পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ভারতীয় ঋণের অর্থছাড়ের প্রবাহ কম উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন। সেখানে নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। আশা করি এই সফরের মাধ্যমে তাদের ঋণের অর্থের প্রবাহ বাড়বে। আমাদের প্রকল্পগুলোর আরও দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। তিনি বলেন, এসব ঋণ অনেকটা আমলা নির্ভর। তাদের দেশের সচিবালয় বলে আমরা তাদের সহযোগিতা করি না, আমাদের দেশের সচিবালয়ের কর্তারা বলেন, তারা আমাদের সহযোগিতা করে না। আশা করি শিগগির এই জটিলতা কাটবে। একই সঙ্গে চলতি মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কিছুটা বাড়বে। তবে অক্টোবর থেকে পণ্য ও সেবার দাম কমে আসবে। ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে অর্থনীতি, এমনটাই ধারণা পরিকল্পনামন্ত্রীর।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সন্মেলনের কক্ষে আয়োজিত ‘ডিজেএফবি উন্নয়ন সংলাপে’ এসব কথা বলেন মন্ত্রী। ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) এ সংলাপের আয়োজন করে। লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) কর্মসূচির অধীনে ভারত এখন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। এখন পর্যন্ত নমনীয় লাইন অব ক্রেডিট ঋণচুক্তি সই হয়েছে তিনটি। এলওসির অধীনে মোট প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট অর্থছাড় হয়েছে ১২২ দশমিক ২ কোটি ডলার। ভারতীয় এই ঋণে মূলত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো খাত বিশেষত- রেল যোগাযোগ, সড়ক পরিবহন, নৌ পরিবহন, স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ, আইসিটি, টেলিযোগাযোগ, বেসামরিক বিমান পরিবহন, অর্থনৈতিক অঞ্চল খাতে উন্নয়ন করা হয়েছে। কিছু প্রকল্পের কাজ চলমান।
এলওসি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমার যা অভিজ্ঞতা এসব আমলানির্ভর। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক অতটা আমলানির্ভর নয়। আমাদের সচিবালয় বা দিল্লির সচিবালয়ে যারা থাকেন তাদের ভারতের প্রধানমন্ত্রীতো বলবেনই, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলবেন। স্বাভাবিকভাবে এগুলোর গতি কমে যায় বলে আমার ধারণা। তবে প্রধানমন্ত্রীর সফরে এসবের গতি পাবে। উভয় দেশকে স্বীকার করেই পার হতে হবে। এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করি এটার একটা গতি বা মাত্রা পাবে। এটার (ঋণের অর্থছাড়ের) গতি বাড়ানো দরকার, আমরাও তা স্বীকার করি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ঋণপ্রাপ্তির প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, আমরা আইএমএফ থেকে অবশ্যই ঋণ পাবো। এটা গ্যারান্টি। আইএমএফ আমাদেরই অংশ। এর আগেও আমরা আইএমএফ থেকে ঋণ পেয়েছি। এটা একটা রুটিন ওয়ার্ক। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি বড়, আমাদের ক্ষুধা আছে। তাই আমরা আগের তুলনায় বেশি ঋণ চেয়েছি। আমরা অবশ্যই ঋণ পাবো। ঋণের শর্ত প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কিছু শর্ত তো থাকে। বন্ধুর কাছেও তো টাকা ধার নিলে বলে, কবে টাকা ফেরত দিবি। আইএমএফ আসবে, আমাদের সঙ্গে কথা বলবে বন্ধুর মতো। কিন্তু মহাজনের মতো নয়।
আইএমইফের ঋণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আইএমইফের কিছু দায়দায়িত্ব আছে। তা হলো কোনো রাষ্ট্র যদি সাময়িক অসুবিধায় পড়ে তবে ঋণ অথবা অনুদান দিয়ে থাকে। নানাভাবে সহায়তায় এগিয়ে আসে। তাছাড়া কোনো রাষ্ট্র যদি ভয়ঙ্কর খাদে পড়ে যায় তবে তাকে তুলে আনার জন্য ব্যবস্থা নেবে আইএমইফ, এটা হলো বেইল আউট। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য কিছু প-িত আমাদের ঋণ নেয়াকে বেইল আউট বলছেন। আমি তাদের বলছি বেইল আউটের সঠিক মানে আগে জানুন। সাইফুর রহমানের সময় ঋণ নিয়েছি, কিবরিয়া সাহেবের সময়ও আইএমএফ থেকে ঋণ নিয়েছি। তখন কিন্তু এসব নিয়ে কথা হয়নি, তাহলে এখন কেন হচ্ছে? এই সংস্থায় যারা কাজ করেন তারা আমাদেরও কর্মী। তিনি বলেন, আইএমএফে আমাদেরও চাঁদা দিতে হয়। আমরা আনুপাতিক হারে চাঁদা দেই। আমার জানা মতে তারা এখনো শর্ত দেয়নি। তেলের দাম না স্যান্ডউইচের দাম বাড়াতে হবে এই বিষয়ে আইএমএফ কিছুই বলেনি।
প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা প্রকল্প অনুমোদন করে দিয়ে থাকি। এটা দেখভাল করেন প্রকল্প পরিচালক। একজন ঠিকাদার প্রকল্পে ১০ ইটের পরিবর্তেন ৮টি দিয়ে দিলে আমাদের ধরতে কষ্ট হয়। আমরা স্বীকার করছি অনেক কিছু এখনো বাস্তবায়ন করতে পারি না। এখনও প্রকল্প পরিচালকেরা প্রকল্প এলাকায় থাকেন না, এখনো একজন একাধিক প্রকল্পের পরিচালক। তবে এটা ঠিক যে পরিমাণে প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করছি তা ঐতিহাসিক। নিকটবর্তী সময়ে এত বেশি প্রকল্প কখনও নেয়া হয়নি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিজেএফবি সভাপতি হামিদ-উজ-জামান। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাইদ শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিজেএফবি সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুল সাদিক, অর্থ সম্পাদক সাইদ রিপন, প্রচার সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক এম আর মাসফি, নির্বাহী সদস্য তানজিলা নিঝুম প্রমুখ।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।