পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : নিজেদের দক্ষ ও আদর্শ সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলে দেশের আকাশসীমাকে নিরাপদ রাখতে বিমানবাহিনীর সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের নিজেদের দক্ষ ও আদর্শ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে দেশের আকাশ সর্বদা নিরাপদ এবং শত্রুমুক্ত রাখতে হবে।
গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলা সেনানিবাসে বিমানবাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিকে ‘ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে কেনা প্রধানমন্ত্রী বিমানবাহিনীর সদস্যদের এয়ারক্রাফট, রাডারসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ ব্যবহারে দক্ষ এবং যতœবান হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আপনাদের নিজস্ব সক্ষমতা সম্পর্কে দেশে যেমন, তেমনি দেশের বাইরেও সতর্ক থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল যাত্রা শুরু করা বিমানবাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিকে মর্যাদাপূর্ণ ‘ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড’ প্রদান করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী গ্রুপ ক্যাপ্টেন রেজা ইমদাদ খানের পরিচালনায় একটি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন। কুচকাওয়াজটি প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানায়।
এ ছাড়া বিমানবাহিনীর মিগ-২৯, এফ-৭বিজি এবং এফ-৭বিজি১ ফাইটার বিমানের মনোরম ফ্লাইপাস্ট প্রত্যক্ষ করেন এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, বিদেশি কূটনীতিক, নৌবাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ উচ্চপর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে তাকে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এবং এয়ার কমোডর এম মফিদুর রহমান স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিমানবাহিনীর সাহসিকতাপূর্ণ অবদান বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদের দক্ষতা, দেশপ্রেম, নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য আরও সাফল্য বয়ে আনবেন। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের গড়ে তুলবেন এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করতে সর্Ÿোত্তভাবে সক্ষম হবেন।
তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের একটি প্রধান অপারেশনাল বিমানঘাঁটি; যা হোম অব ফাইটারস নামে পরিচিত। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সর্ববৃহৎ যুদ্ধবিমান ঘাঁটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ঘাঁটিটি মিত্রবাহিনীর বিমান পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আকাশ প্রতিরক্ষায় এ ঘাঁটি বিশেষ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিকালীনও এ ঘাঁটি থেকে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হয়। জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় এই ঘাঁটির পারদর্শিতা প্রশংসিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিমানবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণের জন্য এ ঘাঁটিতে ক্যাডেটস ট্রেনিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়; যা পরবর্তীকালে বিমানবাহিনী একাডেমি হিসেবে যশোরে স্থানান্তরিত হয়।
ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর সক্ষমতা ও সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ঘাঁটি সফল উড্ডয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অপারেশনাল ফাইটার পাইলট তৈরি করেছে; যা আগামীদিনে বাংলার আকাশসীমা প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করবে। এ ঘাঁটিতে অবস্থিত ফাইটার স্কোয়াড্রনগুলোর অপারেশনাল স্ট্যান্ডার্ড অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের। শুধু দেশের মাটিতে নয়, বিদেশের মাটিতেও তারা যতœবান থাকবেন বলে আশা করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই সাহসিকতার কথা বাঙালির ইতিহাসে চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। একটি স্বাধীন জাতির আকাশসীমাকে নিরাপদ ও শত্রুমুক্ত রাখাই সেদেশের বিমানবাহিনীর মূল দায়িত্ব। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি আধুনিক, পেশাদার ও শক্তিশালী বিমানবাহিনী গঠন করা। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই এই বাহিনীর আধুনিকায়ন শুরু হয়। আর বর্তমান সরকারও ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আলোকে বিমানবাহিনীকে একটি আধুনিক ও প্রতিরোধক ক্ষমতাসম্পন্ন বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের উন্নতর প্রশিক্ষণের জন্য বিমানবাহিনী একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের প্রতিটি বাহিনীতে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করায় তাদের কাজকে আরও ত্বরান্বিত করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার একটি উন্নত-আধুনিক দেশ গড়তে এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের আগে দেশের অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের কথা কেউ কখনো চিন্তাও করেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।