পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
এ টি রফিক ও আশরাফুল ইসলাম, খুলনা থেকে : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বহুকাঙ্খিত পাইপ লাইনে গ্যাস আগামী ডিসেম্বরেই আসছে খুলনায়। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মহানগরীর খালিশপুরস্থ ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেয়া হতে পারে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনার ফাইল বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। সরকারের সিদ্ধান্ত না থাকায় কবে নাগাদ খুলনার মানুষ বাসাবাড়ীতে গ্যাস সংযোগ পাবেন তা জানা নেই সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।
গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) ভেড়ামারা-খুলনা গ্যাস ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ভেড়ামারা থেকে খুলনার আড়ংঘাটায় নিজস্ব ল্যান্ডিং স্টেশনে গ্যাস সংযোগ দেবো। কবে, সে দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত করতে পারিনি। তবে সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেছি। ফলে সংযোগ দিলেই খুলনায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস আসা শুরু হবে। নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ ২১৮নং এমএ বারী সড়কের আবীর টাওয়ারে কার্যালয়ে খুলনা-বরিশাল বিভাগে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ দিতে নিয়োজিত পেট্রোবাংলার সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির দাফতরিক কার্যক্রম চলছে। আমার কাজ পাইপ লাইনে গ্যাস সংযোগ দেয়া, বিতরণের বিষয়ে বলতে পারবেন সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি।”
সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো: খালেকুজ্জামান রতন বলেন, “বিতরণের ব্যাপারে এখনো আমাদের কোনো প্রোগ্রাম নেই। ইতোমধ্যে খালিশপুরের ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেবার প্রস্তাব সংক্রান্ত অনুমতির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছি। ফাইল এই মুহূর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছে। সেখান থেকে গ্রিণ সিগনাল পেলে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে। এ ছাড়া ভেড়ামারায় একটি পাওয়ার প্লান্ট জানুয়ারিতে উৎপাদন শুরু করতে পারে। সেখানে আমরা গ্যাস দেয়া শুরু করবো। এর বাইরে এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে আর কোনো প্রপোজাল নেই। কবে নাগাদ খুলনার বাসাবাড়ীতে গ্যাস সংযোগ দেয়া হতে পারে সেটা বলা সম্ভব নয়।”
একাধিক সূত্র জানান, পাইপ লাইনে খুলনায় গ্যাস পৌঁছালে, প্রথমেই গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট নির্দেশনা না পেলে ডমেস্টিক লাইনে (বাসাবাড়িতে) গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে না। প্রথমে বাণিজ্যিক ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে খালিশপুরে ২২৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ইতিমধ্যে ভেড়ামারায় ৩৫০ মেগাওয়াটের একটি, ভোলাতে ২২৫ মেগাওয়াটের একটি ও ৩৪৫ মেগাওয়াটের একটি এবং অপরটি ভোলারই একটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। তবে সরকারি ঘোষণার আগেই ভোলায় বাসাবাড়িতে মাসিক ৬৫০ টাকায় ৩ হাজার (গৃহে) লাইনে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এডিবির আর্থিক সহায়তায় গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডেভলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি (জিটিসিএল) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন তিনটি প্রকল্প যেমন-যমুনা সেতুর পশ্চিমপাড়-নলকা, হাটিকুমরুল-ঈশ্বরদী -ভেড়ামারা গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন এবং ভেড়ামারা-খুলনা গ্যাস সঞ্চালন লাইন প্রকল্পত্রয় ২০০৬ সালে একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পত্রয়ের অনুমোদিত বাস্তবায়ন মেয়াদকাল জুলাই ২০০৬ হতে জুন ২০০৯ পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল।
এদিকে, খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন চলছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের। সর্বশেষ গত ৭ মে খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা গ্যাস স্টেশনে সমাবেশ করেছিল বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি।
উন্নয়ন কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, ১৯৫৪ সালে এ দেশে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার এবং জ্বালানি হিসেবে এর ব্যবহার শুরু হলেও খুলনা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। খুলনাঞ্চলে বর্তমানে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা প্রতিদিন মাত্র ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। অথচ দেশের অন্যান্য স্থানে যেখানে গ্যাসের সংযোগ রয়েছে সেখানে চাহিদা কমবেশি ২২০০ মিলিয়ন ঘনফুট প্রতিদিন।
উৎপাদিত সব গ্যাসই থেকে যায় দেশের মধ্যাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলে। অথচ দেশের প্রায় ৫ কোটি লোকের প্রতিনিধিত্বকারী খুলনাঞ্চলের মানুষের চাহিদার মাত্র ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংস্থান সরকার বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের ইতিহাসের ৪০ বছরেও করেনি। এটা খুলনার জন্য যে কতবড় বৈষম্যমূলক আচরণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।