Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ৩০ ভাগের বেশি চা উৎপাদনের সম্ভাবনা

| প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আনোয়ার হোসেন জসিম, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে : দেশে চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চা শিল্পের ১৬২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হবে। চা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বছর দেশে ৭০ মিলিয়নেরও বেশি কেজি চা উৎপাদন হবে। যা সর্বকালের সর্ব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন মৌভীবাজার নিউ সমনবাগ চা বাগানের মহা-ব্যবস্থাপক মো: শাহজাহান আকন্দ জানান, গত চা উৎপাদন মৌসুমে (২০১৫) দেশে চা উৎপাদন হয়েছিল ৬৭.৩২ মিলিয়ন কেজি। যা ছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ চা উৎপাদন। কিন্তু চলতি বছরের গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে চা উৎপাদন হয়েছে ২৫.৩৮ মিলিয়ন কেজি। যা গত বছরের ওই সময়ের চেয়ে ৮.১৬ মিলিয়ন কেজি বেশি। গত বছর (২০১৫) ৩০ জুন পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছিল ১৭.২২ মিলিয়ন কেজি।
কমলগঞ্জ শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের মালিক শ্রীমঙ্গল পৌর মেয়র মো: মহসিন মিয়া মধু জানান, এবার চা অপযোগী আবহাওয়া থাকায় চায়ের ফলন ভালো হয়েছে। তার মতে এবার ছোট বড় সব বাগানেই গত বছরের তুলনায় চায়ের উৎপাদন ২৫ ভাগ বেশি হবে। একই কথা জানান, বড়লেখা অবস্থিত কেরামত নগর চা বাগানের মালিক মো: নুরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনিও জানান, চা উৎপাদনের জন্য আবহাওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতি অনুক‚লে থাকায় চায়ের উৎপাদন এযাবৎ কালের বেশি হবে। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালত ড. মাইনুদ্দিন জানান, আল্লাহ’র রহমতে চা উৎপাদনে আবহাওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতি অনুক‚লে ছিল বলেই এ যাবৎকালে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন হবে। তিনি বলেন, এর কারণ হলো বৃষ্টি-বাদল, আবহাওয়া, পোকামাকড় সবকিছু চা উৎপাদনের অনুক‚লে ছিল। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, চা উৎপাদনের জন্য তার নেতৃত্বে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারাও তৎপর ছিলেন এবং তারা প্রতিটি চা বাগানের কর্তৃপক্ষের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রেখে কাজ করেছেন। এদিকে বাংলাদেশ চা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর (২০১৫) ৬৪ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদানে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মোট চা উৎপাদন হয় ৬৭.৩৮ মিলিয়ন কেজি চা। আর এবার ২০১৬ সালে মোট চায়ের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নেয়া হয় ৬৪.৫০ মিলিয়ন কেজি। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, এখন পর্যন্ত যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার ছেয়ে প্রায় ৩০ ভাগ বেশি চা উৎপাদন হবে। তিনি এর কারণ হিসেবে জানান, আবাহাওয়া অনুক‚লে ছিল, চা তৈরির আনুষাঙ্গিক সরমঞ্জাম পর্যাপ্ততা, শ্রমিকদের আন্তরিকতা, বাগান ম্যানেজার ও বাগান মালিকদের কঠোর পরিশ্রম, নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ, চা বাগান সম্প্রসারণ, সময়মতো সার ও কীটনাশক পাওয়া গিয়েছিল এবং গবেষণা বিভাগ ও প্রকল্প বিভাগ তৎপরসহ সর্বোপরি চা উৎপাদনের সার্বিক পরিবেশ অনুক‚লে ছিল। তিনি আরো জানান, নভেম্বরে হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে চায়ের উৎপাদনকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়ে যাবে। তবে ওই কর্মকর্তা আরো জানান, চা শ্রমিকদের ভবিষৎ নিরাপত্তা ও চা বাগানগুলোর টেকসই উন্নয়নের জন্য এখনই চা আমদানি বাদ দিতে হবে।
চা আমদানি না করে চায়ের অধিক উৎপাদনের জন্য চা-এর জন্য নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের আহŸান জানান ওই কর্মকর্তা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ