Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ড্যাপ স্থগিত চেয়ে রিট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঢাকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুমোদন দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে। গত রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট করেন। রিটে গত ২৩ আগস্ট জারিকৃত প্রজ্ঞাপন স্থগিত এবং ২০১০ সালের ড্যাপ চালুর আর্জি জানানো হয়েছে। রিটে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। চলতি সপ্তায় এটির শুনানি হবে বলে জানান এই আইনজীবী।
গত ২৩ আগস্ট নতুন ড্যাপের অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। একই প্রজ্ঞাপনে ২০১০ সালে পাস হওয়া ড্যাপ রহিত করা হয়। তবে ২০১০ সালের ড্যাপের আলোকে যেসব কার্যক্রম হয়েছে তাকে ‘বৈধ’ বলে ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ড্যাপে তলাভিত্তিক ভবন নির্মাণের নিয়ম বাতিল করা হয়েছে। এখানে নির্ধারণ করা হয়েছে এলাকাভিত্তিক ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর)। মূলত এফএআরের মাধ্যমে একটি প্লটে কত আয়তন বা উচ্চতার ভবন নির্মাণ করা হবে, তা নির্ধারণ করা হয়। তাই যেসব এলাকায় নাগরিক পরিষেবার মান ভালো, পার্ক বা উন্মুক্ত স্থান রয়েছে, প্লটের পাশে প্রশস্ত রাস্তা রয়েছে, সেসসব এলাকায় এফএআরের মান বেশি ধরা হয়েছে। আর যেসব এলাকায় রাস্তা সরু ও নাগরিক সেবার মান তুলনামূলক খারাপ, সেসব এলাকায় এফএআরের মান ধরা হয়েছে কম। এই ড্যাপ ২০৩৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
রিটে উল্লেখ করা হয়, ১৯৫৩ সালের টাউন ইমপ্রুভমেন্ট আইনের ৭৩ এবং ৭৪ ধারায় ২০১০ সালের ড্যাপ বাতিল করার এখতিয়ার সরকার বা রাজউককে দেয়া হয়নি। কিন্তু ওই আইন লঙ্ঘন করে গত ২২ আগস্ট নতুন ড্যাপের গেজেট প্রকাশ করা হয়।
২০০০ সালের বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ উন্মুক্ত স্থান উদ্যান প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোনো পরিবর্তন যাবে না। ওই আইননের ৬ ধারায় কারণ উল্লেখ করে জমির মালিককে জানাতে হবে। কিন্তু সেটিও জানানো হয়নি। আইনজীবী তার রিটে উল্লেখ করেন, বসুন্ধরায় আমার ৫ কাঠা জমি আমাকে না জানিয়ে ড্যাপভুক্ত করা হয়। যা ২০১০ সালের ড্যাপের আওতা বহির্ভুত ছিল। অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড রিকুইজিশন অ্যাক্টের ৪,৭ ধারা লঙ্ঘন করে ড্যাপ গেজেটভুক্ত করে। ২০১০ সালের ড্যাপ আমার প্লট নং-এন-৪৭৩৭ বসুন্ধরা ড্যাপভুক্ত ছিল না। কিন্তু গত ২২ আগস্ট ড্যাপের নতুন গেজেট প্রকাশ হলে আমার প্লটের মধ্য দিয়ে ২শ’ ফুট রাস্তা হবে-মর্মে জানিয়ে আমাকে রাজউক বাড়ি করার ছাড়পত্র দেয়নি।
ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, এ পরিস্থিতিতে ড্যাপ-২০২২ বাতিলসহ বসুন্ধরা এম-এন ব্লকের মাঝখান দিয়ে ২শ’ ফুট রাস্তা নেয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা চেয়েছি। একই সঙ্গে ২০১০ সালের ২২ জুন প্রকাশিত ড্যাপে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা চেয়েছি। আমার ওই প্লটে বাড়ি করার জন্য রাজউকের অনাপত্তিপত্র দেয়ার নির্দেশনা চেয়েছি। এছাড়া রুল চাওয়া হয়েছে। রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ড্যাপ-২০২২ এর কার্যক্রম স্থগিত এবং ২০১০ সালের ড্যাপ বহাল রাখার নির্দেশনা চেয়েছি।
প্রসঙ্গত : চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৫৬টি ভবনের নির্মাণ অনুমোদন দিয়েছে রাজউক। ২৩ আগস্ট নতুন ড্যাপ পাস হওয়ার আগপর্যন্ত আরও শতাধিক আবেদন জমা পড়ে ছিল। এসব আবেদনের কী হবে জানতে চাইলে রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) মো. মোবারক হোসেন বলেন, ২৩ আগস্ট নতুন ড্যাপের প্রজ্ঞাপন হওয়ার আগপর্যন্ত রাজউকে ভবনের নির্মাণ অনুমোদন সংক্রান্ত যেসব আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলো ২০০৮ সালের বিধি-মালা অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে। আর ২৩ আগস্টের পর যেসব আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তি হবে নতুন ড্যাপ অনুসারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ