপো গ্রান্ডি এবং স্লোলোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সংবর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা বাংলাদেশ, বতসোয়ানা ও সেøাভাক প্রজাতন্ত্র এবং জাতিসংঘ আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের টেকসই আবাসন শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।

রানা/শব্দ- ৬৬০



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ