Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আখাউড়া রেল প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

অনুমোদনে পাচ্ছে আখাউড়া রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের আখাউড়া হয়ে ভারতের কলকাতা এবং আগরতলার মধ্যে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র স¤প্রসারণ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ)’ শীর্ষক প্রকল্পের চতুর্থ সংশোধনের এই প্রস্তাবটি।

বাংলাদেশ অংশে ১০ দশমিক এক কিলোমিটার ডুয়েলগেজ মেইন লাইন এবং ৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লুপলাইন নির্মাণ করা হবে। ৫৬ দশমিক ৫১ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ, ৩টি মেজর ব্রিজ ও ২০টি মাইনর ব্রিজ এবং ৩টি স্টেশন কম্পিউটারাইজড ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, প্রকল্পটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ফলে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে দেরি হওয়ায় সংশোধন করে এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ১৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ২৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময় পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি ৬১ শতাংশ। প্রকল্পটিতে বাস্তবায়নের সময় ছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর প্রথমবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই মেয়াদ ২ বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। দ্বিতীয়বার আবারও ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ ১ বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এতেও কাজ শেষ না হওয়ায় তৃতীয়বার ১ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এতেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় চতুর্থবার ফের ১ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

চতুর্থ দফায় মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের দেয়া শর্তগুলো হলো নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াধ বৃদ্ধি করা যাবে না। এছাড়া প্রকল্পের কাজ নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ করে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত মেয়াদে ঠিকাদার নির্মাণকাজ সম্পাদনে ব্যর্থ হলে চুক্তির সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ এবং পিপিআর অনুযায়ী ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) সংস্থান অনুযায়ী কাজের পরিমাণ ও গুণগতমান নিশ্চিত করে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং সকল টেস্ট রিপোর্টেও কপি আইএমইডিতে পাঠাতে হবে। বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে প্রকল্পের সকল অঙ্গের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বর্ধিত মেয়াদের সংশোধিত কর্ম পরিকল্পনা এবং ক্রয় পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি তিন মাস অন্তর পরিকল্পনা কমিশন ও আইএমইডিতে পাঠাতে হবে। প্রকল্পের মেয়াদ আর কোনো অবস্থাতেই বৃদ্ধি করা হবে না।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে এক বছর বর্ধিত সময় ২০২৩ সালের জুলাইয়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে রেলওয়ে।

অনুদানের শর্ত অনুসারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ সামগ্রী, মালামাল, ইক্যুইপমেন্ট প্ল্যান্টস ভারত হতে আনতে হয়। করোনার কারণে সিøপার এবং অন্যান্য মালামাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিয়োজিত ঠিকাদারের ভারত হতে নির্মাণসামগ্রী আমদানি করতে দেরি হয়। এছাড়াও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মরত লোকবল ভারত হতে বাংলাদেশের আসা-যাওয়া করতেও অসুবিধা হওয়ায় প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ