Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বকে গ্রাস করছে অস্বাভাবিক তাপ ও শুষ্ক আবহাওয়া

চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নদ-নদীতে সর্বনিম্ন পানিস্তর

ফিনান্সিয়াল টাইম্স | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

অস্বাভাবিক গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়া সময়ের সাথে সাথে এবছর বিশ্বের অনেক জায়গায় পানির স্তর নজিরবিহীনভাবে নিচে নামিয়ে দিয়েছে। তুন্দ্রাঞ্চলের হিমবাহগুলো গলতে শুরু করার সাথে সাথে উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ উন্মোচিত গাঢ় শুষ্ক শিলাগুলো সূর্যের তাপকে প্রতিফলিত করার পরিবর্তে শোষণ করে নিচ্ছে। কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, ফসল নষ্ট হচ্ছে, পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে ভার কমতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা উচ্চ পরিবহন খরচ এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে বিলম্বের দিকে পরিচালিত করছে এবং লাখ লাখ লোক বিদুৎ ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং চীনকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে।

চীনে এশিয়ার দীর্ঘতম নদী ইয়াংসির পানির স্তর আগস্টে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। দেশটিতে জলবিদ্যুতের ঘাটতি আরও গভীর হওয়ায় টয়োটা এবং ফক্সকনের মতো সংস্থাগুলো কমপক্ষে এক সপ্তাহের জন্য কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথটিতে পন্যবাহী জাহাজ চলাচলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের শিল্পগুলোর প্রাণ হ্রাইন নদীর পানিস্তর চরম দাবদাহ এবং শুষ্ক আবহাওয়াতে অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় সমগ্র ইউরোপ ভুগছে। ইতালিতে একটি মারাত্মক খরা কৃষিখাতে আঘাত হেনেছে। কারণ দেশটির অর্থনৈতিকভাবে-গুরুত্বপূর্ণ নদী পো’র স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশক ধরে চলা তীব্র খরার কারণে ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যগুলোকে পানির ব্যবহার সীমিত করার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ‘মহাখরা’ নেভাদা, অ্যারিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়াসহ রাজ্যগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপ‚র্ণ সম্পদ কলোরাডো অববাহিকায় এবছর পানির স্তর কর্তৃপক্ষকে পানিবিদ্যুতের ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করতে এবং পানি বরাদ্দ যথাক্রমে ২১ এবং ৮ শতাংশ হ্রাস করার জন্য প্ররোচিত করেছে। ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসকে মার্কিন ইতিহাসের ষষ্ঠ উষ্ণতম জানুয়ারি-জুন সময়কাল চিহ্নিত করেছে।

আবহাওয়ার পরিলক্ষিত পরিবর্তনগুলো একদিকে, উত্তর গোলার্ধের তাপপ্রবাহ, দাবানল এবং খরায় অবদান রাখছে, অন্যদিকে লা নিনার ধরনগুলোর দক্ষিণে অস্ট্রেলিয়ায় অস্বাভাবিক বন্যা এবং অসময়ের ঠাÐা আবহাওয়ার সৃষ্টি করছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডে গত সপ্তাহে প্রবল বৃষ্টিতে আনুমানিক ১২০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের বিজ্ঞানীদের সংস্থার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ইতিমধ্যে বিশ্বের তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প সময়ের তুলনায় প্রায় ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে, এবং ভবিষ্যতে প্রতিটি দেশ গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন শূন্য কোটায় নামিয়ে আনলেও লম্বা সসময়ের সময়ের জন্য বিপর্যয় অব্যাহত থাকবে। বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, বৈশ্বিক অবকাঠামো এবং রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতিকে সঙ্কটাপন্ন আবহাওয়ার ব্যয়বহুল পরিণতিগুলোর সাথে মোকাবেলা করার জন্য চরম সংগ্রাম চালাতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ