Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিগগিরই ফেরত আসবে আরও ২.৯ কোটি ডলার

রিজার্ভ চুরি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফিলিপিন্সকে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে না বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার জব্দ করে রেখেছেন ফিলিপাইনের সুপ্রিমকোর্ট যা শিগগিরই দেশে ফেরত আসবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অভ্যন্তরীণ বিষয়’ উল্লেখ এটা ফিলিপিন্সকে দেয়া হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
মুহিত বলেন, রিজার্ভের চুরি যাওয়া ২৯ মিলিয়ন ডলার ফিলিপিন্সের সুপ্রিমকোর্ট জব্দ করে রেখেছেন। শিগগিরই এ অর্থ আমরা পাব। তবে টাকা ফেরতের বিষয়ে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি) যে বক্তব্য দিয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। ফিলিপাইন সরকারও তা গ্রহণ করেনি।
এছাড়া আইনমন্ত্রীর সঙ্গে ফিলিপাইনের অর্থমন্ত্রী বৈঠকে বাকি অর্থ ফেরত দেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
মামলার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যৌথভাবে বাংলাদেশের পক্ষে রিজার্ভ উদ্ধারে ফিলিপাইন সরকার দুটি মামলা করেছে। এ মামলাগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার। আপাতত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রয়োজন নেই। যদি মামলা করতে হয় ফিলিপাইন সরকার করবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে করা তদন্ত প্রতিবেদন ফিলিপাইনকে দেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা কাউকেই দেয়া হবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের মাধ্যমেই ক্যাসিনোতে গেছে। কাজেই এই টাকা রিজাল ব্যাংক কীভাবে দাবি করে সেটা আমার বোধগম্য নয়।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, রিজার্ভের চুরি যাওয়া টাকা আমাদের। আমরা অবশ্যই টাকা ফেরত পাব।
গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।
শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে। তার কিছু অংশ উদ্ধারের পর সম্প্রতি বাংলাদেশ ফেরত পেয়েছে।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল। মার্চ মাসে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে।
ফরাসউদ্দিন গত ৩০ মে প্রতিবেদন দেয়ার পর অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, রিপোর্টে যা আছে, তা অবশ্যই প্রকাশ করা হবে। এরপর কয়েক দফা সময় দিয়েও কথা রাখেননি মুহিত। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন প্রকাশ করার দিনক্ষণ ঠিক করেও পরে নিজের অবস্থান থেকে সরে যান।
উল্লেখ্য, চুরি হয়ে ফিলিপাইনে চলে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার ইতোমধ্যে ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজার্ভ চুরি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ