পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আদনান চৌধুরীর বাবার দিন কাটে ছেলের অপেক্ষায়
স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৩ সালে তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগ থেকে গুম হওয়া আদনান চৌধুরীর বৃদ্ধ বাবা রুহুল আমিনের প্রতিটি দিন কাটে অপেক্ষা আর কান্নায়। তার বিশ্বাস, ছেলে একদিন ফিরে আসবে। তার ফরিয়াদ মৃত্যুর আগে যেন সন্তানকে দেখে যেতে পারেন।
গতকাল রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে শুধু রুহুল আমিন নয়, সংবাদ সম্মেলনে ২০১৩ সালে নিখোঁজ ২০ জনের পরিবারের স্বজনরা এমন আকুতি তুলে ধরেন। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে প্রেসক্লাবের কনফারেঞ্জ লাউঞ্জ। রুহুল আমীন বলেন, আমি এক হতভাগা বাবা। ২০১৩ সালে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে আমার ছেলেকে তুলে নেয়ার পর থেকে অনেক ঘোরার পরেও আমি এখনো সন্তানের দেখা পাইনি। ২০১৩ সালে রাজধানী থেকে গুম হওয়া ২০ জনকে ফিরে পেতে তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন দপ্তরে দফায় দফায় আবেদন করেও নিখোঁজদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
৭ বছরের শিশু লামিয়া আক্তার মিম। সকাল থেকে বাবা কায়সারের ছবি বুকে নিয়ে ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রেসক্লাবে। সাথে ছিলেন তার মা মুন্নি। পিতাকে ফেরত চেয়ে লামিয়া বলেন, আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই। বাবার সাথে স্কুলে যেতে চাই। বাবার সাথে খেলতে চাই। তোমরা আবার বাবাকে ফেরত দাও।
২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর উত্তর সিটির ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনসহ আটজন একই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে নিখোঁজ হন। ওই বছরের বিভিন্ন সময় গুম হন আরো ১১ জন। পরিবারগুলোর অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের, যাদের কেউই এখনো ফিরে আসেননি।
রাসেলের ভাই বলেন, তার মা মাঝরাতে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকেন। বলেন, আমার রাসেল আসবে। ঘটনার এতদিন পরেও পরিবারের সদস্যদেরকে ফিরে না পেয়ে হতাশা আর ক্ষোভের কথা উঠে এসেছে স্বজনদের বক্তব্যে।
ছেলেকে ফিরে না পাওয়ার শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন হাজেরা খাতুন। সন্তানের ছবি বুকে আগলে রেখেই দিন কাটছে তাঁর। তিনি বলেন, আমি আমার সব সন্তানকে যেন ফিরে পাই। আপনারা ফিরিয়ে দেন।
গুম হওয়া মাসুমের মা আয়েশা আক্তার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যদি ব্যবস্থা নেন, তাহলে আমাদের সন্তানরা অবশ্যই ফিরে আসবে, ফিরে আসবে।
গুম হওয়া এই ২০ পরিবারে আয় করার মানুষ নেই। এই পরিবারগুলোর কথা রাষ্ট্র একবারও ভাবেনি।
তারা বলেন, পরিবারগুলোর অভিযোগ, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের পর দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় অনেকগুলো গুমের ঘটনা ঘটে। ভিন্নমতের রাজনৈতিক কর্মীরা এর শিকার হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধরে নিয়ে গেছে। এর পর থেকে তারা গুম রয়েছে অথবা পরে কোনো মামলায় তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের কারো কারো লাশ পাওয়া গেছে। যদিও এই তালিকায় তাদের ২০ জনের কেউ নেই। গুম হওয়া স্বজনদের দ্রুত পরিবারের কাছে ফেরত দিতে রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে ২০ পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।