পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপকালে দেশের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে উল্লেখযোগ্য হারে ঋণ বিতরণ কমেছিল। পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে স্বাভাবিক হতে শুরু করে সবকিছু। এসব খাতে ঋণ বিতরণও বাড়তে থাকে। এক বছরের ব্যবধানে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-মে-জুন মাস) সিএমএসএমই খাতে ২ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন গ্রাহকের মাঝে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৬ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। গত বছরের (২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক) একই সময়ের তুলনায় এ ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের দ্বিতীয় (এপ্রিল-মে-জুন মাসে) প্রান্তিকে এ খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল ৪১ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, করোনাকালীন সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে ছোট ব্যবসায়ী। সেসময় তাদের মাঝে ঋণ বিতরণও কমেছিল। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা কাটে। ব্যবসার পরিধি বাড়াতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ নিচ্ছেন। এতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ অনেকাংশে বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি ২০২২ সালের এপ্রিল-মে-জুন মাস সময়ে এসএমই খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যাংকগুলো ৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে। আর পল্লী এলাকার এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। একই সময়ে জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৯ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা।
এসময়ে কুটির বা কটেজ প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করে ৭৪১ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে ব্যাংকসমূহের বিতরণ করা ঋণের মধ্যে মাইক্রো খাতের প্রতিষ্ঠানে ৮ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র শিল্পে ৩৩ হাজার ৮৯ কোটি টাকা এবং মাঝারি শিল্প খাতে দেওয়া হয় ১৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সিএমএসএমই খাতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৮ হাজার ৩০২ কোটি টাকা। এসময়ে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা, বিশেষায়িত ব্যাংক ৮৪৯ কোটি টাকা, ইসলামিক ব্যাংক ১৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। একই সময়ে বিদেশি ব্যাংক বিতরণ করেছে ৮২১ কোটি টাকা এবং ব্যাংক বহির্ভ‚ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই) সিএমএসএমই খাতে বিতরণ করেছে ২ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজের নীতিমালা জারি করে। ওই প্যাকেজের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের বিতরণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে দ্বিতীয় মেয়াদে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে প্রণোদনা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার কোটি টাকা। তবে ওই অর্থবছরে (জুলাই-জুন) ঋণ বিতরণ হয় ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৬৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। এরই মধ্যে প্রণোদনার তৃতীয় পর্যায়ের ঋণ বিতরণ শুরু করেছে ব্যাংকগুলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।