Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত তাদের ওপর খুশি নয়: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৩০ পিএম

ভারত আর আওয়ামী লীগের ওপর খুশি নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা ভাবলাম, প্রধানমন্ত্রী এবার ভারতে গেছেন। আমাদের তিস্তা পানি বন্টন চুক্তির সমাধান হবে, অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা আমরা পাবো, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে। আমাদের যে বাণিজ্যে ব্যবধান আছে সেই ব্যবধানগুলো কমে আসবে। আমাদের আরো সুযোগ-সুবিধা তারা (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে আসতে পারবেন এবং তারাও সেই আশা করে গিয়েছিলেন যে ভারত সেইগুলো দিয়ে দেবে। ভারত তো এখন তাদের ওপর খুশি নয়। নৃত্যগীতে ভরপুর একটা সফর দিয়েছেন, সফরটা নৃত্যগীতে ভরপুর ছিলো। আমার দেশের মানুষ যখন মারা যাচ্ছে, যখন নাকি গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, যখন মাকে তার সন্তান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তখন তারা জয়পুর বিমান বন্দরে গিয়ে নাচানাচি করছেন। আজকে এই দেশের মানুষ এটা ক্ষমা করবে না।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, অবশ্যই আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। আমরা মনে করি, ভারত আমাদের বন্ধু প্রতিম দেশ। আমরা অবশ্যই আশা করি যে, ভারত আমাদেরকে বাংলাদেশের জনগনকে ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিলো, সেই ভারত অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, যে লড়াই তাতেও তারা সহযোগিতা করবে। কারণ গণতান্ত্রিক দেশগুলো থেকে আমরা ওটাই আশা করি। একটা কথা পরিস্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের ভালোবাসা না নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন না নিয়ে এখানে কেউ কখনো কিছু করতে পারবে না। তাই আমরা আজকে যে ভয়াবহ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেৃ তাদেরকে সরাতে হলে আমাদেরকে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেই ঐক্যে সমস্ত জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে ওদেরকে সরিয়ে এখানে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপরে পুলিশের গুলি বর্ষণের ঘটনাকে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে তুলনা করে সরকারের এহেন কর্মকান্ড এবং দেশের আর্থিক খাতে ক্ষমতাসীনদের ‘খাশ লোকদের’ দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ভোলা ও নারায়নগঞ্জে পুলিশের গুলিতে তিন কর্মী হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে ১৬টি স্পটে সমাবেশে কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি। শনিবার নয়া পল্টনে সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়, চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনের আয়োজনে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে এক ঘন্টা মোমবাতি জ্বালিয়ে মৌন অবস্থান কর্মসূচি হবে।

তিনি বলেন, আন্দোলন আমাদের থেমে নেই। গত মাস থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলন চলছে। আমাদের এই আন্দোলন চলতেই থাকবে। ঢাকা মহানগরীর ১৬ স্পটে বা জোনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ আমরা করব যা শুরু হয়েছে আজকের রএই সমাবেশের মধ্য দিয়ে। ২৭ তারিখ পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন জোনে এই সমাবেশের কর্মসূচি হবে। এরপর আরো বৃহত্তর কর্মসূচি সারা দেশজুড়ে আমরা দেবো। আসুন, আমরা এই কর্মসূচিতে শরিক হই এবং একযোগে আওয়াজ তুলি- ‘ফয়সালা হবে কোন পথে, রাজপথে রাজপথে’, টেক ব্যাক, টেক ব্যাক বাংলাদেশ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়্রা মুক্তি চাই, মুক্তি চাই।

নয়া পল্টনের সমাবেশে ছাড়া অন্যান্য সমাবেশসমূহ হচ্ছে : ১১ সেপ্টেম্বর উত্তরা পূর্ব জোন, ১২ সেপ্টেম্বর সেগুন বাগিচায়, ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা পশ্চিম জোন, ১৫ সেপ্টেম্বর পল্লবী জোন, ১৬ সেপ্টেম্বর সূত্রাপুর, ১৮ সেপ্টেম্বর শ্যামপুর-কদমতলী জোন, ১৯ সেপ্টেম্বর গুলশান জোন, ২০ সেপ্টেম্বর বাসাবো বালুর মাঠ, ২১ সেপ্টেম্বর মীরপুর জোন, ২২ সেপ্টেম্বর যাত্রবাড়ি-ডেমরা, ২৩ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর জোন, ২৪ সেপ্টেম্বর লালবাগ-চকবাজার-কামরাঙ্গীরচর জোন, ২৫ সেপ্টেম্বর বাড্ডা জোন, ২৬ সেপ্টেম্বর কলাবাগান এবং ২৭ সেপ্টেম্বর তেঁজগাঁও জোনে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিন মতিঝিল-পল্টন-শাহজাহানপুর থানার যৌথ উগ্যোগে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি এবং ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়নগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।

মহানগর দক্ষিনের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক এসকে সিকদার কাদিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিনের রফিকুল আলম মজনু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ শাহবাগ-পল্টন-মতিঝিল থানা মহাগরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ